Bihar E Voting

ব্যুরো নিউজ ০২ জুলাই : গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সহজলভ্যতা আনতে বিহার রাজ্য এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে বিহার মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভোটদানের সুবিধা চালু করেছে, যা ভারতের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এই পাইলট প্রকল্পটি, যা ছয়টি নগর পঞ্চায়েত এবং পৌরসভা উপনির্বাচনে বাস্তবায়িত হয়েছে, বিশেষভাবে সেইসব ভোটারদের জন্য তৈরি করা হয়েছে যারা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছাতে সমস্যায় পড়েন, যেমন – বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, গর্ভবতী মহিলা এবং অভিবাসী শ্রমিকরা। এই পদক্ষেপটি আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে নেওয়া হয়েছে, যদিও এই সুবিধাটি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া যাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

ই-ভোটিংয়ের নিবন্ধন প্রক্রিয়া

বিহার রাজ্য নির্বাচন কমিশন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে ভোটদানের জন্য একটি ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া outlining করেছে:

  • অ্যাপ ডাউনলোড: প্রথমে e-SECBHR অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে (বর্তমানে শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের জন্য উপলব্ধ)।
  • মোবাইল নম্বর লিঙ্ক: ভোটার তালিকায় নিবন্ধিত আপনার মোবাইল নম্বর দিয়ে অ্যাপটি লিঙ্ক করতে হবে।
  • ভোটদান: একবার যাচাইকরণ সম্পন্ন হলে, আপনি নির্বাচন কমিশন দ্বারা নির্ধারিত দিনে e-SECBHR অ্যাপ অথবা বিহার নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ভোট দিতে পারবেন।Bihar ; ওয়াকফ আইন সংশোধন বিতর্কে তোষণবাদী কংগ্রেস-আরজেডি’কে জেডি(ইউ)র তীব্র আক্রমণ

জালিয়াতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা

ই-ভোটিং অ্যাপে জালিয়াতি প্রতিরোধের জন্য একাধিক কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে:

  • সীমিত লগইন: একটি মোবাইল নম্বর থেকে শুধুমাত্র দুজন নিবন্ধিত ভোটার লগইন করতে পারবেন।
  • ভোটার আইডি যাচাই: প্রতিটি ভোটারকে ভোটার আইডি নম্বর প্রবেশ করিয়ে যাচাই করা হবে।

অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা

এছাড়াও, আরও বেশ কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে:

  • ব্লকচেইন প্রযুক্তি: ভোটগুলি একটি সুরক্ষিত এবং অপরিবর্তনীয় সিস্টেমে রেকর্ড করার জন্য ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে।
  • ফেসিয়াল রিকগনিশন: লগইন এবং ভোটদানের সময় ভোটারদের পরিচয় যাচাইয়ের জন্য ফেসিয়াল রিকগনিশন এবং ম্যাচিং ফিচার ব্যবহার করা হবে।
  • ডিজিটাল স্ক্যানিং ও ওসিআর: ভোট গণনার নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে ডিজিটাল স্ক্যানিং এবং ওসিআর (অপটিক্যাল ক্যারেক্টার রিকগনিশন) সহায়তা করবে।
  • অডিট ট্রেলস: ইভিএম-এর ভিভিপ্যাট (Voter Verifiable Paper Audit Trail) এর মতো অডিট ট্রেল প্রতিটি প্রদত্ত ভোটকে ট্র্যাক এবং যাচাই করতে সাহায্য করবে।

ঐতিহাসিক অর্জন ও পরিসংখ্যান

রাজ্য নির্বাচন কমিশনার দীপক প্রসাদ জানিয়েছেন যে, এই ঐতিহাসিক উদ্যোগের ফলে বিহার দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনে মোবাইল ফোন-ভিত্তিক ই-ভোটিং চালু করেছে। সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই ভোটগ্রহণে ৪৮৯টি বুথ এবং ৫৩৮ জন প্রার্থী ছিলেন। মোট যোগ্য ভোটারের ৭০.২০ শতাংশ ই-ভোটিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন, যেখানে ৫৪.৬৩ শতাংশ ভোটার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
বিহার রাজ্য নির্বাচন কমিশন তাদের X (পূর্বে টুইটার) অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে জানিয়েছে, “আজ বিহার ইতিহাস তৈরি করেছে। পূর্ব চম্পারণ জেলার পাকরিদয়াল নিবাসী বিভা কুমারী স্থানীয় সংস্থা নির্বাচনে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভোটদানকারী দেশের প্রথম ব্যক্তি হয়েছেন।” তারা আরও যোগ করেছেন, এটি “সুবিধা, নিরাপত্তা এবং ক্ষমতায়নমূলক অংশগ্রহণের প্রতীক।”

আলিপুরদুয়ারের জনসভায় মোদীর বার্তা : ‘নির্মম সরকার’কে উপড়ে ফেলে ‘অপারেশন পশ্চিমবঙ্গ’র ডাক!

ভবিষ্যতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

এই ধরনের অভিনব পদক্ষেপ ভবিষ্যতে সমস্ত নির্বাচনে ব্যবহৃত হলে – রাজনৈতিক ক্ষমতালোভী দলগুলির দ্বারা নির্বাচনকে সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি দিয়ে প্রভাবিত করা আর সম্ভব হবে না। স্বচ্ছ জনমত ভোটবাক্সে রূপান্তরিত হবে এবং ন্যায্য সরকার প্রাপ্ত হবে। তবে আধুনিক ব্যবস্থাপনায় যে দূরভিসন্ধিকারীরা তাদের দুষ্কর্ম চালিয়ে যাওয়ার পথ করবে না তাও নয়। সাইবার ক্রাইমের মাধ্যমে হ্যাকিং, জালিয়াতি বা অর্থ বা হুমকির বিনিময়ে বিপুল সংখ্যক ভোটদাতার মোবাইল একত্রিত করে, নির্বাচনকে প্রভাবিত করার প্রচেষ্টা চলবে। তাই প্রশাসনকে এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ হয়ে কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে এবং উন্নত মানের আইন প্রয়োগকারী ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর