ব্যুরো নিউজ, ৮ ফেব্রুয়ারি: পাশ হয়ে গেল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) বিল। বুধবারই উত্তরাখণ্ডের বিধানসভায় পাশ হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এই বিল পাশ হওয়ার ফলে এবার উত্তরাখণ্ডের সমস্ত নাগরিকদের জন্য একই আইন কার্যকর হবে। ধর্ম, জাতির ভিত্তিতে ভিন্ন আইন নয়।
তামিলনাড়ুর ১৫ জন প্রাক্তন বিধায়ক বিজেপিতে
বুধবার বিকেলে পাশ হয়ে গেল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি (Uniform Civil Code) বিল। বুধবারই উত্তরাখণ্ডের বিধানসভায় পাশ হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এবার এই বিল আইনে পরিণত হতে শুধু রাজ্যপালের সইয়ের অপেক্ষা। রাজ্যপালের সই মিললেই আইনে পরিণত হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলটি।
ইতিহাস গড়ল উত্তরাখণ্ড
দেবভূমি উত্তরাখণ্ডে এবার আইন হতে চলেছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এই বিল নিয়ে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি বলেন, সংবিধান মেনেই তৈরি হয়েছে এই বিলের খসড়া।
‘অভিন্ন দেওয়ানি বিধি’ বিল পেশ হল উত্তরাখণ্ডে | কী আছে এই বিলে?
মঙ্গলবার বিধানসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুস্কর সিং ধামি। বন্দে মাতরম ও জয় শ্রীরাম ধ্বনি তুলে পেশ করা হয় এই বিল। তবে বিল পেশের পরেই সাময়িকভাবে মুলতুবি করা হয় অধিবেশন। বুধবার সকাল থেকে শুরু হয় এই বিল নিয়ে আলোচনা। অধিবেশনে ধামি বলেন, “স্বাধীনতার পরে রাজ্যগুলো নিজেদের সুবিধা মতো সময়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করতে পারে, এমনটাই বলা হয়েছে সংবিধানে। অনেকেই এই বিলের বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু সংবিধান মেনেই তৈরি করা হয়েছে বিলের খসড়া।” এরপর, বুধবার বিকেলেই পাশ হয়ে যায় বিলটি।
তখনই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে অধিবেশন কক্ষ। এই বিল পাশ হওয়ায় এক দেশ এক আইনের পথে আরও একধাপ এগোল ভারত, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে ওয়াকিবহাল মহল। তবে যেহেতু এই বিলে দলিত ও জনজাতি সম্প্রদায়ের নাগরিকদের উল্লেখ নেই তাই এই বিল কি করে এক দেশ এক আইনের তকমা পেটে পারে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা।
তবে এই বিলে একাধিক বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, সম্পত্তির উত্তরাধিকার, লিভ-ইন সম্পর্ক, দত্তক গ্রহণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিকেতুলে ধরা হয়েছে।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিলে বহুবিবাহকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিয়ম কোনও ধর্মের মানুষের ক্ষেত্রেই লাগু হবে। আর নিয়ম ভাঙলে কঠোর শাস্তি। বিবাহের ক্ষেত্রে মেয়েদের ন্যূনতম বয়স ১৮ ও ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর করা হয়েছে। পাশাপাশি ‘রেজিস্ট্রি বিবাহ’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
কোনও যুগল ‘লিভ-ইন’ করতে চাইলে তাদের প্রথমে পুলিশের কাছে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কের সার্টিফিকেট সঙ্গে রাখতে হবে যুগলকে। ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কের সার্টিফিকেট দেখাতে না পারলে সেই যুগলকে দিতে হবে জরিমানা। সেক্ষেত্রে ২৫ হাজার টাকার জরিমানা-সহ হতে পারে তিন থেকে ছ’মাসের জেল। ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কে থাকা যুগলের যদি সন্তান হয়, তবে শিশুরা আইনি স্বীকৃতি পাবে।
উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে মা-বাবার সম্পত্তিতে পুত্র ও কন্যার সমান অধিকার। তা সে যে ধর্মেরই হোক না কেনও। বৈধ ও অবৈধ সন্তানেরও সমান অধিকার থাকবে মা-বাবার সম্পত্তিতে। দত্তক নেওয়া এবং জৈবিকভাবে জন্ম নেওয়া সন্তানদের সমান অধিকার। কোনো ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর সম্পত্তির উপর স্ত্রী, সন্তান এবং বাবা-মায়ের সমান অধিকার থাকবে।
এই বিলে বিবাহের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বিবাহ নিবন্ধন না করলে মিলবে না সরকারি সুবিধা। মেয়েদের বিবাহের বয়স বৃদ্ধি করার কথাও উল্লেখ রয়েছে। যাতে তারা বিয়ের আগে শিক্ষা অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত সময় ও সুবিধা পায়।
বিবাহবিচ্ছেদ বা স্বামীর মৃত্যুর পর মুসলিম মহিলাদের যে হালাল এবং ইদ্দত করেন, তা নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। দত্তকের ক্ষেত্রে, মুসলিম মহিলা-সহ সকল মহিলাকে দত্তক গ্রহণের অধিকার প্রদান করা হবে। পাশাপাশি জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিষয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। ইভিএম নিউজ