ব্যুরো নিউজ ১৫ জুলাই ২০২৫ : রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে নতুন আশার আলো। বেসরকারি সংস্থা টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেডের হুগলির উত্তরপাড়ার ইউনিট সম্প্রসারণের জন্য আরও ৪০ একর জমি বরাদ্দ করল রাজ্য সরকার। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি অনুমোদিত হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এই পদক্ষেপের ফলে রাজ্যে রেল কোচ নির্মাণে নতুন গতি আসবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
৯০ বছরের জন্য ১২৬ কোটি টাকায় জমি লিজ
জানা গেছে, হুগলির উত্তরপাড়ার কোত্রং ও ভদ্রেশ্বর মৌজায় অবস্থিত টিটাগড় রেল সিস্টেমস লিমিটেডের বর্তমানে ৩৪ একর জমিতে ইউনিটটি রয়েছে। এর পাশেই ১২৬ কোটি টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত ৪০ একর জমি ৯৯ বছরের জন্য লিজে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এই জমি হস্তান্তরের ফলে টিটাগড় রেল সিস্টেমস তাদের উৎপাদন ক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে পারবে। বর্তমানে তাদের বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ৩০০ রেল কোচ, যা ২০২৮ সালের মধ্যে প্রায় ৮৫০-তে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এর জন্য কোম্পানি ওয়ারেন্ট ইস্যুর মাধ্যমে প্রোমোটার গ্রুপ থেকে আরও ২০০ কোটি টাকা সংগ্রহ করবে।
মমতার মন্তব্যে মাথায় হাত SSC-র চাকরিহারাদের: ‘ঘোষণা হল আমাদের মৃত্যু পরোয়ানা’
বন্দে ভারত ও মেট্রো কোচের ভবিষ্যৎ
বিভিন্ন সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, এই অতিরিক্ত জমিতে মেট্রো ও বন্দে ভারত প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। টিটাগড় রেল সিস্টেমস ভারতীয় রেলকে কোচ সরবরাহকারী একটি বেসরকারি সংস্থা। সম্প্রতি তারা বন্দে ভারত ট্রেনসেট নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি বড় চুক্তিও সই করেছে। এই নতুন জমি বরাদ্দের ফলে সেই প্রকল্পগুলির কাজ আরও দ্রুত এগোবে বলে আশা করা হচ্ছে। কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অতিরিক্ত জমিতে তারা মেট্রো ও বন্দে ভারত ট্রেনের জন্য অতিরিক্ত উৎপাদন পরিকাঠামো, টেস্টিং ও কমিশনিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা এবং একটি পর্যাপ্ত দৈর্ঘ্যের টেস্ট ট্র্যাক তৈরি করবে।
হিন্দ মোটরের বন্ধ এলাকা ও রাজনৈতিক বার্তা
বিশেষত, এই জমি হস্তান্তরের ঘটনাটি হুগলির হিন্দ মোটরের বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পাঞ্চলের কোনও ক্ষেত্রকে কাজে লাগানোর একটি প্রচেষ্টা বলে অনুমান করা হচ্ছে। রাজ্যের শিল্প বন্ধের ছবি যখন সমালোচিত, তখন এই ধরনের পদক্ষেপ রাজ্যের শিল্পদ্যোগের একটি ইতিবাচক চিত্র স্থাপন করার প্রচেষ্টা হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সরকার শিল্পের ক্ষেত্রে নিজেদের অগ্রগতি তুলে ধরতে চাইছে, আর এই জমি বরাদ্দকে সেই প্রচেষ্টারই একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কতটা সহায়ক হয় এবং রাজ্যের শিল্প প্রসারে কতটা প্রভাব ফেলে, তা দেখতে উৎসুক ওয়াকিবহাল মহল।