ব্যুরো নিউজ , ৬ ফেব্রুয়ারি :আজকাল অফিসে দীর্ঘসময় ধরে চেয়ার-টেবিলে বসে কাজ করতে হয়। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে কাজ করার সময় প্রায়ই ঘাড় নিচু হয়ে যায়। পিঠ এবং কোমর ঠিক রেখে বসতে বললেও বেশিরভাগ সময়ই তা মেনে চলা সম্ভব হয় না। আবার অনেক সময় বাড়িতে বসে থাকার অভ্যাসও শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। পিঠ এবং কোমরে ব্যথা হলে, সাধারণত মানুষ বিছানায় শুয়ে বিশ্রাম নেন, যাতে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। তবে, এমন বিশ্রাম সাময়িক। এতে দীর্ঘমেয়াদী ব্যথার সমস্যার সমাধান হয় না।চিকিৎসকরা বলেন, দীর্ঘদিনের ভুল ভঙ্গিতে বসে থাকার ফলে মেরুদণ্ড সোজা থাকে না। এর ফলে কুঁজো পিঠ এবং বক্র মেরুদণ্ড হয়ে যায়। যদি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান, তবে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে। যোগ প্রশিক্ষকেরা বলেন, কিছু সহজ আসনই এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে। এর মধ্যে অর্ধচন্দ্রাসন (Half Moon Pose) একটি অন্যতম কার্যকরী আসন।
কোমর, হাঁটু এবং পিঠের ব্যথা কমাতে করুন এই কার্যকর আসন। ব্যাথা থেকে মুক্তি পাবেন তাড়াতাড়ি
কোন আসন?
অর্ধচন্দ্রাসন আসনের নাম সংস্কৃত ‘অর্ধ’ (অর্ধেক) এবং ‘চন্দ্র’ (চাঁদ) থেকে এসেছে। এই আসন করার সময়ে শরীরের ভঙ্গি এমন হয়, যেন তা একটি আধখাওয়া চাঁদের মতো দেখায়। এই আসনটি নিয়মিত অভ্যাস করলে কুঁজো পিঠ এবং বক্র মেরুদণ্ড সোজা হতে সাহায্য করবে এবং শরীরের ভারসাম্য বৃদ্ধি করবে।
অর্ধচন্দ্রাসন কিভাবে করবেন?
- প্রথমে একটি যোগ ম্যাটে সোজা দাঁড়িয়ে পড়ুন। পায়ের মাঝে খুব বেশি ব্যবধান রাখার প্রয়োজন নেই, এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখতে হবে।
- এবার শ্বাস নিয়ে কোমর থেকে উপরের দেহটিকে বাঁ দিকে ঝুঁকিয়ে দিন। এমনভাবে শরীরটিকে বাঁ দিকে টানুন যাতে বাঁ হাতটি মাটি স্পর্শ করতে পারে।
- যখন বাঁ হাত মাটি স্পর্শ করবে, তখন ডান পা মাটির ওপর থেকে ধীরে ধীরে উপরে তোলার চেষ্টা করুন। ডান পা যত উপরে উঠবে, ততক্ষণ পর্যন্ত বাঁ হাত মাটি স্পর্শ করতে থাকবে।
- একবার ডান পা উঠলে, ডান হাতটি উপরে প্রসারিত করুন, যেন এটি বাঁ হাতের সঙ্গে এক সরলরেখায় চলে আসে।
- এই অবস্থানে ১০ সেকেন্ড ধরে থাকুন। কিছুদিন পর, সময়টি ২০ সেকেন্ড পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে।
- এবার আসন থেকে বেরিয়ে কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে অন্য পায়ে এই আসনটি অভ্যাস করুন।
ফ্ল্যাট ফুটের(সমতল পা) সমস্যায় ভুগছেন? এই সহজ আসনেই রয়েছে সমাধানের
কেন এই আসন করবেন?
অর্ধচন্দ্রাসন শরীরের পেশি এবং মেরুদণ্ডের উন্নতি ঘটায়। এটি কোমর, বুক, কাঁধ, নিতম্বের পেশি স্ট্রেচ করতে সাহায্য করে এবং স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়া, ঊরু, গোড়ালি এবং পায়ের পাতার শক্তি বৃদ্ধি পায়। এটি শরীরের ভারসাম্য এবং নমনীয়তা বাড়াতে অত্যন্ত কার্যকরী।
সতর্কতা:
- যদি হার্নিয়া বা আলসারের সমস্যা থাকে, তাহলে এই আসন করবেন না।
- অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় এই আসন অভ্যাস করা একেবারেই নিষিদ্ধ।
এই আসনটি নিয়মিত চর্চা করলে কুঁজো পিঠের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এবং মেরুদণ্ডের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।