শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক বোঝেন না মমতা’, সিএএ নিয়ে মমতাকে আক্রমণ অমিত শাহর

“হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না” : অমিত শাহ

ব্যুরো নিউজ, ১৪ মার্চ, পুস্পিতা বড়াল: চরম বিভ্রান্তির শিকার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। রাজনৈতিক দলগুলোর পরিস্থিতি আরও জট পাকিয়েছে বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার কারণে। কে শরণার্থী, কেই বা নাগরিক, নতুন আইনে কাদের আবেদন করতে হবে? এখন মুখে মুখে এমন একাধিক প্রশ্ন। এমন প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ খুললেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সরাসরি নিশানা করে অমিত শাহ বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সঙ্গে অবিচার করবেন না। বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে মুক্ত করবই। হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না।”

 

“হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না” : অমিত শাহ

কেন্দ্রের মোদি সরকার ২০১৯ সালে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন আনে। এই আইনের উদ্দেশ্য, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে নির্যাতিত অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া। তবে তা প্রায় ৪ বছর বলবৎ করা যায়নি করোনার জেরে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক লোকসভা ভোটের আবহে গত সোমবার সিএএ চালু করে গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে।

caa mamta

৪৫ মিনিট লেট হওয়ায় বৈঠকে প্রবেশের অনুমতি পেলেন না BJP-র বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি

ঠিক তার পরেরদিন হাবরার সভা থেকে পাল্টা আক্রমন শানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “যেই সিএএ পোর্টালে দরখাস্ত করবেন, তখনই আপনাদের এতদিনকার নাগরিকত্ব বাতিল হবে। এতদিন যে সুযোগ সুবিধা পেতেন, তা বাদ হয়ে যাবে। তাই দরখাস্ত করার আগে ভালো করে ভেবে দেখবেন।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “এটা পুরোপুরি ভাঁওতা, জুমলা। আগে আপনাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেবে। তার পর সিএএ-র মাধ্যমে নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলবে। কিন্তু সেই অধিকার আবার ফিরে পাবেন কিনা, তার নিশ্চয়তা নেই।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সাংসদ ছিলেন তখন কেন্দ্রে ইউপিএ 1 সরকার আর পশ্চিমবাংলায় বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে।। সেই সময় তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাম সরকারের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ তুলেছিলেন বাংলাদেশ সহ ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ গুলি থেকে ভুয়ো ভোটার ঢুকিয়ে ভোটে জিতছে সিপিএম। তাই তার জন্য তিনি দাবি করেছিলেন সেই সমস্ত ভুয়া ভোটার ও অনুপ্রবেশ কারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার ।এমনকি সিএএ র মত আইন করার জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন লোকসভায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ যে বিজেপি জামানায় তিনি সংসদে  সিএএ সহ বিজেপির আনা যে কোন বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেননি। পরোক্ষে সেই বিল পাস করানোর জন্য সংসদ কক্ষ ত্যাগ করে যায় তার সাংসদরা। ভোট বয়কট করে নরেন্দ্র মোদিকে তিনি বারে বারে পরোক্ষ সমর্থনই করেন। তাই প্রশ্ন উঠছে যে, সেই সময় তিনি কেন এনডিএ সরকারের বিরুদ্ধে গেলেন না। রাজনৈতিক মহলের চর্চা যে মোদীর মাস্টার স্ট্রোকের ফলে আজ রাজনৈতিক সংকটে পড়ে যাওয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে 180 ডিগ্রি ঘুরে উল্টো কথা বলতে বাধ্য করছে। তবে সেদিন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিএএর পক্ষে সওয়াল করেছিলেন এবং অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন আজ কেন উল্টো কথা বলছেন? তবে কি তিনি সিএএ (CAA)এর মত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের ওপর রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছেন?

মহুয়ার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ আনলেন বিজেপির এক রাজ্য নেতা

অপরদিকে থেমে থাকেননি শাহও। এদিন সমস্ত সমালোচনার জবাব দিয়ে অমিত শাহ বলেন, “শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ফারাক বোঝেন না মমতা। হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ তৈরির চেষ্টা করছেন তিনি। সিএএ নিয়ে প্রতিবাদ তোষণের রাজনীতি। তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সঙ্গে অবিচার করবেন না। বাংলাকে অনুপ্রবেশকারীদের থেকে মুক্ত করবই। হাতজোড় করে বলছি সিএএ নিয়ে রাজনীতি করবেন না। জাতীয় সুরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে রাজনীতি করছেন। মানুষ কখনই পাশে থাকবেন না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করছি, তিনি দেখান সিএএ-র কোন ধারা নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়।”

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর