ব্যুরো নিউজ ১৫ জুলাই ২০২৫ : কেরালার নার্স নিমিশা প্রিয়ার জন্য বড় স্বস্তির খবর। আগামী ১৬ই জুলাই তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ভারত সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইয়েমেনের কর্তৃপক্ষ সেই মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করেছে। মঙ্গলবার সরকারি সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এর ফলে প্রিয়ার পরিবার ভুক্তভোগীর পরিবারের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আরও কিছুটা সময় পাবে।
ভারতের নিরন্তর কূটনৈতিক উদ্যোগ
এএনআই সূত্রে জানা গেছে, “ভারত সরকার প্রথম থেকেই এই মামলায় সম্ভাব্য সব রকম সহায়তা দিয়ে আসছে। সম্প্রতি নিমিশা প্রিয়ার পরিবারকে অন্য পক্ষের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্য আরও সময় পেতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালিয়েছে।” সূত্রগুলি আরও যোগ করেছে, “সংবেদনশীলতা থাকা সত্ত্বেও, ভারতীয় কর্মকর্তারা স্থানীয় জেল কর্তৃপক্ষ এবং প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে চলেছেন, যার ফলে এই স্থগিতাদেশ সুরক্ষিত করা সম্ভব হয়েছে।”
Kerala Nurse : হুথি জঙ্গি নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনে কেরালার নার্সের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা !
মামলার প্রেক্ষাপট ও সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ
একজন ইয়েমেনি নাগরিককে হত্যা করার অভিযোগে নিমিশা প্রিয়া দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার কথা ছিল বুধবার। এরপরই তাঁর পরিবার ভারত সরকারের হস্তক্ষেপ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির সময়, কেন্দ্র জানিয়েছিল যে ভারতের ইয়েমেনের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় তারা সরাসরি খুব বেশি কিছু করতে পারছে না। তবে, মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার জন্য দেশের একজন প্রভাবশালী শেখের কাছে তারা ব্যক্তিগতভাবে পৌঁছেছিল।
‘দিয়া’ (রক্তমূল্য) প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমার সুযোগ
মৃত্যুদণ্ড স্থগিত হওয়ার ফলে প্রিয়ার পরিবার ‘দিয়া’ – অর্থাৎ রক্তমূল্য – প্রদানের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে ক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্য আরও সময় পাবে। হুথি-নিয়ন্ত্রিত ইয়েমেনে শরিয়া আইন অনুযায়ী, ভুক্তভোগীর পরিবার রক্তমূল্যের বিনিময়ে দোষীকে ক্ষমা করতে পারে।
এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যখন একদিন আগেই কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল যে ইয়েমেনের সঙ্গে ভারতের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকায় তারা খুব বেশি কিছু করতে পারছে না। তবে, কেন্দ্র এও জানিয়েছিল যে, তারা ব্যক্তিগতভাবে দেশের এক প্রভাবশালী শেখের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত করার চেষ্টা করছে। নিমিশা প্রিয়ার জীবন বাঁচাতে ভারত সরকারের এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা কতটা সফল হয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।