ব্যুরো নিউজ ২১ ডিসেম্বর: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর বাড়ি থেকে পঞ্চাশ কোটি টাকা নগদ উদ্ধার করে ইডি। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা উদ্ধার করার পর, এবার আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।নিয়োগ মামলার পঞ্চম অতিরিক্ত চার্জশিট সম্প্রতি আদালতে জমা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা।ইডি তাদের চার্জশিটে জানিয়েছে, কীভাবে এই নগদ টাকা সাদা করা হত এবং কীভাবে পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তার সহযোগীরা একাধিক কৌশল অবলম্বন করতেন।শশুর মশাই সিদ্ধহস্ত ছিলেন কালো টাকা সাদা করতে জানালেন পার্থর জামাই।
কিভাবে কালো টাকা সাদা করতেন পার্থ
চার্জশিটে পার্থের জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য্যের বয়ান তুলে ধরা হয়েছে, যা থেকে স্পষ্ট হয়েছে, পার্থ নগদ টাকা দিয়ে তা সাদা করার পদ্ধতি কীভাবে চালাতেন। কল্যাণময় বর্তমানে বিদেশে রয়েছেন এবং একাধিকবার জেরা করা হয়েছে তাকে। তিনি জানিয়েছেন, পার্থ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকজনকে নগদ টাকা দিতেন। সেই টাকা পরে ফিরে আসত পার্থের স্ত্রীর নামে তৈরি করা ট্রাস্টে। এইভাবে বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ছিল দুর্নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ছিলেন পার্থের কন্যা সোহিনী চট্টোপাধ্যায়। বহু কোম্পানির ডিরেক্টরদের পার্থ নিজে গিয়ে টাকা দিয়ে আসতেন। আর সেই টাকা তারা ডোনেশান হিসেবে বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্টে পাঠাতো চেকের মাধ্যমে। এই ট্রাস্ট তৈরি করা হয়েছিল কিছু সমাজ সেবামূলক কাজের উদ্দেশ্যে। পাটুলিতে পশু চিকিৎসালয় তৈরি করা হবে বলে এই ট্রাস্ট এর পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।কল্যাণময় জানান ওই ট্রাস্টের জন্য এক কোটি 17 লক্ষ 75 হাজার 910 টাকা ডোনেশন উঠেছিল। ওই ট্রাস্টের টাকা দিয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায় 15 কাঠা জমি কিনেছিলেন ২০১৯ সালে।
ইউনূসের সহকারি ভারতের এই জায়গাগুলি সংযুক্ত করল বাংলাদেশের ম্যাপে
এছাড়া, কল্যাণময় আরও জানিয়েছেন যে, ২০১৭ সালে পার্থের পরামর্শেই তিনি একটি কোম্পানি, বোটানিক্স অ্যাগ্রোটেক্স প্রাইভেট লিমিটেড, স্থাপন করেছিলেন, যা মাছ এবং ধানের ব্যবসা করত। এই সংস্থার মাধ্যমে একাধিক সম্পত্তি কেনা হয়েছিল, এবং এসব সম্পত্তির জন্য টাকা প্রদান করেছিলেন পার্থ। সংস্থার ব্যবসায়িক লাভ হিসাবেই এই টাকা দেখানো হয়েছিল। এছাড়া, পার্থ জামাইকে ১৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন, যার মাধ্যমে বিসিএম ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্থাপন করা হয়েছিল।
ইডির অভিযোগ, বাবলি চ্যাটার্জি মেমোরিয়াল ট্রাস্টকে দুর্নীতি এবং কালো টাকা সাদা করার কাজে ব্যবহার করা হয়েছিল। পার্থ এবং তার জামাই একাধিক ভুয়ো কোম্পানি তৈরি করে টাকা লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন। এ সমস্ত সংস্থার মালিক হিসাবে পার্থ রাজীব দে’র নাম ব্যবহার করতেন।কল্যাণময় বর্তমানে বিদেশে থাকলেও, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।