সুকান্ত মিত্র, ১ জুনঃ (Latest News) এ যেন কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা। এতদিন রাশিয়া তার বিভিন্ন মিত্র দেশ থেকে গুন্ডা বাহিনী নিয়ে ইউক্রেনে যুদ্ধ করতে পাঠাছিল। এমনকি রাশিয়ার বিভিন্ন জেলে বন্দী থাকা অপরাধীদেরকেও সেই গুন্ডা বাহিনীতেও সামিল করা হচ্ছিল। এখনও, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এতদিন পেরিয়ে যাওয়ার পরেও একই কাজ করে চলেছে রুশ বাহিনী। এই ভাড়াতে গুন্ডা বাহিনির নাম সংবাদ মাধ্যমের দৌলতে এখন সকলেই জেনে গেছেন- ওয়াগনার ফোর্স। এই ভাড়াটে গুন্ডা বাহিনী ব্যবহার করার জন্য বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ রাশিয়ার সমালোচনাও করেছে।
কিন্তু গোটা বিশ্বের চোখের আড়ালে অন্ধকারে ঢাকা রয়ে গেছে আর একটি ঘটনা। তা হল, পুতিন বিরোধী, কমিউনিস্ট শাসন বিরোধী হাজার হাজার রুশ যুবককে অস্ত্র প্রশিক্ষন দিয়ে রাশিয়ার বিরুধে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে। এই বাহিনী এই একটা অংশ রীতিমতো কমান্ডো প্রশিক্ষণ পেয়েছে, এবং সম্প্রতি এই কমান্ডো বাহিনী ইউক্রেনের সিমানা পেরিয়ে রাশিয়ার মাটিতে ঢুকে আক্রমণ চালিয়েছে।
মাত্র কয়েকদিন আগেই রাশিয়ার বেলগোরোদ অঞ্চলে রুশ তৈল খনির ওপর আক্রমণ চালিয়ে ছিল এই সেনারাই। ইউক্রেনের গোয়েন্দা বাহিনীর নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কর্মী ইউরোপীয় সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ওই বাহিনীর কয়েকজন কমান্ডো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রুশ শহরে ঘাঁটি গেড়েছে। ইউক্রেনের ওই গোয়েন্দা আধিকারিক আরও জানিয়েছন, কিছুদিন আগে ক্রেমলিনের ওপর ড্রোন হামলার যে চেষ্টা রুশ সেনা ব্যর্থ করে দিয়েছিল সেই হামলাও চালিয়েছিল ইউক্রেনের ওই রাশিয়ান বাহিনী। এছাড়াও আরও যে তিনটি জায়গায় ড্রোন হামলা হয়েছে, তাও ঘটিয়ে ওই বাহিনীই।
রাশিয়া বিরোধী এই রুশ সৈন্যরা এখন পুতিন তথা রুশ সরকারের মাথা ব্যথার বড় কারণ। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও তাদের একজনেরও নাগাল পায়নি রুশ গোয়েন্দা বিভাগ। সম্ভবত ওই রাশিয়ানরা রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে বা আশেপাশে থাকার তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন- এইরকমই মনে করছেন পশ্চিমী সংবাদ মাধ্যম। যদিও সেই সম্ভাবনা উরিয়ে দিয়েছে রুশ স্বরাষ্ট্র দফতর। কিন্তু ইউক্রেন সীমান্ত থেকে বহু দূরে অবস্থিত মস্কোতে গিয়ে কীভাবে এই বাহিনী ড্রোন হামলা করলো সে ব্যপারে পুরিপুরি অন্ধকারে রুশ গোয়েন্দা বাহিনী।
শোনা যাচ্ছে, ভ্লাদিমির পুতিন গুরুতর অসুস্থ। তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত এবং সেই ক্যান্সার এখন তৃতীয় পর্যায়। অর্থাৎ পুতিনের এই রোগ সারার সম্ভাবনা নেই। এখন তার চিকিৎসা চলছে ঠিকই, কিন্তু সেই চিকিৎসা শুধুই তার আয়ু যতটা সম্ভব দীর্ঘায়িত করা যায় সেই লক্ষ্যে। এছাড়াও পুতিন আক্রান্ত আলঝাইমার্স-এ । তার ব্যাক্তিগত চিকিৎসকরা যে ই-মেল চালাচালি করেছেন নিজেদের মধ্যে, তার কয়েকটি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। সেই মেলগুলো থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তার আলঝাইমার্সও দ্বিতীয় পর্যায় – অর্থাৎ এই রোগও সারার সম্ভাবনা নেই।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট জারাই হন তাদের চারটি করে ডামি থাকে। পুতিনয়েরও আছে। একটি অসমর্থিত সূত্রের খবর, ক্রেমলিনে এখন বেশিরভাগ সময়ই পুতিনের জায়গায় তার একজন ডামিকে দেখা যাচ্ছে। অসুস্থতার কারণে পুতিন নিজে নিয়মিত জনসমক্ষে আসছেন না, না কি হঠাৎ করে আক্রমণের ভয়ে তাকে বেশিরভাগ সময় লুকিয়ে রাখা হচ্ছে, এই নিয়ে ধন্ধে রয়েছেন পশ্চিমী গোয়েন্দারা।
তবে কারণ যাই হোক, রাশিয়ার মাটিতে বসে রয়েছে রুশ বিরোধী একদল রাশিয়ান কমান্ডো, অথচ তাদেরকে ধরা যাচ্ছে না- রুশ গোয়েন্দা বিভাগের সেটা অবশ্যই চরম ব্যর্থতা। যদিও মার্কিন ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের মতে, রুশ গোয়েন্দা বিভাগের মধ্যেও পুতিন বিরোধী একটা শক্তি কাজ করছে এবং তাদের সঙ্গে ইউক্রেনের গোয়েন্দার বাহিনীর যোগসাজশ রয়েছে। যার ফলে রাশিয়ার ভিতরে লুকিয়ে থাকতে পারছে ইউক্রেনের রুশ সেনারা। (EVM News)