মমতার কোপে কি এবার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা?

ব্যুরো নিউজ,৫ ফেব্রুয়ারি: গত নভেম্বরের শেষে তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছিলেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কোনো শিথিলতা দেখানো হবে না। সে সময় দলের জন্য শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তবে সম্প্রতি দলের ভেতর কয়েকটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও, দলের আরও কয়েকজন নেতার মন্তব্য নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।যে তিন নেতার বিরুদ্ধে তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কমিটি ব্যবস্থা নিয়েছে, তারা হলেন—মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর, উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরের বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী এবং কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র।

প্রয়াগরাজ কুম্ভমেলায় আবার দুর্ঘটনা, বেলুন বিস্ফোরণে ছয় পুণ্যার্থী আহত!

শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যবস্থা

এসব নেতার মন্তব্য পার্টির শৃঙ্খলার পরিপন্থী হওয়ায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। তবে, একই সময়কালে দলের তিন ‘খ্যাতনামী’ নেতা-সাংসদরা যেসব মন্তব্য করেছেন, তাতে দলের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি। এই তালিকায় আছেন—পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী, হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা।হুমায়ুন কবীর সম্প্রতি রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসন নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন এবং পরামর্শ দিয়েছিলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপমুখ্যমন্ত্রী করা হোক। দলের পক্ষ থেকে তাকে শো-কজ করা হলেও, তার বক্তব্যে শৃঙ্খলার কোনো কড়াকড়ি ছিল না।

দুপুর তিনটে পর্যন্ত দিল্লিতে ভোটদান কত জানুন

নারায়ণ গোস্বামী অশোকনগরে একটি অনুষ্ঠানে মঞ্চে ওঠে কিছু অসংলগ্ন কথা বলেন, যা দলকে বিব্রত করে। দল তাকে শো-কজ করে এবং লিখিত জবাব দিতে বললে, তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন।মদন মিত্র আইপ্যাককে ‘তোলাবাজি’ করার অভিযোগ করেছিলেন। তবে পরে তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করে একটি চিঠি দেন। যদিও তার চিঠির ভাষা থেকে দলের চাপ বোঝা যায়, কারণ প্রথম চিঠিতে তিনি জ্বর ও অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তী চিঠিতে তা বাদ দিয়ে তিনি সরাসরি ক্ষমা চান।

এরপর, সোহম চক্রবর্তী, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শত্রুঘ্ন সিনহার মন্তব্যগুলো দলের মধ্যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সোহম চক্রবর্তী আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলায় মন্তব্য করেছিলেন, তিনি মনে করেন, একা সঞ্জয় রায় এই কাজ করেননি। যা দলের পক্ষ থেকে ‘স্পর্শকাতর’ বলে মনে করা হচ্ছে। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় কুম্ভমেলায় স্নান করার পর যোগী আদিত্যনাথের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশংসা করেছিলেন, যা দলের শীর্ষ নেতাদের মন্তব্যের পরিপন্থী ছিল। শত্রুঘ্ন সিনহা সম্প্রতি বলেছিলেন, গোটা দেশে আমিষ খাওয়া নিষিদ্ধ করা উচিত। তার এই বক্তব্য দলের বৈচিত্র্যের কথা বলার বিপরীত ছিল।

তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মহাকুম্ভ স্নানের অভিজ্ঞতাঃ কি শেয়ার করলেন তিনি?

এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন কিছু নেতা-সাংসদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, বিশেষ করে যখন তাদের মন্তব্য দলের শৃঙ্খলার পরিপন্থী। দলের অনেক প্রথম সারির নেতা মনে করেন, এই ‘খ্যাতনামী’ নেতাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে, দলের অন্দরে বার্তা যাবে যে, অভিনেতা-নেতাদের জন্য বিশেষ সুবিধা রয়েছে।এক নেতা বলেছেন, “অবশ্যই, দলের শীর্ষ নেত্রী মমতাদি মুখ্যমন্ত্রী, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, অভিনেতা বা নেতা যাঁরা রাজনীতি করছেন, তাদের জন্য কোনো ‘ছাড়’ থাকবে।” দলের তরফ থেকে এই বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, তা দলের শৃঙ্খলার প্রতি অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর