ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৪ ফ্রেব্রুয়ারিঃনগরায়ন আর পরিকাঠামো নির্মাণ করতে জঙ্গলে নজর বাড়ছে রাষ্ট্রের। নিরিবিলি শান্তিতে ঘটছে ব্যাঘাত। কমছে খাদ্য। বেঁচে থাকার তাড়ণায়, তাই যখনতখন জঙ্গলের আস্তানা ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে হাতির দল। বিশেষত পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম আর দুই মেদিনীপুরের জঙ্গলমহলে, গত কয়েকবছরে হাতির হানায় প্রাণহানি আর ফসল নষ্টের ঘটনা যেমন বেড়েছে, তেমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বাসিন্দাদে আতঙ্ক।
উল্টোদিকে চোরাশিকারির গুলি আর মধ্য দিয়ে যাওয়া চলন্ত ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর ঘটনাও কম ঘটছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বনদফতরের নজরদারি আর সরকারি পরিকল্পনার অভাবকে, এই ধরনের ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী করেন, জঙ্গলমহলের বাসিন্দারা। হাতির থানায় মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি নথিভক্তির নিয়মকানুন সম্পর্কে প্রান্তিক মানুষদের সচেতন করার সরকারি উদ্যোগ, যথেষ্ট কম বলেও অভিযোগ করে থাকেন পরিবেশবিদ এবং বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা। ফলে হাতির ভাঙনের মৃত্যুর ঘটনায় সরকারি আর্থিক সাহায্য অনেকক্ষেত্রেই মেলে না বলে অভিযোগ। বাড়তে থাকা এই যাবতীয় অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে, এবার হাতির হানা নিয়ন্ত্রণ করতে অভিনব এক পরিকল্পনা নিল, রাজ্য বনদফতরের বাঁকুড়া জেলা ডিভিশন। খাবারের খোঁজে বুনোহাতির দল যাতে যখন তখন লোকালয়ে হাজির হতে না পারে, তার জন্য এবার থেকে জঙ্গলের মধ্যেই তাদের জন্য ভুরিভোজের ব্যবস্থা শুরু হল। আর সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে বাঁকুড়ার বরজোড়ার ডাকাইসিনীর জঙ্গলে পিকআপ ভ্যান বোঝাই করে বাঁধাকপি পৌঁছে দিল, জেলার বনদফতর।
প্রসঙ্গত, গতবছরই বাঁকুড়ায় হাতির হানায় মৃত্যু হয়েছিল তুলসী বটব্যাল ও মঙ্গল বাউরি নামে দুই ব্যক্তির। বনদফতরসূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত বড়জোড়া রেঞ্জে মোট হাতির সংখ্যা ১২ টি এবং সাহারজোড়া মৌজায় মোট হাতির সংখ্যা ৫২ টি।
নতুন করে শুরু হওয়া এই সরকারি ‘হাতি-ভোজ’ প্রসঙ্গে বেলিয়াতোড় রেঞ্জের আধিকারিক মহিবুল ইসলাম জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত হাতির দলগুলিকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে পর্যাপ্ত খাবারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে পরবর্তীকালে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নির্ভর করছে উচ্চপদস্থ কর্তাদের সিদ্ধান্তের ওপর। বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া, বেলিয়াতোড়, গঙ্গাজলঘাটি এলাকায় মাঝেমধ্যেই প্রবেশ করে এই হাতির দল। আর তাদের আটকাতেই একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয় বনদফতরকে। পাশাপাশি হাতির কোনওরকম ক্ষতি যাতে না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখবে বনদফতর।