ব্যুরো নিউজ , ৮ ফেব্রুয়ারি:দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে একেবারে শূন্য হাতে ফিরে এসেছে কংগ্রেস। ২০১৫ থেকে পর পর তিনবার তারা এই পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছে। এর আগে, ১৯৯৮ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত দিল্লিতে টানা তিনটি বিধানসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নজির গড়েছিল কংগ্রেস। ২০১৫ সালে শূন্য আসন নিয়ে ফের পরাজিত হওয়ার পর, এবার ২০২০ সালে এবং ২০২৫ সালে, কংগ্রেস আবারও শূন্য হাতে ফিরে আসলো। এই শূন্যের হ্যাটট্রিক কংগ্রেসের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এর মাধ্যমে তারা দিল্লির রাজনৈতিক পরিসরে নিজেদের অস্তিত্বের সংকট আরো গভীর করল।
অণ্ণা হজারের আক্ষেপ: কেজরীওয়াল ও আপের হারের পরামর্শের অভাব
বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত
বিজেপির বিপক্ষে, কংগ্রেস এবার খুব একটা ভালো ফল করতে পারেনি। যদিও গত নির্বাচনে সাড়ে ৬ শতাংশের মতো ভোট পেয়েছিল তারা, তবে ২০১৫ সালের মতো এবারও তারা শূন্য আসন নিয়ে ফিরেছে। বিশেষত, কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিতের পুত্র সন্দীপ দীক্ষিত, যিনি নয়াদিল্লি আসনে কেজরীওয়ালের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন, তিনি জামানত হারিয়েছেন। জামানত হারানো অন্য কংগ্রেস প্রার্থীদের মধ্যে ছিলেন কালকাজি আসনে অলকা লাম্বা, কৃষ্ণা তীরথ, এবং হারুন ইউসুফও। কংগ্রেসের হার, তার পাশাপাশি বিজেপির শোচনীয় জয়ের সঙ্গে প্রমাণ করেছে যে দলের নেতৃত্বের অভাব এবং রাজনৈতিক সংকটের কারণে তারা দিল্লির রাজনীতিতে খুব বেশি কিছু করতে পারছে না।
এদিকে, অন্যদিকে, হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল ‘মিম’ কংগ্রেসের চেয়ে অনেক ভালো ফল করেছে। মাত্র দুটি আসনে দাঁড়িয়ে মিম কংগ্রেসের তুলনায় ভালো ফল করেছে। তবে, কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দিল্লি প্রদেশ সভাপতি দেবেন্দ্র যাদব কস্তুরবা নগরে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন, যা তাদের কিছুটা সম্মান পুনরুদ্ধার করেছে।এই পরিস্থিতিতে, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র নেতারা কংগ্রেসের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, কংগ্রেস দিল্লিতে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে, এবং এর ফলে বিজেপির লাভ হচ্ছে। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এই বিষয়টিকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমেও মন্তব্য করেছেন। কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন, কারণ ২০১৩ সালের পর থেকে তারা একের পর এক বিধানসভা নির্বাচনে পরাজিত হয়েছে।
২০১৩ সালের নির্বাচন, যেখানে কংগ্রেসের নেতৃত্বে শীলা দীক্ষিতের দল আটটি আসনে জয়ী হয়েছিল, তাতে কংগ্রেসের ভোটশক্তি ছিল ২৪ শতাংশ। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে তা কমে গিয়েছিল ১০ শতাংশের নিচে। ২০১৯ সালে শীলা দীক্ষিতের প্রয়াণের পর কংগ্রেসের অবস্থা আরও খারাপ হয়ে যায়। কংগ্রেসের জন্য এই দীর্ঘ সময়কাল আর এক ধরনের রাজনৈতিক শূন্যতা সৃষ্টি করেছে, যা দলটির জন্য ভবিষ্যতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।