ব্যুরো নিউজ ১৫ই মে : আটারি সীমান্তে বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম শ-এর মুক্তি থেকে শুরু করে পাকিস্তান-সমর্থিত ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে ভারত সরকারের কঠোর পদক্ষেপ, এবং সন্ত্রাসবাদ দমন, একাধিক ইস্যুতে সরব হলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন,ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত।
পূর্ণম শ-এর মুক্তি প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “বিএসএফ জওয়ানের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিল এবং জানিয়েছিল, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পরই পাকিস্তানের মুক্তির প্রোটোকল শুরু করা যাবে। বিজেপির বিধায়ক পবন সিং এবং অম্বিকা রায়, প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংও তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাদের তথ্য সরবরাহ করেছেন। এটি শুধু পশ্চিমবঙ্গের বিষয় নয়, সমগ্র দেশের বিষয়।” তিনি আরও জানান, পূর্ণমের স্ত্রী রজনী শ-ও প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। এরপর শীতলকুচির কৃষক উকিল বর্মনের মুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, খুব শীঘ্রই তিনি মুক্তি পাবেন। বাংলাদেশ রাইফেলসের হাতে আটক হওয়া এই কৃষকের মুক্তির জন্য আমাদের যোগাযোগ চলছে।”
ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের প্রশংসা করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “দেশ সবার আগে, মাতৃভূমি ছাড়া আমরা কিছুই নই। আমি নিজেই কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের কাছে পাঁচটি বাংলাদেশি ইউটিউব পোর্টাল এবং চ্যানেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলাম, যারা ভারত সম্পর্কে ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছিল। এর ফলে ভারতে সেই চ্যানেলগুলি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।” তিনি চীন, পাকিস্তান, তুরস্ক-সমর্থিত বিভিন্ন ‘এক্স’ হ্যান্ডেল এবং ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রচারিত ভুয়ো খবরের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর বিজয় উদযাপন ও দেশের সেনা, রাষ্ট্রবাদি জনগন এবং বীরগতি প্রাপকদের সম্মান জানাতে বিজেপি ১৬ মে, বিকেল ৫ টায় , কলেজ স্কোয়ার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত ‘তিরঙ্গা যাত্রা’ আয়োজন করবে। এই প্রস্তাব বঙ্গ বিজেপির কার্যালয় অনুমদিত হয়েছে , এবং সরবস্তরের সংগঠনের সদস্যরা অংশগ্রহণ করবেন । প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সামরিক প্রধানদের কাছে এই কার্যক্রম পাঠানো হবে। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের বিএসএফ বিরোধী নীতির সমালোচনা করে বলেন, “আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তৃণমূল কংগ্রেসের কাছ থেকে বিধানসভায় এই ধরনের কোনো প্রস্তাব আশা করতে পারি না, যেখানে তারা বিএসএফের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করে এবং প্রকাশ্যে জনবিন্যাস পরিবর্তনের পক্ষে কথা বলে।”
সশস্ত্র বাহিনীকে সম্মান জানিয়ে কলকাতায় বিজেপির তিরঙ্গা যাত্রা
ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “২০১৪ সাল থেকে ভারত নিজেকে পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিতে উন্নীত করেছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী দেশকে তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কেউ আমাদের উপর যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দেয়নি, কারণ আমরা সবাই আনুষ্ঠানিকভাবে জানি যে পাকিস্তানের ডিজিএমও প্রথমে আমাদের কাছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত উভয়ই মৌলবাদী ইসলামিক সন্ত্রাসবাদের শিকার এবং ফলস্বরূপ আমাদের উভয় দেশ বিভিন্ন স্তরে একসঙ্গে কাজ করে।”
সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের পাকিস্তান প্রসঙ্গে শান্তি আলোচনার প্রস্তাবকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “এই বিকাশ রঞ্জন কে? তার পরিচয় কী? এই লোকদের আদর্শগত পূর্বপুরুষরা কমিউনিস্ট চীনে। তাদের আদর্শ মাস্টারদা সূর্য সেন, বিনয়, বাদল, দীনেশ বা ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামী নন , তাদের আদর্শ কেবল মাও, মার্ক্স এবং লেনিন।”
সবশেষে, সন্ত্রাসবাদ দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘ঘরে ঢুকে মারব’ প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। তিনি পাকিস্তানের ভেতরে সর্বত্র আঘাত হেনেছেন এবং পহেলগাম হামলার পর বিহারে তিনি যেমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তেমনই সন্ত্রাসবাদী পরিবারগুলোকে শেষ করে দিয়েছেন। সমগ্র দেশ তাঁর সঙ্গে রয়েছে।”
শুভেন্দু অধিকারীর এই বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, তিনি জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সন্ত্রাসবাদ দমনে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিরোধী পক্ষের নীতির তীব্র সমালোচনা করছেন। তিনি বলেন, মোদীর নেতৃত্বে দেশ সুরক্ষিত।