ব্যুরো নিউজ ২ আগস্ট : আবারও কলকাতা হাইকোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। একাধিক জনস্বার্থ মামলায় ক্ষতিপূরণ না দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে শুক্রবার বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র                                                            ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে গভীর অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত। মামলার শুনানির সময় রাজ্যের কোনও আইনজীবী উপস্থিত না থাকায় বিচারপতিরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং এই উদাসীন মনোভাবকে ‘অপমানজনক’ বলেও ব্যাখ্যা করেন।

মেয়েকে দু’সপ্তাহে টাকা দেওয়ার নির্দেশ

শুনানিতে বিচারপতি পালের স্পষ্ট প্রশ্ন, “কেন বছরের পর বছর এই ক্ষতিপূরণ আটকে রাখা হচ্ছে? কেন জনস্বার্থ মামলার গুরুত্বকে অবজ্ঞা করা হচ্ছে?” তিনি আরও বলেন, “এটা একেবারেই কাম্য নয় যে গুরুত্বপূর্ণ এই ধরনের মামলায় রাজ্যের কোনও প্রতিনিধি হাজির থাকবেন না। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্তরা ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।” বিচারপতি আরও জানান, তেলেঙ্গানায় বিচারক থাকাকালীন তাঁর অভিজ্ঞতাও এমনই ছিল, তবে রাজ্যের তরফে এমন অনুপস্থিতি আরও হতাশাজনক।

১ অগস্ট থেকে কমল বাণিজ্যিক এলপিজির দাম

এই মামলার কেন্দ্রে রয়েছে কুলতলির এক নাবালিকা, যাকে ২০২১ সালে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও রিজেন্ট পার্ক থানার যৌথ অভিযানে পাচার ও মধুচক্রের কাজ থেকে উদ্ধার করা হয়। পকসো-সহ একাধিক ধারায় মামলা হয়, আর ২০১৭ সালের আইন অনুযায়ী মেয়েটিকে ₹৪ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় রাজ্য। যদিও, দীর্ঘদিন কেটে গেলেও আজও সেই টাকা পায়নি মেয়েটির পরিবার।

২০২2 সালে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লিগাল সার্ভিস অথরিটির কাছে চিঠি দিলেও কোনও অগ্রগতি হয়নি। এরপর জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয় হাইকোর্টে।

শুক্রবার মামলার শুনানিতে রাজ্যের কোনও আইনজীবী না থাকায় ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট, সঙ্গে সঙ্গে অন্য মামলায় উপস্থিত রাজ্যের এক আইনজীবীকে ডেকে এনে বিষয়টি জানানো হয়। বিচারপতিরা নির্দেশ দেন, অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র এবং নির্দেশ রাজ্যের আইনজীবীর হাতে তুলে দিতে হবে এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে।

হাজির নন রাজ্যের প্রধান আইনজীবী, ছাত্র সংসদ মামলায় !

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে, হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে কড়া নির্দেশ দেয় যে, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই নাবালিকাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে আদেশ কার্যকর না হলে, পরবর্তী শুনানিতে আদালত আরও কঠোর অবস্থান নিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন বিচারপতিরা।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনমনে প্রশ্ন উঠছে—নাবালিকা পাচার, যৌন নির্যাতনের মতো সংবেদনশীল মামলায় যখন ক্ষতিপূরণ পর্যন্ত এত দেরিতে দেওয়া হয়, তখন সরকার আদৌ কতটা দায়বদ্ধ?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর