বিশ্বকাপে

ব্যুরো নিউজ, ১১ ডিসেম্বর: বিশ্বকাপের ফাইনালে ফেল ভারত আবার কোমর বাঁধছে

২০২৩ সালে ৫০ ওভারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার কাছে অসহায় ভাবে হার মেনে ছিল ভারত। আর তারপরেই মুষড়ে পড়া ভারত এখনও ঝিমিয়েই রয়েছে। সমর্থকেরা এখন আর কোনও আশায় বুক বাঁধতে রাজি নয়। বিশ্বকাপের ধাক্কায় আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আর এই পরাজয়ের জেরে বিপুল প্রভাব পড়েছে বাজারেও। ভারতের পতাকা দিয়ে পাড়া সাজানোর উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। ফুল দিয়ে খেলোয়াড়দের ছবি সাজানোর ভাবনা সিকেয় তুলেদিয়ে ছিল। ফলে ফাইনালের পর দিনই ফুল বাজারে আর বাম্পার সেল হয়নি। নানাপদের রান্না করে পাড়ায় পাড়ায় চড়ুইভাতি করার উদ্যোগে জল ঢেলে দিয়েছেন শ্রেয়াস আয়াররা। যাত্রীবাহী বাসে, ট্রামে, ট্রেনে জয়ধ্বনি অথেনি।চায়ের কাপে ক্রিকেট নিয়ে আর তুফান ওঠেনি। ক্রিকেট সমর্থক পাড়ার ফেলুদা কিংবা বঙ্কুবাবুরা আর মাথা তুলতে পারেননি। তাঁদের দেখে মনে হয়েছিল, প্রিয় বিয়োগের দুঃখ সারা শরিরে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরনে ধোপদোরস্ত পোশাক নেই, চুল এলোমেলো। অনেকে আবার খেলা চলাকালীনই অশ্রুপাত করেছিল। তবে, একটা আশার কথা সেদিন বা ফাইনালের পরের দিন মুরগী ও খাসি হত্যা আর ব্যপক ভাবে হয়নি। তবে মিষ্টির দোকানিরা ছিল মন মরা। তবে তাতে ভারতের অর্থনীতিতে কোনও ছাপ পরেনি, পরার কথাও নয়। ভারতের জয়ের আনন্দে এমনিতেই বিশালবপু  চেহারার মানুষেরা অতিরিক্ত খেয়ে আর অজন বাড়াতে পারেনি। ফলে তাদের একটু হলেও তাদের আয়ু বেড়েছে।

শিল্পের জন্য ১ টাকায় জমি!

দেশের বেসরকারি অফিসগুলিতে ভারত জিতলেও কাজের গতি কমতো না। কিন্তু, সরকারী অফিসে ফাইনাল খেলার পরের দিন কাজের গতি ছিল শ্লথ। অনেকের মুখে মুখে ফিরছিল আহাঃ ভারত হেরে গেল। কিছুই ভাল্লাগছেনা দাদা। যেনও মনে হল ভারত জিতলে পোস্ট অফিস ও ব্যঙ্কের ক্যাশিয়াররা দিগুণ উৎসাহে কাজ করত। কিন্তু শুধু এতিই হবার নয়। কেরানি বাবুরা ভারত জিতলেও শ্লথ গতিতে, হারলেও তাই। মাঝে শুধু বাগাড়ম্বর। কার কতো ক্রিকেট বুদ্ধি সেই জ্ঞানগর্ব আলোচনা করতে পারেনি ক্রিকেট ব্যাট না ছোওয়া ভারতবাসী। ভারত জিতলে সত্যিই কি দেশের অর্থনীতির ভিত্তি কৃষিতে বাম্পার ফসল উথপন্ন হত?   অন্তত গণ্ডা খানেক বড় শিল্পও কি হত? সম্মান বৃদ্ধিতে সরকারও কি ব্যপক কর ছাড় দিত? নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারে মূল্য হ্রাস হত? একলাফে বেকার সমস্যা কি কমতো?  কমতো কি দুরপাল্লার টিকিটের যাত্রী ভাড়া? না, এসবের কিছুই হত না। তবুও ভারতবাসী যা পেত টা নিছক এক আনন্দ, আগেও পেয়েছে ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের নেতৃত্বে ওয়েস্টইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতে। আনন্দ পেয়েছে ধনির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতেও। তারপর শুধু আশা জাগিয়ে সারা বছর পরীক্ষায় ফাস্ট হয়ে সেই বার্ষিক পরীক্ষায় নির্মম ভাবে ফেল করার মতো। কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় জীবিত থাকলে হয়তো লিখতেন, ‘ছাত্র খারাপ হলেও পরীক্ষক তাহাকে চিনিতে পারে নাই’।

ভারতের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে এই ফাইনাল খেলার দিন ক্রমশ নিরাশার মধ্যে একটু আশা জাগিয়েছিলেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও লকেশ রাহুল। কিন্তু বাকিরা একেবারেই ব্যর্থ। শ্রেয়াস আয়ার থেকে টেল এন্ডাররা যেনও থরথর করে কাঁপছিল ভয়ে।  শুভমান গিল ভারতবাসী তার ওপর প্রত্যাশার এক ইঞ্চিও পূরণ করতে পারেনি। প্রাক্তন ক্রিকেটাররা কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, গিল যে শটে আউট হয়েছেন সে বলে তার ব্যাট চালানোই উচিৎ হয়নি। সেট হয়ে যাওয়া রোহিত শর্মা অভারে ১০ রান নিয়েও অনাবশ্যক বড় রান নিতে উইকেট ছুড়ে দিলেন। দুর্ভাগ্যের সেখানেই শেষ নয়, বিরাট কোহলি সেট হয়ে যাওয়ার পরেও ব্যাটে লেগে তার বল উইকেটে লাগে। তিনি নিজেও প্রথমটা বুঝে উঠতে পারেননি। লোকেশ রাহুল এক দিকে উইকেট ধরেছিলেন, কিন্তু তখন অনেক বলই নষ্ট হয়েগেছে। রানরেট বেড়েছে যথেষ্ট গতিতে। কিন্তু তাকে যজ্ঞ সঙ্গত দিতে পারেনি কেউই। জাদেজা, শ্রেয়াস আয়ার, শুভমান গিল, সামি এমনকি সূর্য কুমার যাদবেরা ৭০ দশকের ভারতীয় স্পিনারদের মতো মার্চপাস্ট করতে করতে বেড়িয়ে গেলেন। আর ভারতের ক্রিকেট সূর্য গুজরাটের আহমেদাবেদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে অস্তমিত হল। আর বাগ পটু বাঙ্গালী কয়েক সপ্তাহের খোরাক থেক বঞ্চিত হল। বাংলার সামি সব খেলায়( ২ টি বাদে ) চূড়ান্ত সফল হলেও ফাইনালে ব্যর্থ। ফলে, ‘আমাদের সামি’ বলে গলার কণ্ঠনারী ফোলানোর সুযোগও হারাল। তবুও আশা আসছে বছর আবার হবে। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর