ব্যুরো নিউজ, ১৩ জানুয়ারি: ৮৩-এর হারে আজও চোখ ভিজে যায় লয়েডের
দিনটা ছিল ১৯৮৩ সালের ২৫ জুন। ইংল্যান্ডে লরদসে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ভারত মহারননে মুখোমুখি। কে ছিল না সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে? সম্ভবত বিশ্ব ক্রিকেটে এখনো পর্যন্ত সেইটাই সেরা একাদশ। গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, ভিভিয়ান রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েড, ল্যারি গোমস, ফাউদ বাক্কাস, জেফ ডুজন( উইকেট কিপার), ম্যালকম মার্শাল, অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, মাইকেল হোল্ডিং। আজও ৪ পেসার মার্শাল রবার্টস, গারনের হোল্ডিং-র আক্রমন সামাল দেওয়ার ক্ষমতা দেখানর সাহস আর কজন ব্যাটস মানের আছে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাকি প্রথম ৬ জন ব্যাটিঙে ইন্ডিজকে কোন না কোনোভাবে সমৃদ্ধ করে গেছে। কিন্তু সেই দল ফাইনালে ভারতের কাছে হেরেছিল ৪৩ রানে। খেলার আগে অনেকেই ভারতের হয়ে বাজি ধরার সাহস পাননি। তবে অজিত ওয়াদেকর বলেছিলেন, চাপের মুখে ভেঙ্গে পড়তে পারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাস্তবিক হয়েছিলও তাই। কপিল দেব, বলবিন্দর সিং সান্ধু, মদনলাল, রজার বিনি, মহিন্দার অমরনাথ ও কীর্তি আজাদের অবিস্মরণীয় বলিং আর মদনলালের নেওয়া কপিলের বলে মদনলালের ক্যাচে রিচার্ডসের উইকেট আশা জাগিয়েছিল প্রায় ১০০ কোটি ভারতবাসীকে।
রঞ্জি: বাংলার পেসে বিধ্বস্ত উত্তরপ্রদেশ
সেদিনের সেই পরাজয় আজও ভুলতে পারেননি ইন্ডিজ ক্যাপ্টেন লয়েড। শুক্রবার দঃ ২৪ পরগনার সাতগাছিয়া হাইস্কুলে ৭৫ বছরের পূর্তি অনুষ্ঠানে এসে লয়েড তাঁর বেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ওই পরাজয়ের কথা আজও আমাকে কাঁদায়। ভাবতে পারিনি সেইদিন ফাইনালে হেরে যাবো। তবে ভারত আমাদের হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলো ওরা ওয়ান ডে ক্রিকেট খেলতে পারে। সেখানে ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে তিনি ছিলেন অতিথি। হুদখলা জিপে দাড়িয়ে তিনি যখন আসছিলেন তখন তাঁকে সংবর্ধনায় ভাসিয়ে দেয় সাতগাছিয়ার বাসিন্দারা। একসময় তাঁর গাড়ি ভিড় থেলে এগোতে পারছিলো না। উপস্থিত জনতা একবার তাঁকে ছুঁয়ে দেখতে চায়। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ভারত সত্যি এখন ভালো খেলছে। রোহিতের অধিনায়কত্ব তাঁর ভালো লাগে। একইসঙ্গে শুভমান গিল ও স্রেয়স আয়ার ও তাঁর পছন্দের। ভারতের পেস অ্যাটাকও খুব ভালো। আর সর্বকালের সেরা ব্যাটস ম্যান বাছতে গিয়েই তিনি তাঁর সঙ্গি সুনীল গাভাস্কারের নামই বেছে নিয়েছে।
এর আগেও তিনি জানিয়েছিলেন, বিশ্বকাপের ফাইনালে সেদিন ১৮৩ রানে ভারতকে বেঁধে রাখার পর জয় নিয়ে তিনি চিন্তিত ছিলেন না। কিন্তু ১ রানে সান্ধুর বলে গ্রিনিজের বোল্ড হয়ে যাওয়া তারপর মদনলালের বলে মাত্র ১৩ রানে বিনির হাতে ক্যাচ দিয়ে হেইন্সের ফিরে যাওয়া তাঁকে তেমন ভাবায়নি। কারণ, তাঁর দলে ছিল বিধ্বংসী ব্যাটার ভিভিয়ান রিচার্ডস। সেই রিচার্ডস যখন দলের ৫৭ রানের মাথায় মদনলালের বলে কপিলের উল্টোদিকে ছোটা হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন তখনই বুঝে যান দিনটা তাঁদের নয়। এরপরেই ৯ রান যোগ করে দলে ৬৬ রানের মাথায় আবার মদনলাল তুলে নেন গোমসকে। সেই ৬৬ রানেই আউট হয়ে যান লয়েড। রান করেছিলেন মাত্র ৮। নিজেকে ক্ষমা করতে পারেননি সেইদিন। লয়েড শুক্রবার ওই অনুষ্ঠানে এসে বেশ কিছু ব্যাটে নিজের সই দিয়ে যান যাতে ব্যাটগুলি বেঁচে উদ্যক্তারা কিছু ফান্ড তুলতে পারেন। এতো সম্মানীয় ক্রিকেটার লয়েদ। তাঁর বহু স্থিতিছারনার মধেও আজও মনে করতে চান না ভারতের কাছে সেই পরাজয়। ইভিএম নিউজ