স্বপন দাস (চ্যানেল হেড, EVM NEWS) ১৭ নভেম্বর: নৈরাজ্যের বাংলা!
স্বাধীনতার পর বাংলা বোধহয় এত খারাপ প্রশাসন আর কখনো দেখেনি। এই প্রশাসন প্রকৃত অর্থে কালারফুল!
প্রেসিডেন্সি জেলে ফের অসুস্থ বালু
কয়লা চুরি, চাল চুরি, চাকরি চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত মন্ত্রী ও নেতা থেকে কাউন্সিলর এমনকি পঞ্চায়েতের সদস্য পর্যন্ত। চুরির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল, যার ফলস্বরূপ বগটুই, জয়নগর থেকে আমডাঙ্গা এরকম অসংখ্য জায়গায় তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের তৃণমূলের দ্বারাই খুন হতে হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে প্রত্যেকটা ক্ষেত্র। নারী সুরক্ষার প্রশ্ন উঠলে এই সরকার কতটা ব্যর্থ তা কামদুনির হাইকোর্টের রায় প্রমাণ করে দিচ্ছে বারবার। সরকার যখন ধর্ষণকারীদের পক্ষে কথা বলে, তখন বোঝাই যায় এই সরকার আসলে নারীদের সুরক্ষায় নয়, নারীদের সম্মান নিয়ে খেলা করছে।
এই রাজ্য এখন সন্ত্রাসবাদীদের জন্য মুক্তাঞ্চল। আপনি এই রাজ্যে রোহিঙ্গা, জামাত, PFI, সিমি সমস্ত ধরনের উগ্রপন্থীদেরকে নিশ্চিন্তে আশ্রয় নিতে দেখবেন। এমনকি পাকিস্তানের নাগরিকরাও এরাজ্যে এসে নিশ্চিন্তে ভুয়ো রেশন কার্ড তৈরি করে বসবাস করছি বছরের পর বছর। NIA কিছুটা সক্রিয় হওয়াতে এই খবরা-খবর সামনে আসছে। যদিও এখনো একটা বিরাট অংশের সন্ত্রাসবাদি শক্তি এই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আশ্রয় নিয়ে আছে।
এই সমস্ত বিষয়ে রাজ্য সরকার আশ্চর্যজনকভাবে নির্বিকার ও উদাসীন। বিরোধীরা এই বিষয়টিকে ভোট ব্যাংকের রাজনীতি বলে চিল-চীৎকার করলেও কাজের কাজ কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।
এই দলে একজন মহিলা সাংসদ টাকার বিনিময়ে দেশের সুরক্ষাকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। মহিলা এমপি মহুয়া মৈত্রের সেই অপরাধের কারণে তার সংসদ পদ যখন খারিজ হওয়ার মুখে তখন দল তাকে পুরস্কৃত করলো দলের আরও উচ্চপদ দিয়ে।
অর্থাৎ দলের কর্মীদের এবং নেতাদের এই বার্তা দেওয়া হল যে তুমি যত দেশবিরোধী এবং দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে তত তোমার পদোন্নতি ঘটবে দলে।
কর্মসংস্থানের কোনও পরিকল্পনা এই সরকারের কাছ থেকে আশা করা খুব অন্যায়, পরিবর্তে সরকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন পথ হিসাবে বোমা শিল্প ও চপ শিল্প খুলে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিদান দিয়েছেন এই শিল্পের মধ্য দিয়ে বেকারত্ব কমানো সম্ভব।
এই রাজ্যে এমন একজনকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বাংলা পেয়েছে, যিনি অকপটে বলেন- ১৯৪১ সালে মৃত রবীন্দ্রনাথ নাকি ১৯৪৬ সালে এসে বেলেঘাটাতে গান্ধীজিকে লেবুর রস খাইয়ে অনশন ভঙ্গ করেছিলেন। তিনি রাকেশ রোশন, ইন্দিরা গান্ধীকে চাঁদেও পাঠিয়ে দিতে পারেন। তিনি ডহর বাবুর পরিবারকেও মঞ্চে খুঁজে বেড়ান।
রবীন্দ্র, শরৎ, বঙ্কিম, সুকান্ত, জীবনানন্দের সোনার বাংলায় এপাং ওপাং ঝপাং মুখ্যমন্ত্রীকে পাওয়া গেছে।
২০১৮ থেকে এ বাংলায় নির্বাচন কথাটি যেনও প্রহসনের সঙ্গে সমার্থক। নির্বাচনে সাইন্টিফিক রিগিং-এর আবিষ্কর্তা খোদ মমতা ব্যানার্জি। তাই এখন রিডিং-এর নতুন নতুন খেলা দেখাচ্ছেন এই বাংলার মানুষকে।
নির্বাচন মানেই ভোট লুট, বুথ দখল, কাউন্টিং বুথ লুট। আর এবারে নবতম সংযোজন ‘ব্রেকফাস্টে ব্যালট’! অর্থাৎ ব্যালট খেয়েও ভোট লুটের নয়া পথ দেখিয়েছে এই রাজ্যের শাসক দলই।
এহেন তৃণমূলের সরকার এবং দলটিকে বাংলার মানুষ এখনো বঙ্গোপসাগরে নিক্ষিপ্ত না করে কিভাবে সহ্য করছে সেটা পৃথিবীর অষ্টম আশ্চর্যের বিষয়বস্তু বলে গণ্য করা হলে কেউ অবাক হবেন না! ইভিএম নিউজ