Dilip Ghosh PM Modi

ব্যুরো নিউজ ১৮ জুলাই ২০২৫ : একুশে জুলাই যত এগিয়ে আসছে, বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের গতিবিধি নিয়ে আলোচনা ততই বাড়ছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পরে দিলীপ ঘোষের কথায় যে ‘কামব্যাক’-এর জোরালো ইঙ্গিত মিলেছিল, আজ অর্থাৎ শুক্রবার সেই উদ্যমে যেন কিছুটা ফিকে লেগেছে। যার নির্যাস, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় থাকছেন না বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি নিজেই জানিয়েছেন, দল তাঁকে আমন্ত্রণ জানায়নি। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলছেন, দিলীপ ঘোষকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিল্লিতে ডেকেছে, তাই তিনি থাকতে পারছেন না সভায়। আক্ষরিক অর্থেই, দুটি ভিন্ন দাবি সামনে এসেছে।

মোদীর সভায় দিলীপকে ডাকল না বিজেপি?

এদিন দিল্লি যাওয়ার পথে বিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমকে দিলীপ ঘোষ জানান, তাঁকে পার্টি ডাকেনি, কর্মীরা ডেকেছিলেন। মোদীর সভায় না থাকা নিয়ে দিলীপের বক্তব্য, “আমার কর্মীরা ডেকেছিলেন। তাই আমি হ্যাঁ করেছিলাম। আমাকে পার্টি ডাকেনি। হয়তো পার্টি চায়ও না আমি যাই। অস্বস্তি হবে। তাই আমি দুর্গাপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় যাচ্ছি না।” কিন্তু দিলীপের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সভায় আমন্ত্রণ জানিয়ে বিজেপি-র দলীয় পোস্টার পোস্ট করা হয়েছে। তাহলে হঠাৎ কী ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিওবা কর্মী ও পার্টি বিজেপির সংস্কৃতিতে পৃথক নয় !

PM Modi : শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী মোদী বিহার ও পশ্চিমবঙ্গ সফরে: রেল, সড়ক, প্রযুক্তি ও মৎস্য খাতে নতুন দিগন্ত ।

সুকান্তের দাবির সঙ্গে মিলছে না

এদিকে, দিলীপ যখন সরাসরি বলেই দিচ্ছেন যে তিনি মোদীর সভায় উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ পাননি, বিজেপির আরেক প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি ভিন্ন। সুকান্তবাবু এক সাক্ষাৎকারে  বলেন, “দিলীপদাকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ডেকেছে, তাই থাকতে পারছেন না। এর মধ্যে কোনো বিতর্কের ব্যাপার নেই। আমাকেও যদি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ডাকত, আমিও থাকতে পারতাম না।” এর ফলে দিলীপের অনুপস্থিতি নিয়ে দলের অভ্যন্তরেও ভিন্ন সুর স্পষ্ট হয়েছে।

শমীক ভট্টাচার্যকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও ডাক পাননি

বস্তুত, মোদীর জনসভা তো দূর, সম্প্রতি শমীক ভট্টাচার্যকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও দিলীপ ঘোষ ডাক পাননি। কয়েক দিন আগেই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে দলের রাজ্য নেতৃত্বের দূরত্ব ঘোচাতে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। মিটিং সেরে দিলীপকেও বেশ উদ্যোগী দেখা গিয়েছিল। অন্য দলে যাওয়ার জল্পনা পুরো খারিজ করে জানিয়েছিলেন, তিনি বিজেপি আছেন ও থাকবেন। সেই দিলীপকে এবার প্রধানমন্ত্রীর সভায় ডাকা হলো না, ফলে আবার নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। একুশে জুলাই দিলীপ ঘোষকে কোন মঞ্চে দেখা যাবে, সেই নিয়েও নানা আলোচনা চলছিল। মোদ্দা বিষয় হলো, শমীকের সঙ্গে বৈঠকের পর দিলীপ ও বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের মধ্যে দূরত্ব ঘোচার যে ছবিটি দেখা গিয়েছিল, তা আবার একটু অস্পষ্ট হয়ে গেল।

PM Modi : দুর্গাপুর সফরের আগে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে ‘উন্নয়ন ও অপশাসনের’ কথায় পশ্চিমবঙ্গ কে নিয়ে উদ্বেগ স্পষ্ট !

সর্বভারতীয় বিজেপির পরিচয়: দিলীপ এখন দিল্লিতে

তবে, দিলীপ ঘোষকে এদিন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দিল্লিতে তলব করেছে। বিজেপি-র কাছে তাদের সমস্ত সদস্য ও কর্মী সমান, এবং একজন পৃথক নেতার কাছে আবদ্ধ থাকতে হবে উল্লেখযোগ্য হওয়ার জন্য – সেই রকম সংস্কৃতি বিজেপিতে নেই। সমস্ত সদস্যই গুরুত্বপূর্ণ, সবার প্রয়োজন আছে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে। তাই আজ দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদী যখন বঙ্গে, বাঙালি নেতা দিলীপ তখন দিল্লিতে – এটি  বিজেপির সর্বভারতীয় পরিচয়। এটি আঞ্চলিক পরিবারতান্ত্রিক দলের থেকে ভিন্ন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর