ব্যুরো নিউজ, ১৬ জানুয়ারি: নিয়োগ কমার পরে বন্ধের পথে রেলের ছাপাখানা
রয়েছে আধুনিক উপকরণ, মুদ্রা যন্ত্র, প্রশিক্ষিত কর্মী। কিন্তু নেই পর্যাপ্ত কাগজ। আর তারই জেরে রেলের ছাপাখানা হাওড়ার ওই অফিসে বসে বসে দিন কাটাচ্ছেন ২৯১ জন কর্মী। গত মে মাসে রেল মন্ত্রক এক নির্দেশিকায় ওই যন্ত্রপাতি উপকরণ সমস্ত কিছু বেঁচে কর্মীদের অন্যত্র বদলির ফতোয়া জারি করেছে। এর ফলে রেলের অসংরক্ষিত ও সংরক্ষিত টিকিট, রিজার্ভেশন স্লিপ, ও টাকার মূল্য বহনকারী মানি ভ্যালু সবই ছাপা বন্ধ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে কর্মী ইউনিয়ন গুলির অভিযোগ, রেলের ছাপাখানা বন্ধ করে বেশি টাকায় তা বাইরে থেকে ছাপানো হচ্ছে। এভাবেই লোক কমানো ও বেসরকারিকরণের চক্রান্ত করছে রেল কর্তৃপক্ষ। রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সংসদে তাঁর বক্তব্যে জানিয়েছিলেন, রেলের ৩ টি ছাপাখানা এখন চলছে।
দক্ষিন ভারত সফরে প্রধানমন্ত্রী
রেলের মোট ১৪ টি ছাপাখানার মধ্যে ৯ টি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মোদী জমানায় ২০১৭ সালে। পরে মুম্বাই, হাওড়া, চেন্নাই, সেকেন্দ্রাবাদ ও দিল্লির ৫ টি ছাপাখানা বন্ধ করতে রেল মন্ত্রক বিশেষ উদ্যোগ নেয়। দিল্লি ও চেন্নাইতে কর্মীর অভাবে ছাপাখানায় উৎপাদন বন্ধ। টিম টিম করে চলছিলো মুম্বাই, সেকেন্দ্রাবাদ ও হাওড়া। পৌনে দুশো বছরের প্রাচীন এই ছাপাখানায় ২২ কোটি টাকায় আধুনিকীকরণ হয় ২০১৪ সালে। নিয়ে আসা হয় আধুনিক মুদ্রণ যন্ত্র। এখানে মেট্রো রেল সহ পূর্ব রেল, দক্ষিন- পূর্ব, উত্তর- পূর্ব, ও পূর্ব- মধ্য রেলের সমস্ত টিকিট, রিকুইজিশন স্লিপ ছাপার কাজ চলতো।
পূর্ব রেলে এইধরনের ১২ কোটি স্লিপ ও টিকিটের চাহিদা রয়েছে, যা দ্রুত উৎপাদন করা দরকার। শুধু টিকিট বা রিজার্ভেশন স্লিপ নয়। সিগনালিং ব্যবস্থা, গুরুত্বপূর্ণ কাগজ, ও বিভিন্ন নথি ছাপা হয় এইসব প্রেসে। মুম্বাইয়ের ছাপাখানার মাধ্যমে আনতে হয় ওয়াটার মার্ক দেওয়া কাগজ। আর সেই কাগজ মুম্বাই থেকে আসা বন্ধ হয়েছে। বলা হয়েছে, মানি ভ্যালু ছাপার কাজ রিসার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্দিয়ার অনুমোদিত ছাপাখানার হাতে দেওয়া হবে। অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাপা হবে বাইরে থেকে। রেল কর্তারা অজুহাত খুঁজে নিয়েছেন। তাঁরা বলতে শুরু করেছেন এখন রিকুইজিশন স্লিপ কম লাগে। কারণ যাত্রীরা এখন অনলাইনে টিকিট কাটে। বাইরে থেকে ছাপার খরচও কম।
এইসব খরচ কমাতে ইতিমধ্যেই কর্মী ইউনিয়ন জানিয়েছে, তাঁরা টিকিতে বিজ্ঞাপন বাবদ ১ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা যোগাড় করেছে। কর্মী ইউনিয়ন ইস্টার্ন রেলওয়ে, মেন্স ইউনিয়ন জানিয়েছে, সংস্থা বন্ধ করার নানা অজুহাত খুজছেন রেল কর্তারা। যাত্রী পরিষেবার এই প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি বিক্রির লক্ষেই এইসব করছে রেল। ইভিএম নিউজ