সন্দীপ মুখার্জি,কে.পি অ্যাস্টোলজার, ১৫ জুনঃ আজ বৃহস্পতিবার মানেই একথায় আমাদের মাথায় আসে মা লক্ষীদেবীর পুজো , পুজো আসে ভক্তি থেকে আর ভক্তি আসে জ্ঞান থেকে , যতক্ষণ না আপনি আপনার ইস্ট দেব দেবীর সম্পর্কে সম্পূর্ণ না জানবেন আপনার তার মহিমা বা তার সম্পর্কে ভালোবাসা জন্মাবে কিভাবে , তাই আজ আমরা জানতে চলেছি মা লক্ষী দেবীর আবির্ভাব এর কিছু কাহিনী।

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে নারদ নারায়ণকে লক্ষ্মীর উৎপত্তির বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণ লক্ষ্মীর সৃষ্টির রহস্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছিলেন সৃষ্টির পূর্বে রাসমন্ডলস্থিত পরমযোগী শ্রীকৃষ্ণের বাম দিক দেবী লক্ষ্মীদেবী উৎপন্না হন।অতিশয় সুন্দরী এই নারীর অঙ্গসমূহ শীতকালে সুখদায়ক উষ্ণ ও গ্রীষ্মকালে শীতল।স্থিরযৌবনা দেবীর কটিদেশ ক্ষীণ, স্তনদ্বয় কঠিন ও গুরু নিতম্ব।তাঁর মুখমন্ডলের প্রভা কোটি সংখ্যক পূর্ণচন্দ্রের প্রভার অধিক এবং অক্ষিদ্বয় শরৎকালের মধ্যাহ্নের পূর্ণ প্রস্ফুটিত পদ্মের চেয়েও সুন্দর।

আসলে, লক্ষ্মীর উদ্ভব বৈদিক যুগে।তখন তাঁর নাম ছিল, শ্রী।তখন থেকেই তিনি ঐশ্বর্যের দেবী।বেদে তাঁর জন্ম বৃত্তান্ত নেই।বাবা-মায়ের নামও নেই।পুরাণের যুগে এসে তিনি বাপ-মা পেলেন, নারায়নকে স্বামী হিসেবে পেলেন আর পেলেন নতুন নাম, ‘লক্ষ্মী’।তাঁর বাস স্বর্গের বৈকুণ্ঠ লোকে।এদিকে শারদ উত্‍সবে সপরিবারে মা দুর্গার আগমন বলতে মায়ের সঙ্গে কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীর আগমনের কথা সবাই জানি।আর সেই দুর্গাপূজা শেষে শুরু হয় ধন বা ঐশ্বর্যের দেবী লক্ষ্মীর আরাধনা।

বিষ্ণু পুরাণ, ভাগবত, মহাভারত প্রভৃতি গ্রন্থ অনুসারে লক্ষ্মী দেবীর উৎপত্তি হয়েছে সমুদ্র থেকে।পুরাণে আছে একদিন ভ্রমণ করছিলেন দুর্বাসা।সাক্ষাত্‍ হল অপ্সরা বিদ্যাধরীর সঙ্গে।অপ্সরার কণ্ঠে এক অপূর্ব পুষ্পহার দেখে মুগ্ধ হলেন দুর্বাসা।স্বর্গীয় সেই কণ্ঠহার তাঁকে দিয়ে দিলেন অপ্সরা।ওটা গলায় পরেই পদব্রজে এগোচ্ছিলেন ঋষি।এ বার দেখা হল ঐরাবতে আসীন দেবরাজ ইন্দ্রর সঙ্গে।তাঁকে ওই কণ্ঠহার উপহার দিলেন দুর্বাসা।কোথায় রাখবেন বুঝে না পেয়ে সেটা ঐরাবতের মাথায় রাখলেন ইন্দ্র।এদিকে ফুলের গন্ধ মোটেও ভাল লাগল না ঐরাবতের।সে মাথা ঝাঁকিয়ে ফেলে দিল পুষ্পহার।পা দিয়ে পিষ্ট করে দিল সেটা।ব্যস!রগচটা স্বভাবের ঋষি অমনি জ্বলে উঠে উচ্চারণ করলেন অভিশাপ।অদ্ভুত সেই অভিশাপ।তিনি বললেন, কী!আমার দেওয়া মালা মাটিতে ফেলে দিলে, তাই তোমার ত্রিলোক এখন লক্ষ্মীছাড়া হবে।অর্থাৎ, লক্ষ্মীর নির্বাসন।দুর্বাসা মুনির অভিশাপে লক্ষ্মীকে হারালেন ইন্দ্র।স্বর্গ লক্ষ্মীছাড়া হল।তখন বিষ্ণুর পরামর্শে স্বর্গের ঐশ্বর্য ফিরে পাবার জন্য দেবগণ অসুরদের সাথে নিয়ে সমুদ্র-মন্থন শুরু করেন।সেই ক্ষীর-সমুদ্র মন্থনের ফলে উঠে আসল নানা রত্ন মণি-মাণিক্য, অমৃতসুধা আরও কত কি।এসব ছাড়াও সমুদ্র-মন্থনের ফলে উঠে আসলেন লক্ষ্মী দেবী এবং ঠাই পেলেন বিষ্ণুর বক্ষে।সমুদ্র থেকে দেবীর উদ্ভব বলে দেবীকে বলা হয় সমুদ্রোদ্ভবা।সমুদ্র হল অশেষ ধন-রত্নের আধার।বিষ্ণু হলেন জগতের প্রতিপালক।প্রজাদের লালন-পালন করতে ধন-রত্নের প্রয়োজন রয়েছে আর সেজন্যই বিষ্ণু ধন-ঐশ্বর্যের লক্ষ্মী দেবীকে বুকে স্থান দিলেন। আজ এই পর্যন্ত পরের বৃহস্পতিবার জানাবো লক্ষ্মীর অভিশাপ ও রাবণ বধ এর ভূমিকা। (EVM News)

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর