ব্যুরো নিউজ, ২২ ফেব্রুয়ারি: রুজির টানে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের ২ পরিযায়ী শ্রমিক। আর সেই বিদেশে পাড়ি দেওয়াই তাঁদের কাল হয়ে দাঁড়ালো। জানা গিয়েছে, উজবেকিস্তানের তাসকেন্ত শহরে তুষারপাতে মৃত্যু হয়েছে সাইফুদ্দিন মাইতি(২৮) ও রাজীব করন(৩৪) নামক ২ পরিযায়ী শ্রমিকের। ইতিমধ্যেই ২ পরিবার দেহ ফেরানোর বিষয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে। সাইফুদ্দিনের বাবা মুজিবর মাইতি ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা জানিয়েছেন, ৬ মাস আগে ওই যুবক উজবেকিস্তানে ফিটারের কাজ করতে গিয়েছিলেন। এরপর সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিলো। বাঁধ সাধল যখন তাঁর পরিবার জানতে পারলো যে ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা নাগাদ তুষারপাতে সাইফুদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনের আগেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী!
জানা গিয়েছে, রোজকার মতো কাজ শুরু হওয়ার আগে একজায়গায় জমা হয়েছিলেন ভারতীয় শ্রমিকরা। সেখানে প্রায় ২০০র ও বেশি শ্রমিক ছিল। তখনই হঠাৎ প্রচণ্ড পরিমানে তুষারপাত হতে শুরু করে। সেই তুষারপাতে ভেঙে পড়ে শ্রমিকদের ছাউনি। তার নীচে চাপা পড়ে যান সাইফুদ্দিন সহ আরও অনেকে। মৃত্যু হয় সাইফুদ্দিনের। সাইফুদ্দিনের স্ত্রী রেজিনা বিবি বুধবার তাঁর স্বামীর দেহ ভারতে ফেরাতে উজবেকিস্তানের ভারতীয় দূতাবাসকে চিঠি দিয়েছেন।
সেই চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর সন্তান খুব ছোট। এখন তাঁকে রেখে বিদেশে দেহ আনতে যাওয়া রেজিনার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই দেহ নিজের মাটিতে ফেরাতে যেন ভারতীয় দূতাবাস সাহায্য করে। সাইফুদ্দিনের পরিবার দাবি করেছে, যে সংস্থার মাধ্যমে সাইফুদ্দিন পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন, সেই সংস্থা পেশাদার নয়। এছাড়াও শ্রমিকদের যে ছাউনির নীচে তুষারপাতের সময় আশ্রয় নিতে হত তা মজবুত ছিল না। এই কারনেই তুষার জমে ভেঙে পড়ে সেই ছাউনি।
সব মিলিয়ে মোট ৪ জন ভারতীয় শ্রমিক সেই তুষারপাতে মারা যান। যার মধ্যে রয়েছেন জেলার এই দু’জন। তবে, শুধু রেজিনাই নয়। ভারতীয় দূতাবাসের কাছে একই অনুরোধ জানিয়েছেন রাজীবের স্ত্রী দীপালি করনও। রাজীবে ভাই সঞ্জীব করন বলেন, “দিল্লি থেকে দাদা যে সংস্থার মাধ্যমে উজবেকিস্তান গিয়েছিল, তাঁদের কাছে জানতে পারি দাদার মৃত্যু হয়েছে। তবে উজবেকিস্তানের প্রশাসন বা আমাদের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য জানানো হয়নি। দাদার সাথে ফোনে শেষবার ১৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় পরিবারের কথা হয়েছিল”। এই প্রসঙ্গে হলদিয়া ব্লকের পূর্ত ও খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ শেখ শামিম আলি জানান, “ভারতীয় দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে। কলকাতায় যাতে ওই ২ শ্রমিকের পরিবার তাঁদের দেহ নিতে যেতে পারে সেই অনুরোধ করে ইতিমধ্যেই ই-মেল করা হয়েছে”। ইভিএম নিউজ