ব্যুরো নিউজ ২২ অক্টোবর : রামভদ্রন সুন্দরম একটি অ্যাপ ক্যাবে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন, এমন সময় চালকের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে চমকে ওঠেন। চালকটি, উথায়া কুমার, শুধু ক্যাব চালক নন, বরং তিনি একজন অভিজ্ঞ বিজ্ঞানী। তামিলনাড়ুর কন্যাকুমারী শহরে জন্ম নেওয়া উথায়া লেখাপড়ায় মেধাবী ছিলেন। তার স্বপ্ন ছিল মহাকাশ গবেষণায় যোগ দেওয়ার। পিএইচডি সম্পন্ন করার পর তিনি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় (ইসরো) যোগ দেন, যেখানে মহাকাশ জ্বালানি সংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করেন।
কখনও কাউকে খালি হাতে ফেরান না নৈহাটির ‘বড়মা’
উথায়ার সংস্থা সাধারণ ট্যাক্সি পরিষেবা নয়
তবে, সাত বছর পর তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দেন এবং পরিসংখ্যান তত্ত্বে এম ফিল করার পরে ২০১৭ সালে ক্যাব ব্যবসা শুরু করেন। শুরুতে কয়েকটি গাড়ি নিয়ে যাত্রী পরিষেবা শুরু করেছিলেন উথায়া। আজ তার ক্যাব সংস্থার বার্ষিক আয় ২ কোটি টাকা। তার সংস্থার নামটি তার বাবা-মায়ের নামের আদ্যক্ষর থেকে তৈরি হয়েছে এবং বর্তমানে ৩৭টি গাড়ি রয়েছে।কিন্তু উথায়ার পথচলা সহজ ছিল না। নিশ্চিত আয়ের চাকরি ছেড়ে ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া ছিল এক বিশাল ঝুঁকি। যদিও কয়েকজন বন্ধু তাকে সাহায্য করেছিলেন, কিন্তু শুরুতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। একসময়, তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপক হিসেবেও যোগদান করেছিলেন, কিন্তু সে চাকরিও ছেড়ে দেন।লিঙ্কডইনে একটি আলোচনার মাধ্যমে উথায়ার জীবনের উত্থান-পতনের কাহিনি ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসার শুরুতে তার মূল লক্ষ্য ছিল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলির কর্মীদের যাতায়াতের জন্য দ্রুত পরিষেবা দেওয়া। তিনি প্রতিদিন তিনবার কর্মীদের নিয়ে আসতেন এবং এই প্রতিটি ট্রিপ থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকা আয় করতেন।উথায়া মনে করেন, তার ক্যাব সংস্থা সাধারণ ট্যাক্সি পরিষেবা নয়। তিনি চালকদের শুধুমাত্র চালক হিসেবে নয়, বরং সংস্থার অংশীদার হিসেবে মনে করেন। তাই, তিনি প্রতিটি চালকের হাতে সংস্থার লাভের ৭০ শতাংশ তুলে দেন, যা তাদের কাছে অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে।
দিল্লিতে পেঁয়াজের অভাব কাটাতে বিশেষ উদ্যোগ প্রধানমন্ত্রীর
ব্যবসায়িক সাফল্যের সঙ্গে সঙ্গে, উথায়া নিজের সাদামাঠা জীবনযাত্রা বজায় রেখেছেন। তিনি মাসে দেড় লক্ষ টাকা ব্যক্তিগত ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করেছেন। সংস্থার আয় থেকে সঞ্চয় করে চালকদের মাথার উপর ছাদ এবং তাদের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার ব্যয়ভার পূরণ করছেন।এছাড়া, উথায়া নিজেও গাড়ি চালান এবং দীর্ঘ দূরত্ব পেরিয়ে যাত্রীদের সঙ্গে কলকাতাতেও যান। কোভিডের সময় লকডাউনের মধ্যে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এই পদ্ধতি খুবই কার্যকরী ছিল। তার এই নিরলস চেষ্টা ও নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে উথায়া কুমার সত্যিই এক অনন্য যাত্রার নজির স্থাপন করেছেন।