ব্যুরো নিউজ ২৩ মে : কেরলে জাতীয় সড়ক ৬৯ (NH-66) নির্মাণ প্রকল্পে বারবার ধস ও ফাটল দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। মালপ্পুরমের কুরিইয়াদের নির্মানাধীন NH-66-এর উড়ালপুল ধসের ঘটনায় অভিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা KNR Constructions-কে নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক। একই সঙ্গে এই প্রকল্পের পরামর্শক সংস্থা Highway Engineering Consultant (HEC)-কেও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ দলের পরিদর্শন ও প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ
গত সোমবার মালপ্পুরমের কুরিইয়াদের NH-66 এর নির্মাণাধীন অংশে একটি রিটেইনিং ওয়াল ধসে পড়ার পর NHAI-এর একটি বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। জয়পুর থেকে আসা ড. অনিল দীক্ষিত এবং কোচিন থেকে আসা ড. জিমি থমাসকে নিয়ে গঠিত এই দল ক্ষতিগ্রস্ত অংশ, যার মধ্যে মূল মহাসড়ক এবং সার্ভিস রোড উভয়ই রয়েছে, তার প্রাথমিক মূল্যায়ন করে।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সিমেন্টের ব্লক দিয়ে নির্মিত সুরক্ষামূলক প্রাচীরের নির্মাণে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি। ড. জিমি থমাস বলেন, “প্রাথমিক সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে এটি মাটি সংক্রান্ত একটি সমস্যা।” তিনি আরও বলেন, “মাটির গঠন, রাস্তার নকশা এবং নির্মাণ পদ্ধতি সহ সমস্ত দিকগুলির একটি বিস্তারিত বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ অধ্যয়নের পরেই আমরা সঠিক কারণ নিশ্চিত করতে পারব।”
উত্তর কেরল জুড়ে ধস ও ফাটল
মালপ্পুরমের কুরিইয়াদের পাশাপাশি, NH-66 সম্প্রসারণ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত রাস্তার আরও বেশ কয়েকটি অংশে উত্তর কেরলের বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগত ধস এবং ফাটল দেখা দিচ্ছে। গত বুধবার কান্নুরের কুপ্পামে NH নির্মাণস্থলে একাধিক ভূমিধসের ঘটনা ঘটলে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ করে প্রতিবাদ জানান। ওই অংশে একই দিনে দু’বার ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে।
কাসারগোড়ে মাভুঙ্গলের কাছে NH-এর ওপর প্রায় ৭২ ফুট দীর্ঘ একটি ফাটল দেখা দিয়েছে, যা মঙ্গলবার যেখানে একটি ফাটল দেখা গিয়েছিল তার কাছাকাছি। কানহানগাদের কাছে কুলিয়াঙ্গলের কাছে সার্ভিস রোডও ধসে পড়েছে, যা ওই এলাকায় রাস্তা তৈরির মান নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
প্রতিবাদ ও জবাবদিহিতার দাবি
গত বুধবার কুরিইয়াদের KNR Constructions Ltd-এর কার্যালয়ের দিকে যুব কংগ্রেসের সদস্যরা একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। রাজ্য নেতা অবিন ভার্কি-সহ অন্যান্যদের নেতৃত্বে বিক্ষোভকারীরা কোম্পানির বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তোলেন এবং জবাবদিহিতা দাবি করেন।
এদিকে, কোঝিকোড়ের সাংসদ এম কে রাঘবন কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ির কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বর্ষা আসার আগে এই সমস্যা সমাধানের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “কোঝিকোড়ের অনেক জায়গায় রাস্তার নির্মাণের জন্য পাহাড়গুলিকে অবৈজ্ঞানিকভাবে কেটে ফেলা হয়েছে।”