ব্যুরো নিউজ,১১ সেপ্টেম্বর: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস সম্প্রতি দুর্নীতির অভিযোগে সাসপেন্ড হয়েছেন। তবে, তার দুর্নীতির জাল শুধুমাত্র কলকাতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি পর্যন্ত বিস্তৃত। অভিযোগ রয়েছে যে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ভাদুরিয়াপাড়ার এক ছাত্রকে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে ডাক্তারি পড়ানোর জন্য ভর্তি করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু, ওই ছাত্রের বাবা দিন মহম্মদ জানিয়েছেন, তিনি অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে মামলা করেছিলেন, যার জেরে বিরূপাক্ষ বিশ্বাস জামিন পেয়েছেন। তবে মামলার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
আত্মহত্যা করতে গিয়ে ট্রেনলাইনে ঘুমিয়ে পড়ল তরুণী
দিন মহম্মদ জানিয়েছেন যে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসকে প্রথমে ফোনে যোগাযোগ করা অসম্ভব ছিল। যখন বিরূপাক্ষ ফোন ধরতেন, তখন ধমক দিয়ে কথা বলতেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। বিরূপাক্ষ বর্তমানে নিজেই ফোন করে দিন মহম্মদকে চাপ দিচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস মাত্র ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছেন, যদিও পুরো অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল। দিন মহম্মদের মতে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস সোমবার আরও টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন, কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত তা প্রদান করেননি। এর পরিবর্তে, সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলার জন্য দিন মহম্মদকে আবারও ধমক দেওয়া হয়েছে।
ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে জমে আছে লক্ষাধিক মামলা
২০২১ সালে জলঙ্গি থানায় বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে কেপিসি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার জন্য টাকা তোলার অভিযোগ করা হয়। দিন মহম্মদ জানিয়েছেন যে, তার ছেলে ২০২০ সালে ডাক্তারি পড়ার জন্য জয়েন্ট এন্ট্রাস পরীক্ষায় বসেছিলেন। যদিও সে পাশ করেছিল, তার নম্বর ভালো ছিল না। সেই সময়ে জলঙ্গির এক চিকিৎসকের মাধ্যমে বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের সাথে পরিচয় হয়। তখন বিরূপাক্ষ বিশ্বাস বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের প্যাথোলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন এবং তিনি তার প্রভাবের কথা তুলে ধরেছিলেন।
হাজার হাজার শিশু বাঁচিয়েছে নরেন্দ্র মোদির স্বচ্ছ ভারত মিশন
বিরূপাক্ষ বিশ্বাস প্রথমে ৭০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন, যার মধ্যে তিন লাখ টাকা সিট বুকিংয়ের জন্য নিয়ে নেয়া হয়েছিল। বাকিটা প্রতি সেমিস্টারে দিতে হবে বলে কথা হয়েছিল। কিন্তু পরে বিরূপাক্ষ কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে দেখা করার জন্য আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। ওই সময়, দিন মহম্মদ একটি দোকান বিক্রি করে পাঁচ লাখ টাকা প্রদান করেছিলেন। পরবর্তীতে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের দেওয়া চিঠি জাল প্রমাণিত হয় এবং দিন মহম্মদ আরও টাকা দিয়ে কোনও সেবা না পাওয়ায় মামলা করতে বাধ্য হন।
এই কাণ্ড প্রমাণ করে যে, বিরূপাক্ষ বিশ্বাস শুধু আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে নয়, বরং বিভিন্ন অঞ্চলে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জলঙ্গির মামলার মাধ্যমে তার দীর্ঘদিনের দুর্নীতির ইতিহাস ফুটে উঠেছে। এটি একটি বড় বিষয় যা স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য একটি সতর্ক সংকেত।যদিও মামলা চলমান রয়েছে, এই ঘটনার মাধ্যমে এটি পরিষ্কার যে, চিকিৎসকদের মধ্যে দুর্নীতি একটি গভীর সমস্যা, যা প্রতিরোধ ও প্রতিকার প্রয়োজন।