ব্যুরো নিউজ ২ অক্টোবর: ঘুমের মধ্যে দেবীর স্বপ্নাদেশ এসেছিল তার পর থেকে বাংলাদেশে শুরু হয়েছিল দুর্গা পুজো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে দেশ বিভক্ত হয়ে যাওয়ার ফলে পুজোও বদলে যায়। ওপারের পুজো চলে আসে পশ্চিমবাংলায়। ১৮৫০ সালে বাংলাদেশের পূর্বপুরুষ চন্দ্রনাথ তরফদারের উদ্যোগে দুর্গা পুজো শুরু হয়েছিল। এরপর থেকে তাঁর পরিবার নিয়মিত এই পুজো আয়োজন করে আসছে।
চিতাবাঘের আতঙ্কে কৃষকের প্রাণহানির ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে
পুজোর ব্যবস্থা মা নিজেই করে দেন
১৯৪৭ সালের দেশভাগ এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ গঠনের ঘটনাগুলো তরফদার পরিবারকে তোলপাড় করে। ১৯৭৯ সালে নতুন প্রজন্মের উদ্যোগে কাঁটাতার পেরিয়ে উমা আবার ফিরে আসেন। পুরাতন মালদার মোহনবাগান এলাকায় শুরু হয় নতুন করে পুজোর আয়োজন, যেখানে আজও সেই পুরোনো রীতি মেনে পুজো হয়।বর্তমান প্রজন্মের পুজো উদ্যোক্তা রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, চন্দ্রনাথ তরফদার শুধু পুজো শুরুর নির্দেশই পাননি, দেবী স্বপ্নে তাকে পুজোর সামগ্রীরও ব্যবস্থা করে দেন। দেবী তাকে জানান যে গ্রামের পুকুরপাড়ে পুজোর সামগ্রী রাখা আছে। পরের দিন চন্দ্রনাথ সেই সামগ্রী পান এবং আজও সেগুলো দিয়েই মা দুর্গার পুজো হয়।তরফদার পরিবারের বিশ্বাস, দেবী দুর্গা অত্যন্ত জাগ্রত। তাই এই পরিবারের কোনও সদস্য কখনও আমিষ খাদ্য গ্রহণ করেন না। এখানে মা দুর্গার পুজো বৈষ্ণব মত অনুযায়ী হয়। মোহনবাগান গ্রামের তরফদার পরিবারের দুর্গামন্দিরে পুজোর আয়োজনের দায়িত্ব রয়েছে চার শরিক রবীন্দ্রনাথ, বিষ্ণুপদ, গোবিন্দ, এবং মানিকের।তারা সবাই ব্যবসা করেন, তবে পুজোর চারদিন এক হাঁড়িতে রান্না করে খাওয়া হয়। ৩৭ বছর ধরে মৃৎশিল্পী প্রভাতচন্দ্র পাল এখানে দুর্গার প্রতিমা গড়ছেন। যেদিন তিনি প্রতিমা তৈরি করেন, সেদিন তিনি নিরামিষ খাবার খান।এই পুজোতে দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য এমন যে, এলাকার মেয়েরা শাঁখা নিবেদন বিবাহিত মহিলাদের সন্তানের জন্য প্রার্থনা পূর্ণ হয়। বছর ঘুরলেই, বিয়ের বয়সে মেয়েরা ভালো পাত্রের জন্য দেবীর কাছেএবং অল্প সময়ের মধ্যে তাদের বিয়ে হয়ে যায়।
অক্ষয়ের সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক অদ্ভুত গল্প
তরফদার পরিবারের দুর্গাপুজোর এই ঐতিহ্য যুগ যুগ ধরে চলতে থাকে। পুজোর সময় এখানকার পরিবেশ যেন এক আশীর্বাদের আবহে ভরে ওঠে, যা কেবল ধর্মীয় উৎসবই নয়, বরং সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ।