ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ৫ মেঃ (Latest News) ফিরে দেখা সত্যজিৎ। ছবির নাম ‘’Two”… সালটা ১৯৬৮ । ভিয়েতনামে তখন যুদ্ধ চলছে।  সাদা-কালো পর্দায় তৈরি মাত্র ১২ মিনিটের একটি সংলাপহীন ছবি।  আমেরিকার  পিবিএসের (পাবলিক ব্রডকাস্টিং সিস্টেম) অনুরোধে তৈরি শর্ট ফিল্মটিতে মূলত যুদ্ধবিরোধী স্বরকে জাগ্রত করা এবং ভারতীয় সংস্কৃতির প্রবহমানতায় বিশ্ব-বিবেককে আলোড়িত করাই ছিল ছবিটির মূল উদ্দেশ্য।
কি ছিল ছবিটির বিষয়বস্তু ? 

ছবির মূল চরিত্রে রয়েছে একটি ধনী ও পথশিশু। জানালার দুই প্রান্তে তাদের মুখোমুখি দেখা। দু-জন শিশু তাদের খেলনাগুলির ধারাবাহিক প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে একে অপরের ক্ষমতা দেখাবার চেষ্টা করে।  শিশুসুলভ প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে জাগতিক হইহট্টগোল এবং সঙ্গীতের সাহায্যে চিত্রিত করা হয়েছে। তারা দুই ভুবনের প্রতিনিধি। দুজনের দর্শন সম্পূর্ণ আলাদা। আলাদা চাওয়া-পাওয়া। পোশাক-আসাকেও বিস্তর ফারাক।

ধনী পরিবারের শিশুটির দামী দামী আধুনিক খেলনাপাতির অঢেল সংগ্ৰহ। অন্যদিকে পথ শিশুটির মলিন পোশাক, বিমর্ষ চোখ। হাতে কখনও ঘুঁড়ি আবার কখনবা কুড়িয়ে পাওয়া বাঁশি। প্রথমে প্রাসাদের পদতলে বস্তির পরাজয় হতেই থাকে। এমনকি পথ শিশুটির ঘুঁড়ি ওড়ানোর মধ্যে যে মুক্তির আনন্দ ছিল সেটাও খেলনা ছররা দিয়ে ছিঁড়েখুঁড়ে নামিয়ে দেয় ধনী শিশুটি। ছেঁড়া ঘুঁড়ি আর আঘাতপ্রাপ্ত মন নিয়েও পরাজয় নেই বালকের দু-চোখে। আছে কেবল অস্থির সময়কে অতিক্রম করার আকাঙ্খা।

বারবার পরাজিত হয়েও বশ্যতা মানতে নারাজ পথ শিশুটি বস্তিতে ফিরে গেলেও প্রত্যাবর্তনের তাগিদে বিন্দু মাত্র খামতি নেই।  জানলার এপারে ধনী শিশুটি তার খেলনা বন্দুক আর দুন্দুভি নিয়ে দুম দাম আওয়াজে তোলপাড় করছে। পাল্টা পথশিশুটি তার কুড়িয়ে পাওয়া বাঁশের বাঁশির সুরে মুগ্ধ করছে ভুবন। বাঁশির সুরে ম্লান হয়ে যায় দুন্দভির অশান্ত আওয়াজ। সেই সুর যেন সারা বিশ্বে শান্তির বার্তা দিচ্ছে। চলচ্চিত্র সমালোচকদের মতে সত্যজিতের এই শর্ট ফিল্মটি তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি ‘পথের পাঁচালী’-র সঙ্গে এক সারিতে রাখার যোগ্য। (EVM News)

 

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর