ব্যুরো নিউজ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ শনিবার পণ্য ও পরিষেবা কর (GST) সংস্কার নিয়ে বিরোধীদের ‘ভুল তথ্য’ ছড়ানোর জন্য তাদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, জিএসটি চালু করার সময় যে চারটি করের স্ল্যাব রাখা হয়েছিল, তা ক্ষমতাসীন বিজেপি বা তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির একক সিদ্ধান্ত ছিল না, বরং তা ছিল রাজ্যগুলির অর্থমন্ত্রীদের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কমিটির সিদ্ধান্ত।
একটি সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সীতারমণ জানান, এই কমিটিতে কংগ্রেসের মন্ত্রীরাও ছিলেন। তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন তোলেন, কেন বিরোধীরা এখন তা ভুলে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বিরোধীরা যদি তাঁকে ভুল প্রমাণ করতে পারে, তবে তিনি ক্ষমা চাইতে রাজি আছেন। “আমার কোনো অহংকার নেই। আমি মানুষের কাছে ক্ষমাও চাইব। কিন্তু তারা যা বলছে, তা সম্পূর্ণ অর্থহীন,” তিনি মন্তব্য করেন।
জিএসটি কাউন্সিলের নতুন কাঠামো
বিরোধীরা, বিশেষত কংগ্রেস, চারটি করের স্ল্যাব রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করে আসছে। তবে বুধবার নির্মলা সীতারমণের সভাপতিত্বে জিএসটি কাউন্সিল একটি নতুন দুই-স্তরের কাঠামো অনুমোদন করেছে, যা ২২শে সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে। নতুন কাঠামোতে ১২ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশের স্ল্যাব বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে, বিলাসবহুল পণ্য এবং কিছু ‘সিন প্রোডাক্ট’-এর জন্য একটি নতুন ৪০ শতাংশের স্ল্যাব চালু করা হয়েছে।
পূর্বে জিএসটি-র চারটি স্ল্যাব ছিল: ৫ শতাংশ, ১২ শতাংশ, ১৮ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশ।
GST : স্বাস্থ্য ও জীবন বিমায় কোনো কর নয় , নেশাদ্রব্যে বর্ধিত কর ; কেন্দ্রের নতুন জিএসটি নীতি !
‘ভারতের আরও ভালো বিরোধী দল দরকার’
নির্মলা সীতারমণ বলেন, দেশ আরও ভালো বিরোধী দল পাওয়ার যোগ্য, কারণ তারা কেবল মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, কোনো সেবা করছে না। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রশংসা করে বলেন, তিনি সব সময় জন-মুখী সংস্কারের দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভারতের একটি ভালো বিরোধী দল প্রাপ্য। ভারতের আরও ভালো বিরোধী নেতা দরকার। এমন ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে করা মন্তব্য কোনো ভালো ফল দেবে না। এই নেতারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং দেশের কোনো উপকার করছেন না। বরং, তারা দেশের ক্ষতি করছেন।”
এদিকে, কংগ্রেস সহ ‘ইন্ডি’ জোটের অন্যান্য দলগুলো নতুন জিএসটি স্ল্যাবের গঠনমূলক সমালোচনার পরিবর্তে ‘ধ্বংসাত্মক’ সমালোচনা করেছে। তারা দাবি করেছিল, কেবল ১২% এবং ১৮% – এই দুটি স্ল্যাব রাখা হোক। কিন্তু সরকারের যুক্তি অনুযায়ী, এতে সাধারণ মানুষের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ত, কারণ এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক পণ্য নতুন ০% বা ৫% এর মূল স্ল্যাবের আওতায় আনা হয়েছে। অন্যদিকে, বিলাসবহুল পণ্যের ক্ষেত্রে আগের করের হার ছিল ৪৩%, যা নতুন ৪০ শতাংশের স্ল্যাবের ফলে ৩% কমেছে। এ কারণে নতুন জিএসটি স্ল্যাব নিয়ে বিরোধীদের প্রতিবাদ অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।