ব্যুরো নিউজ, ২৬ এপ্রিল : আজ রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয়দফা ভোট। আজ উত্তরবঙ্গের তিন আসনে ভোট। দার্জিলিং, রায়গঞ্জ ও বালুরঘাট – এই তিন আসনে ভোট। একইসঙ্গে দেশের ১৩টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৮৮টি আসনে ভোট। তবে আজ সব থেকে বেশি নজর কাড়বে উত্তরবঙ্গের তিন আসনে ভোট।
দার্জিলিং :
বলে রাখা ভাল, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের মত পাহাড়ের নির্বাচন এবার চতুর্মুখী নয়, এবার ত্রিমুখী লড়াই দেখবে পাহাড়। দার্জিলিংয়ে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা, তৃণমূল প্রার্থী গোপাল লামা আর কংগ্রেসের হয়ে লড়বে মুনিশ তামাং। ২০০৯ থেকে পাহাড়ে নিজেদের ভিত শক্ত করে রেখেছে বিজেপি। আর এবারও গেরুয়া শিবিরের পাশে বিমল গুরুং। গতবারের লোকসভা নির্বাচনে ৫৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন বিজেপির রাজু বিস্তা। প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যাটা ছিল ৭ লক্ষ ৫০ হাজার ৬৭। তবে ৩ লক্ষ ৩৬ হাজার ৬২৪ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তৃণমূল। তৃতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। আর সব শেষে সিপিএম। প্রায় ৮ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জেতে বিজেপি।
দ্বিতীয় দফার ভোটে রণক্ষেত্র বালুরঘাট , কমিশনের দ্বারস্থ সুকান্ত
আর ২১- এর বিধানসভা নির্বাচনেও সেই জয়ের ধারা বজায় রাখে বিজেপি। ২০১২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের কালিম্পং, মাটিগাড়া- নকশালবাড়ি, দার্জিলিং, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া, কার্শিয়াংয়ে জয় আসে বিজেপির। কিন্তু শুধু চোপড়ায় জয় পায় তৃণমূল। তবে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে পাহাড়ে বিজেপি ভাল ফল করলেও ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা যায় কিছুটা পরিবর্তন। চোপড়া, শিলিগুড়ির দখল নেয় তৃণমূল। এদিকে কালিম্পং, দার্জিলিং, কার্শিয়াংয়ে তৃণমূল জোট সঙ্গী অমিত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।
বালুরঘাট :
তবে আজকের দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে বিজেপির উত্তরের একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন বালুরঘাট। ২০১৪-এর লোকসভা নির্বাচনে এই বালুরঘাটের দখল নেয় তৃণমূল। বদল আগে গতবারের লোকসভা নির্বাচনে। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে এই ফুল বদল হয় বালুরঘাটে। আর এবার বালুরঘাটে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছে তৃণমূলের বিপ্লব মিত্র, আর এস পি-র জয়দেব সিদ্ধান্ত, আইএসএফ-এর মোজাম্মেল হক।
গতবারের নির্বাচনে বালুরঘাটে ৪৫ শতাংশ ভোট অর্থাৎ ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৩১৭ ভোটে জেতে সুকান্ত মজুমদার। আর ঠিক ৩ হাজার ২৯৩ ভোটের ব্যবধানে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তৃণমূল। তবে ২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে ইটাগড়, তপন, কুমারগঞ্জ, হরিরামপুরে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। আর ২৩-এর পঞ্চায়েত ভোটেও দাপট দেখায় তৃণমূল।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার আগুনে বলা যায় ঘি পড়ল,বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন সৌমিত্র খাঁ!
রায়গঞ্জ :
এদিকে রায়গঞ্জেও ত্রিমুখী লড়াই। বিজেপির হয়ে লড়ছেন কার্তিক পাল, তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ও কংগ্রেসের আলি ইমরান রমজ। গতবারের লোকসভা নির্বাচনে দেবশ্রী চৌধুরীর হাত ধরে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ৪০ শতাংশ অর্থাৎ ৫ লক্ষ ১১ হাজার ৬৫২ ভোটে জেতে বিজেপি। দ্বিতীয় স্থানে ৪ লক্ষ ৫১ হাজার ৭৮ ভোটে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তৃণমূল। তৃতীয় স্থানে বাম ও সর্বশেষে কংগ্রেস।
তবে রায়গঞ্জে ২১ -এর বিধানসভা নির্বাচনে ইসলামপুর, করমদীঘি, হেমতাবাদ, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, কালিয়াগঞ্জে জয় পায় তৃণমূল। শুধু কালিয়াগঞ্জ ও রায়গঞ্জে জেতে বিজেপি। ২১- এর পর ২৩-এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে বড় জয় পায় তৃণমূল।
গতবারের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরের এই তিনটি আসনের তিনটিতেই জয় পায় বিজেপি। আর আজ সেই তিনটি আসনেই ভোট। গতবারের মত এবারও কি এই তিন আসনের দখল পাবে বিজেপি? নাকি খুরবে খেলার মোড়? আর তা নিয়েই এখন চলছে জোর চর্চা। তবে হাজার চর্চা- তর্ক- বিতর্ক চললেও সেই উত্তর কিন্তু মিলবে ৪ জুন।