moon

ব্যুরো নিউজ, ১১ সেপ্টেম্বর:চাঁদের মাটি ব্যবহার করে জল তৈরি করা সম্ভব হয়েছে, যা প্রথমে শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, কিন্তু এটাই ঘটিয়েছে চীনের গবেষকরা। চীনের বিজ্ঞানীরা এই কাণ্ডটি সফলভাবে গবেষণাগারে সম্পন্ন করেছেন।২০২০ সালে চীনের Chang’e-5 চন্দ্রমিশন পরিচালিত হয়েছিল, যা চাঁদের মাটি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়েছিল। এই মিশনটি সফলভাবে চাঁদের মাটি পৃথিবীতে নিয়ে আসে এবং এরপর চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্সের বিজ্ঞানীরা সেই মাটি পরীক্ষা করে দেখতে শুরু করেন। গবেষণার ফলস্বরূপ, তারা মাটির মধ্যে উপস্থিত মৌলিক উপাদানগুলি ব্যবহার করে জল তৈরির একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করতে সক্ষম হন।

পরিচালক স্বামীর জন্মদিন নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী শ্রুতি দাস

চীনের বিজ্ঞানীরা নতুন দিগন্ত খুললেন

এই বিশেষ ধরনের গবেষণার মাধ্যমে, চাঁদের মাটি থেকে জল উৎপাদনের প্রযুক্তি নিয়ে চীনের বিজ্ঞানীরা নতুন দিগন্ত খুলেছেন। এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে চাঁদে দীর্ঘমেয়াদী মিশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে ।গবেষণাগারে জল তৈরির প্রক্রিয়া সফল হলে, এটি কেবল বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি নয়, বরং মহাকাশ অভিযানের জন্য একটি বড় সাফল্যও বলে গণ্য করা হয়। এই প্রযুক্তি মহাকাশে ভবিষ্যতের অভিযানে সহায়ক হতে পারে এবং এটি চাঁদে বা অন্যান্য গ্রহে সম্ভাব্য বসবাসের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করতে পারে।

জঙ্গি হামলার মুখে জম্মু-কাশ্মীর: সংঘর্ষ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নতুন উদ্বেগ

চীনের বিজ্ঞানীদের এই উদ্ভাবন প্রমাণ করে যে, মহাকাশ গবেষণায় নতুন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের জন্য অজানা সম্ভাবনার দরজা খুলতে পারে।এই পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে যে চাঁদের মাটিতে প্রচুর পরিমাণে খনিজ রয়েছে, যা মূলত এই মাটির গঠনকে নির্ধারণ করে। এই খনিজগুলি চাঁদের মাটির মূল উপাদান হিসেবে কাজ করে। এছাড়া, চাঁদের মাটিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হাইড্রোজেনও বিদ্যমান। এই হাইড্রোজেনের উপস্থিতি চাঁদের মাটির গুণাবলী এবং এর সম্ভাব্য ব্যবহারিক উদ্দেশ্যগুলি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। ফলে, চাঁদের মাটি বিশ্লেষণ করে নতুন ধরনের উৎস ও উপাদানগুলির সম্ভাবনা বোঝা সম্ভব হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণার জন্য কার্যকরী হতে পারে।অন্যান্য খনিজের সঙ্গে উচ্চ তাপমাত্রায় হাইড্রোজেনের প্রতিক্রিয়া ঘটালে জলীয় বাষ্প সৃষ্টি করা সম্ভব হতে পারে। এই প্রক্রিয়া চাঁদের মাটির বিভিন্ন খনিজ উপাদানের মধ্যে হাইড্রোজেনের সংযোগের মাধ্যমে জল উৎপাদনের সম্ভাবনাকে উন্মোচিত করে।

খালি পেটে দুধ খাছেন কি ? এই সমস্যাগুলি হতে পারে সাবধান!

এই গবেষণাটি পরিচালিত হচ্ছে ‘চাইনিজ একাডেমি অফ সায়েন্স’-এর নিংবো ইনস্টিটিউট অফ ম্যাটেরিয়াল টেকনোলজি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক ওয়াং জুনকিয়াং এর নেতৃত্বে। অধ্যাপক ওয়াং জুনকিয়াং এবং তাঁর দল বিভিন্ন খনিজ উপাদানের সাথে হাইড্রোজেনের প্রতিক্রিয়া পর্যালোচনা করে দেখছেন কিভাবে এই প্রক্রিয়াটি জলীয় বাষ্পের জন্ম দিতে পারে। এই গবেষণা চাঁদের মাটির সাথে কিভাবে বিভিন্ন রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটানো সম্ভব এবং তাতে কী ধরনের ফলাফল হতে পারে তা বোঝার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এই নতুন প্রযুক্তি মহাকাশ গবেষণার জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক হতে পারে, কারণ এটি চাঁদের মাটির মধ্যে প্রয়োজনীয় জীবনধারণের উপকরণ তৈরির সম্ভাবনা প্রদান করে। ফলে, ভবিষ্যতে চাঁদে দীর্ঘমেয়াদী মিশন পরিচালনার জন্য এই প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।গবেষকরা যে পদ্ধতি উদ্ভাবন করছেন, তা অনুযায়ী, তারা প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৫১ থেকে ৭৬ কেজি জল উৎপাদন করতে সক্ষম। এই পরিমাণ জল দৈনিক ৫০ জন মানুষের জলীয় চাহিদা পূরণ করার জন্য যথেষ্ট। এই জল উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুধু জল তৈরিতে সীমাবদ্ধ নয়; এতে ব্যবহৃত যৌগগুলোকে ভেঙে ফেলে অক্সিজেন উৎপাদনও করা সম্ভব।এই পদ্ধতির মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে জল উৎপাদন এবং অক্সিজেনের সৃষ্টির সম্ভাবনা চমকপ্রদ। এটি মহাকাশ অভিযানে জীবনধারণের উপকরণ সরবরাহের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ মিশনে, যেমন চাঁদে একটি স্থায়ী স্টেশন নির্মাণের ক্ষেত্রে, এই ধরনের প্রযুক্তি বিশেষভাবে উপকারী হতে পারে।অবশ্যই, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতে চাঁদে এবং অন্যান্য মহাকাশ মিশনে জীবনের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। গবেষণার এই পর্যায়ে প্রাপ্ত ফলাফলগুলি আমাদের মহাকাশ অনুসন্ধানের ক্ষেত্রকে একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে সক্ষম, যা ভবিষ্যতে আরো বৃহত্তর মহাকাশ মিশনের জন্য প্রস্তুতি হিসেবে কাজ করবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর