ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ২৪ জুলাইঃ (Latest News) সালটা ২০২৩। আস্তে আস্তে বদলাচ্ছে সমাজ। প্রাচীন কুসংস্কার থেকে একটু একটু করে আধুনিক বিজ্ঞান মনস্কতার দিকে ঝুঁকছে মানুষ। বিশেষ করে আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মহিলাদের ওপর বেঁধে দেওয়া নিয়মের অচলায়তন ভাঙছে৷ কখনও মেয়েরা নিজেরাই রুখে দাঁড়াচ্ছে এই সমস্ত বস্তাপচা নিয়মের বিরুদ্ধে। আবার কখনও সমাজের পুরুষরাও সাহায্য করছে মহিলাদের নিজেদের সম্মানের সঙ্গে জীবন অতিবাহিত করতে। এরকমই একটি ছবি ধরা পড়লো সোশ্যাল মিডিয়ায় জিতেন্দ্র ভাটের দৌলতে৷ তিনি তাঁর ফেসবুক পোস্টে চেনা ছক ভেঙে বেরিয়ে আসার কথা শুনিয়েছেন। উত্তরাখণ্ডের এই সঙ্গীত শিক্ষক উদযাপন করলেন কিশোরী কন্যার প্রথম পিরিয়ড ৷
জানা গিয়েছে, উধম সিং নগরের বাসিন্দা জিতেন্দ্র এক জমকালো পার্টির ব্যবস্থা করেন তাঁর মেয়ে রাগিণী ভাটের প্রথম ঋতুস্রাব অভিজ্ঞতা স্মরণীয় করে রাখতে। আর এই উলট পুরাণ আসলে এই শিক্ষকের শৈশব থেকেই মনের মধ্যে বাসা বেঁধেছে৷ তিনি বরাবর দেখে এসেছেন তাঁর বাড়ির মহিলাদের কীভাবে এইসব দিনে সমাজে প্রায় একঘরে করে দূরে সরিয়ে রাখা হত৷ ‘অশুদ্ধ’ তকমা দিয়ে ঢুকতে দেওয়া হত না রান্নাঘরে, ঠাকুরঘরে৷ আর তখন থেকেই তিনি ঠিক করেছিলেন যদি তাঁর মেয়ে হয়, তার বেলায় এই রীতিনীতি ভাঙবেন ৷ আর সেই নিজের মনের ইচ্ছেটাই রূপ নিল বাস্তবে।
মেয়ের প্রথম পিরিয়ড উপলক্ষে সামাজিক মাধ্যম বা সোশ্যাল মিডিয়ায় মেয়েকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন জিতেন্দ্র৷ আর তখনই তাঁর পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায় ৷ মেয়ের জন্য তিনি কিনে এনেছিলেন ভেগান রেড ভেলভেট কেক৷ তিনি বলেন, ‘এই জিনিস লুকিয়ে রাখা হবে কেন? এটা একটা স্বাভাবিক শারীরবৃত্তিয় ক্রিয়া। যা মেয়েদের শারীরিক পরিচয়, বংশবৃদ্ধির অন্যতম সোপান৷ যা পরবর্তীতে একটি মেয়েকে মাতৃত্বের স্বাদ এনে দেয়। তাকে আড়ালে লুকিয়ে রাখার বদলে তা উদযাপন করা উচিৎ৷’ আর সেই পার্টিতে আমন্ত্রিত ছিলেন রাগিণীর বন্ধুরা৷ উপহার হিসেবে আসে স্যানিটরি ন্যাপকিন ও চকোলেট ৷
সদ্য কৈশোরে পা দেওয়া রাগিণী তার বাবা মায়ের এই উদ্যোগে গর্বিত ও উচ্ছ্বসিত৷বন্ধু এবং তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও সে এভাবেই এরকম সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে চায় বলে জানিয়েছে রাগিণী৷ সামাজিক সমস্ত ব্যাধি দূর করতে হলে প্রয়োজন এরকম আরো অনেক রাগিনী এবং আরো অনেক রাগিনির বাবার। তবে এই সমাজ প্রকৃত অর্থে মানুষের বাসযোগ্য হবে। (EVM News)