ব্যুরো নিউজ,১৭ সেপ্টেম্বর :রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক বিজ্ঞপ্তি, যা মহিলাদের রাতের শিফট সংক্রান্ত ছিল, এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল করতে হচ্ছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল, যা মহিলাদের রাতের শিফটে কাজ করার পরিমাণ কমানোর বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছিল। এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন মহলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। বিশেষ করে, আরজি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা, যেখানে একজন মহিলা চিকিৎসক রাতের শিফটে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে এই বিজ্ঞপ্তির প্রণয়ন করা হয়।
মুকেশ অম্বানীর উত্তেজনা, পুত্রবধূকে নিয়ে যা ঘটল সেই ভিডিও ভাইরাল
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে
রাজ্য সরকারের এই বিজ্ঞপ্তির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। প্রধান বিচারপতি রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছেন, কীভাবে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। তাঁর মন্তব্য, “আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে নিরাপত্তা প্রদান করা, তবে মহিলাদের রাতের শিফটে কাজ করার অযোগ্যতা ঘোষণার মাধ্যমে তাদের সুযোগ সীমাবদ্ধ করা যাবে না।” প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “বিমান পরিষেবা, সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে মহিলারা রাতে কাজ করেন। তাহলে এই বিজ্ঞপ্তির যৌক্তিকতা কী?”
তৃণমূল মুখপত্রের সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফা দিলেন সুখেন্দুশেখর রায়
মঙ্গলবারের শুনানির সময়, এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তখন প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “মহিলারা এমন কোনও ছাড় চান না। তারা সমান সুযোগ চাইছেন এবং তাদের সব পরিস্থিতিতে কাজ করার অধিকার রয়েছে। রাজ্যকে এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।” প্রধান বিচারপতির এই নির্দেশনার পর, রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল প্রতিশ্রুতি দেন যে বিজ্ঞপ্তির বিতর্কিত অংশ মুছে ফেলা হবে। মূলত, ওই বিজ্ঞপ্তির পাঁচ ও ছয় নম্বর অংশের কারণে আপত্তি উঠেছিল, যা এখন সংশোধন করা হবে।
ইঁদুর-বনাম-খরগোশ: কুণাল ও শতরূপের মধ্যে নতুন ‘লড়াই’
এই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছে আন্দোলনরত মহিলা চিকিৎসকরা। আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডা. রিয়া বেরা মন্তব্য করেছেন, “আমরা পুরুষদের মতোই শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিত। তাহলে কেন আমাদের কাজের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ প্রদান করা হবে না? আমরা তো কোনও শাবক পাখি নই যে, বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হবে।”
গত অগস্টে আরজি কর ঘটনার পর রাজ্য সরকার মহিলাদের নিরাপত্তার জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, মহিলাদের কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছিল, যেখানে সম্ভব, মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য ছিল মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তবে এতে মহিলাদের কর্মসংস্থানে বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা ছিল।
মুকেশ অম্বানীর উত্তেজনা, পুত্রবধূকে নিয়ে যা ঘটল সেই ভিডিও ভাইরাল
এখন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর রাজ্য সরকারের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ শুরু হচ্ছে। তাদের এই বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তির সংশোধনের পাশাপাশি, মহিলাদের সমান সুযোগ নিশ্চিত করার দায়িত্ব এখন তাদের উপর। রাজ্য সরকারের উচিত হবে সঠিক নীতিমালা গ্রহণ করে, মহিলাদের নিরাপত্তা এবং কাজের সুযোগের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা।