ইভিএম নিউজ, ২৪ ফেব্রুয়ারিঃ শেখার কোনও বয়স নেই। ইচ্ছাশক্তিই আসল। আর সেটাই প্রমাণ করে দিলেন মুর্শিদাবাদের বছর ৩০-এর সখিনা খাতুন । সমস্ত প্রতিকুলতা পেরিয়ে তিনি আজ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পরীক্ষার দ্বিতীয় দিনে নির্ঘণ্ট অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে আসেন সখিনা।

মুর্শিদাবাদের চোঁয়া গ্রামের বাসিন্দা সখিনা। প্রায় চার বছর ধরে  দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে চোঁয়া এলাকারই হরিহর পাড়ায় এক ব্রাহ্মণ পরিবারে রয়েছেন। সখিনার বাপের বাড়ি জলঙ্গিতে। সখিনা জানান, ছেলেবেলায় স্কুলে পড়ার সময় ভীষণ মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তিনি। প্রতিটি ক্লাসেই ভালো রেজাল্ট করতেন তিনি। এই অসম্ভব ভালো পড়াশোনায় বাধ সাধল তাঁর পরিবারের লোকজন। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মাত্র ১৩ বছর বয়সে জোড় করে তাঁকে বিয়ে দিয়ে দেয় সখিনার পরিবারের লোকজন। বিয়ের পর সংসার সামলে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। অবশেষে জলঙ্গি বালিকা বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণী পাস করেন তিনি। তারপর আর পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি।

প্রায় চার বছর আগে সাংসারিক অশান্তির জন্য দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে বেরিয়ে আসেন সখিনা। এমতাবস্থায় চোঁয়া এলাকারই এক বান্ধবী কাকলি রায়চৌধুরি সখিনাকে তাঁর নিজ বাড়িতে আশ্রয় দেন। কাকলির বান্ধবি মুসলিম হওয়ায় এবং তাঁকে নিজের বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার জন্য সখিনার বান্ধবিকে, ওই এলাকার লোকজন তাঁদের এক ঘরে পর্যন্ত করে দেন। তবে কাকলি কখনও সখিনার হাত ছাড়েননি। লড়াই করেছেন বান্ধবির জন্য। প্রশাসনের সাহায্যে সখিনার স্থায়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়। তখন থেকেই কাকলির মা-বাবা সুভাস ও ইলা রায়চৌধুরি সখিনাকে মেয়ের মতোই দেখাশোনা করেন। তাই সখিনার পড়াশোনার ইচ্ছাকেও গুরুত্ব দেন তাঁরা। দু’বছর আগে চোঁয়া বিবি পাল বিদ্যানিকেতনে নবম শ্রেণিতে সখিনাকে ভর্তি করে দেন কাকলি।

২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মাধ্যমিক পরিক্ষায় বসেন তিনি। সখিনার মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছে সাহাজাদপুর হাইস্কুলে। স্কুল ড্রেস পরেই নিজের স্বপ্নপুরণ করতে পৌঁছে যান গন্তব্যে। তিনি বলেন, “পরীক্ষা দিতে পেরে আমি খুবই খুশি। পড়াশুনো করেছি, এখন রেজাল্ট কেমন হয় এটাই এখন দেখার”।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর