ব্যুরো নিউজ,২১ সেপ্টেম্বর:হুগলির খামারগাছির দেবাশিস হালদার। এক মেধাবী ছাত্র, যিনি বরাবরই পড়াশোনায় প্রথম ছিলেন। মাধ্যমিকে রাজ্যে অষ্টম, উচ্চমাধ্যমিকে একাদশ। শুধু পড়াশোনা নয়, আঁকা এবং আবৃত্তিতেও ছিলেন প্রথম। ঘরে আলমারিতে থরে থরে সাজানো বই, তার পাশেই সাফল্যের একাধিক স্বীকৃতি। ‘দাদাগিরি’র মঞ্চে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে পুরস্কারও পেয়েছিলেন তিনি।
জুতো খুলতে বলায় চিকিৎসকের উপর হামলা, রোষের শিকার গুজরাতে
রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করেন তিনি
দেবাশিস কামালপুর উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। ২০০৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে অষ্টম স্থান অর্জন করে তিনি ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। পরবর্তী বছরগুলোতে তার অধ্যাবসায় এবং মেধার কারণে ডাক্তারির সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় (নিট) সাফল্য লাভ করেন। কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করে বর্তমানে অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগে কর্মরত আছেন।দেবাশিসের পরিবার বলাগড়ের সিজা বাজারের কাছে মুক্তকেশীতলায় থাকে। পরে তারা অসম লিঙ্ক রোডের পাশে উঠেন। বর্তমানে দেবাশিসের মা অনিমা, বাবা ক্ষীতিশ এবং পিসি মীরা হালদার গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছেন। ছয় মাস আগে দেবাশিসের বিয়ে হয়েছে। তার স্ত্রীও একজন জুনিয়র ডাক্তার, এবং আন্দোলনে স্বামীর সাথে যোগ দিয়েছে।ছেলের প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়ে দেবাশিসের বাবা-মা গর্বিত। মা অনিমা চোখের জল মুছতে মুছতে বলেন, ‘ছেলে ন্যায়ের জন্য আন্দোলন করছে। আমরা খুব খুশি। ছোট থেকে সে কখনো মিথ্যার আশ্রয় নেয়নি, বেশিরভাগ সময়ই পড়াশোনা করেছে। তবে ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হয়। তবুও সিনিয়র ডাক্তারদের পাশে পেয়ে সাহস পাই। একজন মা হিসেবে আমি তরুণী চিকিৎসকের ওপর নির্যাতনের বিচার চাই।’
নদিয়ার রানাঘাটে ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা অনুমতির জন্য আদালতের দ্বারস্থ উদ্যোক্তারা
পিসি মীরা হালদার একই কথা বলছেন। তিনি বলেন, ‘দেবাশিসের এই আন্দোলনে আমাদেরও সমর্থন রয়েছে।’ বাবা ক্ষীতিশ হালদার বলেন, ‘আন্দোলন যে এত বড় আকার নেবে, ভাবতেই পারিনি। গোটা বিশ্বে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন দেখে আমি গর্বিত। ধর্নামঞ্চে আমরা গিয়েছিলাম, সাধারণ মানুষের সহযোগিতা দেখে মনে হয়েছে, সত্যিই মানুষ তাদের পাশে আছে। এই আন্দোলনকে আমি কুর্নিশ জানাই।’দেবাশিস হালদার কেবল একজন মেধাবী ডাক্তার নন, তিনি বর্তমান সময়ে প্রতিবাদের এক প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তার সংগ্রাম অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।