photo

ব্যুরো নিউজ,১০ সেপ্টেম্বর:শান্ত এবং গোছানো স্বভাবের একজন চিকিৎসক ছিলেন আরজি কর হাসপাতালের মৃতা তরুণী চিকিৎসক।তিনি যেকোনো বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহ করতেন এবং  প্রচণ্ড চিন্তা-ভাবনা করে কাজ করতেন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মৃতা তরুণী চিকিৎসক সম্পর্কে এরকম মতামত জানিয়েছেন তাঁর শিক্ষক, সহকর্মী এবং সতীর্থরা। হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ওই মৃতা তরুণী চিকিৎসক কিছু দিন আগে কিছু বিশেষ তথ্য সম্পর্কে তাঁর কয়েকজন শিক্ষককে জানান। ওই তথ্যগুলোর মধ্যে ছিল এমন কিছু বিষয় যা সরাসরি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পাঠাতে চান বলে জানিয়েছিলেন। এছাড়া, সেই সময় তিনি বেশ কয়েকজনের ইমেল আই ডিও সংগ্রহ করেছিলেন।

উৎসবে না ফেরার বার্তা সাধারণ মানুষ সহ টালিগঞ্জের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির 

হাসপাতালে তার ঘনিষ্ঠরা কি সন্দেহ করছেন?

তবে, তাঁর হাতে পাওয়া তথ্যগুলো তিনি পাঠাতে পেরেছিলেন কিনা, তা এখনও পরিষ্কার নয়। হাসপাতালে তাঁর ঘনিষ্ঠরা এখন সন্দেহ করছেন যে, ওই চিকিৎসকেরা কোনো বিশেষ তথ্যের ব্যাপারটা জানার  ফলেই কি মৃত্যু হল তরুণীর? হতে পারে তার হাতে পাওয়া তথ্যগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং সেগুলো হয়তো অপরাধীদের অস্বস্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছিল।আর জি কর হাসপাতালের সূত্র ধরে সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরে যে দুর্নীতির খবর সামনে আসছে, তা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বিশ্লেষকরা এখন আর এই আশঙ্কাকে অমূলক বলে ধরে নিতে পারছেন না। মেডিক্যাল শিক্ষার সঙ্গে বহু বছর ধরে যুক্ত প্রবীণ চিকিৎসকদের একাংশের মতে, পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা একটি গুরুতর সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং তাতে আমূল সংস্কার ছাড়া মুক্তির পথ নেই।

কর্ম বিরতি থামাবেন না স্পষ্ট করলেন আন্দোলনকারী ডাক্তাররা

এমন অভিযোগ উঠেছে যে, আরজি কর ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে প্রথমে শুরু হওয়া প্রশ্ন ফাঁস চক্র ধীরে ধীরে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ ও বদলির ব্যবস্থা, যা একটি লাভজনক ব্যবসা হিসেবে ফুলেফেঁপে উঠেছে। আর জি করের ঘটনার পর ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখা একটি ‘অ্যাকশন কমিটি’ গঠন করে। এই কমিটির চেয়ারম্যান, চিকিৎসক সৌরভ দত্ত জানান, “জুনিয়র ডাক্তারদের নিয়মিত ভয় দেখানো হয় যে, তাদের রেজিস্ট্রেশন আটকে দেওয়া হবে। সিনিয়র ডাক্তারদের নানা অভিযোগ তুলে তাদের মুখ বন্ধ রাখা হয় এবং টাকা চাওয়া হয়। এমন বহু অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে।” অপরদিকে, এই মেডিক্যাল কাউন্সিলের পক্ষ থেকে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের জানানো হয়েছিল যে, এখন থেকে মেডিক্যাল পড়ুয়াদের নৈতিকতার ক্লাস নেওয়া হবে। সেই ক্লাস নেওয়ার দায়িত্ব ছিল বিরূপাক্ষ ও অভীক দের।

কিছু কলেজের অধ্যক্ষদের প্রতিবাদের কারণে ওই নৈতিকতার ক্লাস সেখানে হয়নি, কিন্তু বাকি জায়গাগুলিতে অভীক ও বিরূপাক্ষ ‘আদর্শ ডাক্তার কেমন হওয়া উচিত’ শেখাতে গিয়ে নানা বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন।আরজি করের এক শিক্ষক কিছু মাস আগে তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। অভিযোগ ছিল, পড়ুয়াদের মধ্যে প্রাথমিক জ্ঞানও নেই এবং তারা প্র্যাকটিস শুরু করলে ভয়াবহ ফল হতে পারে। কিন্তু অধ্যক্ষ ঠান্ডা গলায় বলেছিলেন, “আপনার পরিবার বা নিজের চিকিৎসা তাদের দিয়ে করাবেন না, তাতেই হবে।” অভিযোগপত্রের কোনো সমাধান হয়নি।এক প্রাক্তন স্বাস্থ্যকর্তার মতে, এই ‘নিজেদের লোক’ বসানোর প্রবণতা বাম আমলেও ছিল, কিন্তু এখন এটি চাকরি পাওয়ার একমাত্র মাপকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর মতে, “ব্যাচের পর ব্যাচ এমন ডাক্তাররা পাশ করছেন, যাঁরা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গই চিনতে পারেন না। তাঁদের মধ্যে অপরাধী মানসিকতা ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে রোগীদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলবে।”

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর