ব্যুরো নিউজ,২১ ফেব্রুয়ারি :আজকাল অনেক শিশু টিভি দেখে সময় কাটায়। বিশেষত, কার্টুন বা ছোটদের অনুষ্ঠানে তাদের আগ্রহ বেশি। অনেক মা-বাবাই মনে করেন, কিছু সময়ের জন্য টিভি দেখা শিশুর জন্য কোনো সমস্যা নয়। তবে একাধিক গবেষণা প্রমাণ করে দিয়েছে, এটি আসলে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, ১৮ মাস বয়স থেকে ৫ বছর পর্যন্ত শিশু যদি ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখে, তাহলে তার বুদ্ধির বিকাশ এবং ভাষা শেখার ক্ষমতা থমকে যেতে পারে।
ওজন কমানোর জন্য ৫ স্বাস্থ্যকর খাবার যা সহজেই তৈরি করা যায় জেনে নিন
মনঃসংযোগ এবং ধৈর্য নষ্ট হয়?
‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ’ প্রকাশিত এক গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, ৮৭২ জন শিশুর উপর সমীক্ষা চালিয়ে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। গবেষকদের মতে, যদি শিশু দিনে ৩ ঘণ্টার বেশি টিভি দেখে, তাদের মধ্যে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুদের খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ কমে যায়, এবং তারা অন্যদের সঙ্গে কথা বলতেও অসুবিধা অনুভব করে। তাদের ভাষার বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়, এবং এমন শব্দ বা বাক্য তারা শেখে যা তাদের বয়সের উপযোগী নয়। এর ফলস্বরূপ, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং চিন্তাভাবনার ক্ষমতাও দুর্বল হয়ে পড়ে।
একইসাথে, টিভি দেখলে শিশুদের মনঃসংযোগ এবং ধৈর্যও নষ্ট হয়। গবেষকরা বলেছেন, যারা বেশি টিভি দেখে, তাদের পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যায়, এবং সৃজনশীল চিন্তা বাধাগ্রস্ত হয়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, অতিরিক্ত টিভি দেখার কারণে শিশুর ঘুমের সমস্যা হয়। টিভি থেকে বেরোনো আলো মেলাটোনিন নামক একটি হরমোনের ক্ষরণে বাধা সৃষ্টি করে, যা ঘুমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই হরমোনের তারতম্য হলে, শিশুর ঘুম কমে যায়, অনিদ্রা বা উদ্বেগের সমস্যা দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, শিশুর বয়স অনুযায়ী কত ঘণ্টা টিভি দেখলে তার শারীরিক এবং মানসিক উন্নতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, তা নিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরামর্শ রয়েছে। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিকস’ এই বিষয়ে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে, এবং সেখানে বলা হয়েছে:
ঘুমের সমস্যা দূর করতে অভ্যাস করুন কূর্মাসনঃ সহজ পদ্ধতিতে শিখে নিন কিভাবে করবেন এই আসন
১৮ মাস বা তার কম বয়সী শিশু—এই বয়সে টিভি দেখানো উচিত নয়। তবে ভিডিও কলে শিশুটি মা-বাবা বা পরিবারের অন্য সদস্যদের দেখতে পারে, কিন্তু অন্য কোনো বৈদ্যুতিন ডিভাইসের সামনে তাকে রাখা উচিত নয়।
১৮ মাস থেকে ২ বছর বয়সী শিশু—দিনে আধ ঘণ্টার বেশি টিভি দেখানো উচিত নয়। এর বেশি টিভি দেখলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশে বাধা আসবে।
২ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু—দিনে ১ ঘণ্টা টিভি দেখানো যেতে পারে, তবে তা শুধুমাত্র শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান হতে হবে। শিশু টিভি দেখার সময় পাশে অভিভাবককে উপস্থিত থাকতে হবে।
কাজের চাপ দূর করার সহজ এবং কার্যকরী উপায় এই আসন
শিশুদের টিভি দেখার নেশা থেকে বের করে আনতে অভিভাবকদের অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে। যদি অভিভাবকরা নিজেও টিভি দেখার ব্যাপারে আসক্ত হয়ে থাকেন, তবে তাদেরও সেটা কমিয়ে ফেলতে হবে। নিজের প্রিয় অনুষ্ঠানগুলি মোবাইল বা ট্যাবে দেখে ফেলা যেতে পারে। টিভি দেখার সময়টুকু শিশুকে খেলাধুলা বা অন্য কোনো সৃজনশীল কাজে ব্যস্ত রাখলে অনেকটা উপকার হবে।