ব্যুরো নিউজ, ২৮ ফেব্রুয়ারি :১৯৮২ সালের এশিয়ান গেমসে পাকিস্তান ভারতকে ৭-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে ছিল। এই ম্যাচটি অনেক ভারতীয় হকি খেলোয়াড়ের কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছিল। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পাকিস্তান হকির ক্ষেত্রে আধিপত্য বিস্তার করেছিল এবং নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত তাদের নেতৃত্ব ছিল। তবে গত ন’বছরে ভারত-পাকিস্তান হকি খেলার ছবি বদলে গেছে। ২০১৬ সাল থেকে ভারত পাকিস্তানকে একবারও হারতে দেয়নি। একই পরিস্থিতি দেখা গেছে পাকিস্তানের ক্রিকেটেও। তবে প্রশ্ন উঠে আসছে, কেন এই দুটি খেলা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে?
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর পতন, গুজরাতের কাছে পরপর তৃতীয় হার!
হকির উত্থান ও পতন
স্বাধীনতার পর পাকিস্তান হকি দলে বেশিরভাগ খেলোয়াড় পাকিস্তানকেই বেছে নেন। এই সময় থেকে পাকিস্তান প্রায় ৪০ বছর ধরে হকিতে আধিপত্য দেখায়। তারা তিনটি অলিম্পিক সোনা সহ মোট আটটি পদক জেতে এবং সবচেয়ে বেশি চারবার বিশ্বকাপ জেতে। তবে ১৯৯০ সালের পর থেকে পাকিস্তানের আর কোনো বড় কৃতিত্ব নেই। এই সময়েই পাকিস্তানের হকির পতন শুরু হয়। ১৯৮৬ সালে বিশ্ব হকি ফেডারেশন অ্যাস্ট্রোটার্ফে হকি খেলার নিয়ম চালু করে, যা পাকিস্তান এবং ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও ভারত ধীরে ধীরে এই পরিবর্তন মেনে নিয়ে নতুনভাবে সাফল্য অর্জন করেছে, পাকিস্তান একই অবস্থায় থেকে যায়। তাদের আর্থিক সমস্যাও এখানে বড় কারণ। পাকিস্তানের সরকারের কাছ থেকে হকির জন্য কোনো বিশেষ সাহায্য না পাওয়ার ফলে, দেশের ঘরোয়া হকির মান কমে গেছে।
পাকিস্তানের ক্রিকেটেও পতন
১৯৯২ সালে ইমরান খানের নেতৃত্বে পাকিস্তান বিশ্বকাপ জিতলেও, এরপর থেকে পাকিস্তানের ক্রিকেটে পতন শুরু হয়। ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছাড়া পাকিস্তান আর কোনো বড় আইসিসি ট্রফি জিততে পারেনি। ২০২৩ সালের এক দিনের বিশ্বকাপে তারা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের স্থিরতা না থাকার কারণে খেলোয়াড়দের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এছাড়া, পাকিস্তান ক্রিকেটের পেছনে আর্থিক অবকাঠামোও খুবই দুর্বল। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের বিপরীতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের আয়ের খুবই সীমিত উৎস রয়েছে।
বাম শ্রমিক সংগঠনের মিছিলে পরিষেবা ব্যাহত, অ্যাপ-ক্যাব ও বাইক-ট্যাক্সি চালকদের আন্দোলন
কেন পাকিস্তানের পতন?
পাকিস্তানের হকি ও ক্রিকেটের পতনের প্রধান কারণ হলো খেলোয়াড়দের প্রতি আগ্রহের অভাব এবং সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সাহায্য না পাওয়া। আর্থিক সংকটের কারণে বিদেশি কোচ নিয়োগে অক্ষম পাকিস্তান, যার ফলে খেলোয়াড়দের উন্নতি থমকে গেছে। দেশের হকি ও ক্রিকেটের অবস্থা শোচনীয় হলেও, সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর কোনো লক্ষণ নেই।এখন, পাকিস্তান হকিতে এক সময় যে দলের আধিপত্য ছিল, বর্তমানে তারা ভারতের কাছে নিয়মিত হারছে। একইভাবে ক্রিকেটেও তাদের পুরনো সাফল্য হারিয়ে গেছে। ভবিষ্যতে যদি পাকিস্তান এই সমস্যাগুলোর সমাধান না করে, তাহলে তাদের জন্য সাফল্যের আশা আরো দুরূহ হবে।