ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ৩০ মার্চঃ সোমবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নং ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মহেন্দ্রপুর-৩ অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টারের কর্মী বিনতি দাসের বিরুদ্ধে শিশুদের মিড ডে মিলে পচা ডিম ও অনিয়মিত খাবার দেওয়ার অভিযোগ তুলে কয়েকজন কর্মী ও রাঁধুনী কে সেন্টারে তালা বন্দি করে বিক্ষোভ দেখান স্কুলের অভিভাবকরা। সংবাদমাধ্যমে সেই খবর প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেন সুপারভাইজার রুমি মন্ডল ও সিডিপিও আব্দুল সাত্তার। বুধবার সকালে রুমি সেন্টার ভিজিট করতে আসলে অভিভাবকরা অভিযোগ জানাতে ছুটে যায় তার কাছে ।
অভিভাবকদের অভিযোগ, সুপারভাইজার তাঁদের অভিযোগ না শুনে নিজের মতো করে সেন্টার ভিজিট করে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আর এতেই ক্ষুব্ধ হন অভিভাবকরা। এরপরই সুপার ভাইজার, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং রাধুনীকে একটি ঘরে তালা বন্দি করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে অভিভাবকরা। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন ভিলেজ পুলিশ অনির্বাণ ঝা ও সিডিপিও আব্দুল সাত্তার। ভিলেজ পুলিশের তৎপরতায় সেই মুহূর্তে রক্ষা পান সুপারভাইজার। এরপরই সিডিপিও আব্দুল সাত্তার অভিভাবকদের কাছ থেকে সরাসরি অভিযোগ শোনেন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী বিনতি দাসকে সেন্টার থেকে স্থানান্তরিত করার বন্দোবস্ত করেন।
শেখ হারুন রশিদ নামে এক অভিভাবক জানান, সোমবার সেন্টার থেকে দেওয়া পচা ডিম খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তার নাতনী। রাত থেকেই শুরু হয় পেটের সমস্যা ও শ্বাসকষ্ট । বাচ্চাটির কিছু হলে তার দায় নিতে হবে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকেই, এমনই দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন অভিভাবকরা।
সুপারভাইজার রুমি মন্ডল অবশ্য জানান, অভিযোগ শোনার জন্যই তিনি সেন্টারে এসেছিলেন। কিন্তু অভিভাবকরা তাকে অভিযোগ শোনার কোনো সুযোগই দেননি। উপরন্তু তালা বন্ধ ঘরে তাকে আটকে রাখেন।এই বিয়য়ে সিডিপিও আব্দুল সাত্তার বলেন,অভিযোগের পরই ওই অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে সেন্টার থেকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
কিছুদিন আগেই মেদিনীপুর ও বীরভূমের দুটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে একই চিত্র দেখা গিয়েছিল। বীরভূমের ময়ূরেশ্বরে একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে মিড ডে মিলের বালতিতে দেখা গিয়েছিল একটি সাপ। ময়ূরেশ্বরের দাসপলসা গ্রামপঞ্চায়েতের মণ্ডলপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘিরে তুমুল হইচইও নজরে এসেছিলো। এমনকি এই ঘটনার প্রতিবাদে স্কুলে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন অভিভাবকরা। ঘেরাও করে রাখা হয়েছিল স্কুলের প্রধান শিক্ষককে। মিড ডে মিল খাওয়া প্রায় ৪০ জন পড়ুয়াকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল রামপুরহাট হাসপাতালে।
রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলগুলিতে বার বার এই ধরনের ঘটনা ঘটায় যথেষ্ট উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে অভিভাবকদের মধ্যে। শিশুদের নিরাপত্তার গুরুত্ব বুঝে কবে স্কুলগুলি মিড ডে মিল পরিষেবার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনে, সেই দিকেই নজর আমজনতার।