জঙ্গলে

রাজীব ঘোষ, ১৯ অক্টোবর: পাহাড় ঘেরা ঘন জঙ্গলে রাজপ্রাসাদ | পুরনো রীতিতেই চলছে পুজো

রাজা নেই, নেই রাজতন্ত্র। তবুও স্বমহিমায় এখানে মা দুর্গার পুজো হয়। পুজোর এই কটা দিনে রাজবাড়ী নতুন করে সেজে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ হয়ে থাকা রাজবাড়ী পুজোর সময় পুরনো জৌলুস ফিরে পায়। শুধু তাই নয়, এলাকার বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ এই রাজবাড়ীতে আসেন পুজোর দিনগুলোতে। তবে এই রাজপ্রাসাদ যেখানে অবস্থিত তা উচু পাহাড় বেষ্টিত ঘন জঙ্গলের মধ্যে। এখানে বন্য প্রাণীর ভয় রয়েছে। তবুও এর মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছে বৃহৎ রাজপ্রাসাদ। জায়গাটি হল পুরুলিয়ার ঝালদার দুর্গম একটি গ্রাম, নাম হেঁসলা।

কয়েকশো বছর আগে রাজস্থানের বারানসি থেকে এক হিন্দু রাজা পুরুলিয়া ঝালদার এই দুর্গম অঞ্চল হেঁসলা গ্রামে এসেছিলেন। সেই সময় বিরাট বড় বড় পাহাড় বেষ্টিত হয়ে গভীর জঙ্গলে ঘেরা ছিল এই গ্রাম। এখানকার আদিবাসী ও জঙ্গলের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষদের মন জয় করে অল্প সময়ের মধ্যেই পাহাড় জঙ্গল কেটে রাজপ্রাসাদ তৈরি করেন রাজা দিগ্বিজয় প্রতাপ সিংহ দেও।

এই এলাকার মানুষের মন জয় করে আশপাশের ২২টি মৌজার দখল নিয়ে নেন। ধীরে ধীরে তৈরি করেন ঠাকুরদালান। সেই ঠাকুরদালানেই মা দুর্গার আরাধনা শুরু হয়। তৈরি হয় নাটমন্দির, কাছারি, বাগানবাড়ি। প্রথমে খড়্গকে সামনে রেখে দেবী দুর্গার পূজা করা হতো। পরবর্তীতে পুরুলিয়ার বিখ্যাত ছৌ নাচকে অনুকরণ করে দেবী দুর্গার মূর্তি করে পূজা শুরু হয়।

বছরভর দুর্গাপুজোর অপেক্ষায় থাকেন শেখ বাবর!

বন্দুক থেকে গুলি চালিয়ে ঢাক বাজনা শঙ্খের সঙ্গে পাহাড়ি হেঁসলা নদীর ঝরনা থেকে রাজা নিজে দেবী দুর্গার ঘটের জল নিয়ে আসতেন। সেই প্রথা মেনে এখনো ঘটের বারি আনা হয়। তবে বন্দুকের পরিবর্তে শব্দবাজি ফাটানো হয়। বৈদিক রীতিমেনে দেবীর পূজা হয়। এখানে সম্পূর্ণ বৈষ্ণব মতেই রাজবাড়িতে পুজো করা হয়।

রাজপরিবারের বর্তমান রাজা বলেন, আগের থেকে জৌলুস অনেকটা কমে গেলেও রীতিনীতি মেনে পুজো চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, এই রাজবাড়ীতে একসময় জাঁকজমকের সঙ্গে দুর্গা পুজো পালিত হতো। এখন আর সেই জাকজমক দেখা যায় না। এই পুজোর সময়ে রাজ পরিবারের সদস্যরা এখানে এসে মিলিত হন। পুজো শেষে সকলেই চলে যান। তখন পড়ে থাকে ফাঁকা রাজপ্রাসাদ। আবার অপেক্ষায় থাকতে হয় সামনের বছরের পুজোর জন্য। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর