ব্যুরো নিউজ,১৫ অক্টোবর:বয়স মাত্র ১৫ বছর। বাবার পেশা ভ্যান চালানো, মা এবং বড় দিদি পরিচারিকার কাজ করেন। তৃতীয় শ্রেণির পর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু এই ছেলেটি ফুটপাতে রাত কাটিয়েও যে অসাধারণ শিল্প সৃষ্টি করেছে, তা দেখে অবাক হচ্ছেন পথচলতি মানুষ। তার তৈরি দুর্গা প্রতিমা শহরের ফুটপাতে, মণ্ডপের বাইরে, একেবারেই অন্য একটি ‘পুজোর কার্নিভাল’-এর উদাহরণ।
রেড রোডের পুজো কার্নিভালঃ যানজটের আশঙ্কা
হঠাৎ চোখে পড়ে ভিড়
পুজোর এক দুপুরে শোভাবাজার রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে জগৎ মুখার্জি পার্কের দিকে যেতে গিয়ে হঠাৎ চোখে পড়ে ভিড়। পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে এসে হাজির। কাছাকাছি গিয়ে দেখা গেল, একটি পুরনো বাড়ির জানালার দিকে মানুষের ভিড়। জানালায় ছোট একটি দুর্গা প্রতিমা এবং আশপাশে আরও ছোট দেবতা দেবীদের চিত্র। প্রতিমার সামনে মাটির চাকতি, আর ষাঁড়ের মাথা।এই শিল্পীর নাম কিশোর সর্দার।সে ৬১, যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ের ফুটপাতে বসবাস করেন। সেখানে বসেই কল্পনা থেকে প্রতিমা তৈরির কাজ করেন। কিশোরের বাবা কৃষ্ণ সর্দার জানান, কিশোরকে আঁকার বিষয়ে কোনও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। কিন্তু তার প্রতিভা অসাধারণ। কিশোরের মা মায়া বলেন, “ছেলেটা কীভাবে এত কিছু করে জানি না। আমাদের সংসার চলে বাবার ভ্যানের টাকায়। কিন্তু ছেলের পুজোর জন্য ঠাকুর বানানোর ইচ্ছায় আমি বাধা দিই না।”
আরজি কর হাসপাতালে সাসপেন্ড হওয়া ডাক্তারদের আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত
কিশোরের কথা অনুযায়ী, সে দুর্গা প্রতিমা তৈরির জন্য গঙ্গা থেকে মাটি নিয়ে আসে। চতুর্থীর দিন প্রতিমা তৈরি শেষ হয়। কিশোরের দিদি লক্ষ্মীও তার কাজে সাহায্য করেন। কিশোর জানায়, “ভিড়ের জন্য ঠাকুর রাখতে পারছিলাম না। অনেকেই কিনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি বিক্রি করিনি।” অবশেষে কিশোর বলে, “আমি আঁকা শিখতে চাই। ঠাকুর বানাতে চাই। একদিন দুর্গাপুজোর শিল্পী হব।” তার এই স্বপ্নই ফুটপাতে তৈরি করা প্রতিমার জাদু। কিশোরের প্রতিভা, দারিদ্র্যের মধ্যেও সাহসিকতা, এ যেন নতুন এক প্রেরণা।