ব্যুরো নিউজ ০৩ জুলাই : কেরল বিশ্ববিদ্যালয়ে জরুরি অবস্থার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি রাষ্ট্রবাদী সংগঠনের আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘ভারত মাতা’র চিত্র প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্কের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মোহনান কুন্নুম্মাল বুধবার রেজিস্ট্রার কে.এস. অনিল কুমারকে সাসপেন্ড করেছেন। গত ২৫শে জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট হলে এই অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল রাজেন্দ্র বিশ্বনাথ আরলেকার উপস্থিত ছিলেন।এই সাসপেনশনকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে এবং একটি আইনি সংঘাতের সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
জাতীয়তাবাদী অনুষ্ঠানে বামপন্থী রেজিস্ট্রারের হস্তক্ষেপ
জানা গেছে, রেজিস্ট্রার অনিল কুমার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ধর্মীয় প্রতীক ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ করে এই অনুষ্ঠানটি বাতিল করেছিলেন। যদিও আয়োজকরা রেজিস্ট্রারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অনুষ্ঠানটি চালিয়ে যান। এই অনুষ্ঠানটি বিক্ষোভের মধ্যেই এবং রাজ্যপাল আরলেকারের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানের সময় ‘ভারত মাতা’র একটি ছবি প্রদর্শিত হয়, যেখানে ভারত মাতাকে গেরুয়া পতাকা হাতে দেখানো হয়েছিল। এই ছবির ব্যবহারকে কেন্দ্র করে সেনেট হলের বাইরে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়, যার নেতৃত্বে ছিল সিপিআই(এম)-এর ছাত্র সংগঠন স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (SFI) এবং কংগ্রেস-অনুমোদিত কেরালা স্টুডেন্টস ইউনিয়ন (KSU)।
বাম শাসিত কেরলে ‘ ভারত মাতা ‘ র প্রতীকে ‘ না ‘ ! বাতিল হল পরিবেশ দিবস !
উপাচার্য ও রাজ্যপালের উদ্বেগ
উপ-উপাচার্য কুন্নুম্মাল রাজভবনে জমা দেওয়া এক রিপোর্টে রেজিস্ট্রারের আচার-আচরণ নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হচ্ছিল এবং রাজ্যপাল মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, তখন কুমারের অনুষ্ঠান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। উপাচার্য এই পদক্ষেপকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং প্রতিষ্ঠানের বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য ক্ষতিকর বলে বর্ণনা করেছেন।
রাজভবন থেকে বিতর্কিত এই অনুষ্ঠান, যেখানে একটি বইও প্রকাশ করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে স্পষ্টীকরণ চেয়ে একটি চিঠি পাঠানোর পরই উপাচার্য এই রিপোর্ট জমা দেন।
রাজ্যে মক পার্লামেন্ট দ্বারা সংবিধান হত্যা দিবস পালন করলেন শুভেন্দু অধিকারী !
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া ও সরকারের হুঁশিয়ারি
এই সাসপেনশনের প্রতিক্রিয়ায়, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী আর বিন্দু বলেছেন যে, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মোহনান কুন্নুম্মালের রেজিস্ট্রাকে সাসপেন্ড করার কোনো ক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, “সাসপেনশন আদেশ নিয়ম লঙ্ঘন করেছে। উপাচার্য অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন।” মন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন যে, উপাচার্য আরএসএস-এর প্রতি তার আনুগত্যের জন্য পরিচিত এবং সতর্ক করে দিয়েছেন যে, প্রয়োজনে সরকার হস্তক্ষেপ করবে। তিনি আরও যোগ করেন, “উপাচার্যের গেরুয়াকরণের নীতি মেনে নেওয়া হবে না।” – যা এই বিতর্কে সাম্প্রদায়িকতা এবং তোষণবাদি মনোভাব উস্কে দেয় ।