ব্যুরো নিউজ ৫ সেপ্টেম্বর: পুজোর দিনগুলোতে হারানো সময় যেন বারবার হাতছানি দেয়। মনে পড়ে কত সুন্দর স্মৃতি! কলকাতার পুজো আর শহরতলির পুজোর চিত্র তো একদম আলাদা। আমাদের কাছে পুজো মানেই ছিল ঠাকুমার হাতে তৈরি কুচো নিমকি। সেই সঙ্গে নারকেল নাড়ু, ছাপা সন্দেশ ও গজা। তবে আমার সবচেয়ে প্রিয় ছিল সেই নিমকি, যা মুখে দেওয়ার পর জিভের সঙ্গে অসাধারণ এক সম্পর্ক তৈরি করত। সেই নিমকির স্বাদ যেন চেতনায় ছড়িয়ে যেত এক আশ্চর্য সুখ।
পুজোয় আপনার ডায়েটে রাখুন এই খাবার মজবুত হাড় ও চকচকে ত্বক পেতে!
বাড়ির তৈরি খারাব দিয়ে বিজয়া পালন
বিজয়ার দিনে আমরা টালিগঞ্জে বড়জেঠুর বাড়িতে যেতাম। সেখানে ঠাকুমা থাকতেন এবং বাবা-মা, কাকা-কাকীরা মিলেমিশে বিজয়া উদযাপন করতেন। ঠাকুমা সকলের পাতে তুলে দিতেন নিমকি, গজা, সন্দেশ এবং নাড়ু। সে এক রঙিন দিন! পুজো শেষে বিষণ্ণতা ভুলে যেতাম ভাইবোনদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে। মনে পড়ে, আমি আর আমার খুড়তুতো ভাই বিল্টু একে অপরের পাতায় থেকে নিমকি তুলে নেওয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতাম। পরে সেই নিয়ে ঝগড়া হত, কিন্তু তাতেও মজা কম হত না।বাড়ির বড়রা এ সব নিয়ে ভাবতেন না। উৎসবের দিনগুলো ছিল শাসনবিহীন এক আনন্দময় সময়। বিজয়া দশমীর দিন এবং তার পরের দিনগুলোতে অতিথিরা আসতেন। তখন ফাস্ট ফুডের প্রয়োজন পড়ত না। বাড়িতে তৈরি নাড়ু ও সন্দেশেই সকলের মুখে হাসি ফোটাত। তবে আমি আলাদা করে কুচো নিমকি রাখতাম। কেউ সেই কৌটোর দিকে আসলেই চেঁচিয়ে বলতাম, “এটা আমার!” ছোটকাকা মজা করে সেই কৌটো লুকিয়ে রাখত।
দুর্গাপুজোর আনন্দঃ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের টানা ১৬ দিনের ছুটি
এরপর শুরু হত খেলা এবং হৈ-হুল্লোড়।বড় হতে হতে সব কিছুই বদলে গেছে। মোমো, পিৎজা, এগরোলের দোকানগুলো এসে স্থান দখল করেছে। কিন্তু হারানো কিছু স্মৃতি কি সত্যিই হারায়? আজও পুজো এলে পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে। বিজয়া এলেই নিমকির কথা, হইহই এবং রাতের হিমমাখা মুহূর্তগুলো মনে আসে।