ব্যুরো নিউজ,১৯ নভেম্বর:কলকাতার নানা গ্রাম ও শহরাঞ্চলে আবাস প্লাসের তালিকায় নাম না ওঠার কারণে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন বহু মানুষ। যেখানে একদিকে শাসক দলের নেতাদের ও তাদের ঘনিষ্ঠদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে বহু দরিদ্র, দিনমজুর ও অতি সাধারণ মানুষের নাম বাতিল হয়ে যাচ্ছে। বেশ কয়েকটি অভিযোগ উঠে এসেছে যে, বহু নেতাকর্মী পাকা বাড়ির মালিক হলেও নিজেদের ‘গরিব’ হিসেবে দাবি করে আবাস যোজনার সুবিধা নিয়েছেন।তাদের নাম তালিকায় তুলতে নানা কৌশল অবলম্বন করছেন।উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর গ্রামের কৌশল্যা মণ্ডল তার মাটির ঘরের মধ্যে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে দিনমজুরি করে জীবন নির্বাহ করেন। অথচ আবাস প্লাস তালিকায় তার নাম নেই। একই গ্রামের তৃণমূল বুথ সভাপতি কানাই বর্মণ দাবি করেছেন যে, ‘তখন আমার মাটির বাড়ি ছিল, এখন পাকা ঘর করেছি’। এ ধরনের আরও অনেক উদাহরণ পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সরকারী সুবিধার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করছেন।
কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে বিতর্কঃ শাসক দলের নেতাদের বিস্ফোরক মন্তব্য
তাদের দায় কে নেবে?
এছাড়া, নদিয়া জেলার শুকপুকুরের মোস্তারিন মণ্ডলের অভিযোগ, ‘যাদের নাম তালিকায় রয়েছে, তাদের বেশিরভাগেরই পাকা বাড়ি আছে। অনেকেই আবার গতবার ঘরের টাকা পেয়েছেন। এই তালিকায় নাম তোলার জন্য তৃণমূলের নেতারা টাকা দিয়েছেন।’ এরকম নানা অভিযোগ উঠে আসছে, যেখানে জনগণ মনে করছে, রাজনীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে কিছু মানুষ সরকারী সুবিধা পাচ্ছে, অথচ প্রকৃত দরিদ্ররা বঞ্চিত হচ্ছে।অন্যদিকে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মৌসুনি দ্বীপের মণিমালা মিদ্যেও অভিযোগ তুলেছেন, বারবার প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তার কাঁচা বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তাকে আবাস প্লাসের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, অথচ পাকা বাড়ির মালিক তৃণমূলের দুই বুথ সভাপতির নাম তালিকায় রয়েছে।এমনকি, মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলা ২ ব্লকের বালিগ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা দাবি করেছেন যে, তালিকা তৈরি করার সময় তাদের নাম ভুল রাখা হয়েছে, এবং আবেদন পত্রসহ তাদের কাঁচা বাড়ির ছবি পাঠানোর পরেও কোনো সুরাহা মেলেনি। অন্যদিকে, পুরুলিয়া, হুগলি, জলপাইগুড়ি, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের মধ্যে একই ধরনের ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে।
কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবিলায় বৃহৎ প্রস্তুতিঃ নতুন সরঞ্জাম কেনার পরিকল্পনা
তাদের দাবি, সঠিকভাবে সমীক্ষা করা হয়নি এবং এক শ্রেণির নেতা-কর্মী এর অপব্যবহার করছেন।প্রশাসন বলছে, ২০১৮ সালের সমীক্ষার ভিত্তিতেই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে, আর নতুন নাম যোগ করার কোনো উপায় নেই। তবে, কেউ চাইলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে পারেন। কিন্তু এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ২০১৮ সালের সমীক্ষাতেই যারা বঞ্চিত হয়েছে, তাদের দায় কে নেবে?