ব্যুরো নিউজ,২১ এপ্রিলঃ সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। রাষ্ট্রপতি ও রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে আদালতের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিজেপি নেতাদের একাংশ সরব হয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, আদালত এখন প্রশাসনিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, এমন অভিযোগে তাদের হাতে বাঁধা পড়ছে বিচারকার্যও।
শান্তির মুখোশে লুকানো উত্তেজনার আগুন: কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী?
বিতর্কিত পর্যবেক্ষণ ও প্রতিক্রিয়া:
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে ওয়াকফ আইনকে কেন্দ্র করে কিছু জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটে। সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির আবেদন করে এক আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বিচারপতি বিআর গবইয়ের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি চলাকালীন বিচারপতি বলেন, “আপনারা কি চান আমরা রাষ্ট্রপতিকে লিখিত নির্দেশ দিই?” তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপের অভিযোগ ইতিমধ্যেই উঠছে, তাই এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।”
এই মন্তব্যের পেছনে যে বিজেপি নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যই প্রভাব ফেলেছে, তা অনেকেরই ধারণা। কারণ, এর আগেই তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে উদ্দেশ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, কোনও বিল রাজ্যপাল অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না। সেই সঙ্গে রাষ্ট্রপতিকেও তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেয় আদালত। এই পর্যবেক্ষণের পরেই বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে কড়া ভাষায় বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট নিজেদের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যদি সব বিষয়ের সমাধান আদালতেই হয়, তবে সংসদ বন্ধ করে দেওয়া হোক।” তিনি আরও বলেন, “আপনারা যখন রাম মন্দির নিয়ে প্রমাণ চান, তখন মসজিদের ক্ষেত্রে বলেন কাগজ দেখানো সম্ভব নয়—এসব দেশকে ধর্মীয় সংঘর্ষের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”
বিজেপি নেতা দীনেশ শর্মা এবং উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ও আদালতের মন্তব্য নিয়ে আপত্তি তোলেন। তাঁদের মতে, রাষ্ট্রপতিকে নির্দেশ দেওয়া আদালতের এখতিয়ারে পড়ে না। যদিও বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব এই মন্তব্যগুলিকে ‘ব্যক্তিগত মত’ বলে দাবি করেছে। বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা জানান, “দল এই ধরনের বক্তব্য সমর্থন করে না।” রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ এবং তার জবাবে বিজেপি নেতাদের প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট, আদালত ও রাজনৈতিক মহলের মধ্যে প্রশাসনিক ভারসাম্য রক্ষায় নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। সামনে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি গবইয়ের দায়িত্ব গ্রহণের আগে এই আলোচনাই এখন দেশের রাজনৈতিক ও বিচারাঙ্গনের অন্যতম কেন্দ্রে।