দুর্গা

ব্যুরো নিউজ, ২০ অক্টোবর: দুর্গাপুজোতে ষষ্ঠীপুজোর ইতিহাসের সাতকাহন  

আজ দুর্গাষষ্ঠী। সন্ধ্যায় বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। কী ভাবে পুজো হয় আজ মা দুর্গার? আসুন জেনে নেওয়া যাক। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে দেবী দুর্গার ৯ টি রূপ। আর এই ৯ টি রূপকেই একত্রে বলা হয় নবদুর্গা। ‘প্রতিপদাদিকল্পের’ পুজোয় দেবীকে দুর্গা পুজোর ৯ রাতে ৯টি ভিন্ন রূপে পুজো করা হয়। প্রতিপদে তিনি গিরিরাজ হিমালয় কন্যা দেবী শৈলপুত্রী হিসেবে, দ্বিতীয়ায় তপশ্চারিনী দেবী ব্রহ্মচারিণী হিসেবে, তৃতীয়ায় শান্তি ও কল্যাণের দেবী চন্দ্রঘন্টা হিসেবে, চতুর্থীতে ব্রহ্মাণ্ড উৎপন্নকারিনী দেবী কুষ্মাণ্ড হিসেবে, পঞ্চমীতে কার্তিকের মাতা দেবী স্কন্দমাতা হিসেবে, ষষ্ঠীতে মহর্ষি কাত্যায়নের কন্যা দেবী কাত্যায়নী হিসেবে, সপ্তমীতে দুষ্টের দমনকারী দেবী কালরাত্রি হিসেবে, অষ্টমীতে মহাদেব পত্নী দেবী গৌরী হিসেবে, আর নবমীতে সর্বসিদ্ধি প্রদায়িনী দেবী সিদ্ধিদাত্রী হিসেবে মা দুর্গা পূজিতা হন।

নবরাত্রি পুজোয় প্রতিপদ থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত নৈবেদ্য সহ চণ্ডীপাঠ করার বিধি রয়েছে। বোধনের পুজোয় এ ছাড়াও শিব, দুর্গা, নারায়ণ, গৃহদেবতাদের আলাদা আলাদা নৈবেদ্য দেওয়ার নিয়ম আছে। শিবের নৈবেদ্য শুধু পিতলের পরিবর্তে কাঁসা বা পাথরের থালায় সাজাতে হয়। পিতলের থালায় চূড়া করে এক রেক মতো চাল, তার মাথায় মণ্ডা বা সন্দেশ, পাশে কলাপাতায় আলাদা আলাদা করে পাঁচকলাই ও ফল দিয়ে এক একটি নৈবেদ্য তৈরি হয়। সঙ্গে আলাদা চিনির নৈবেদ্য ও দুধ দই দিতে হয়। রাতে ফল, দুধ, ভেজানো মুগের ডাল ও মিষ্টি দেওয়া হয়।
৮৭ তম বর্ষে পদার্পণ কাঁকুড়গাছি মিতালি সংঘের পুজোর

মহাষষ্ঠীর সকালে পুজো হয় বোধনের ঘরেই। বোধনের অন্য দিনের মতোই তার নিয়ম, কেবল ষষ্ঠী ও মার্কণ্ডের আলাদা দুটো নৈবেদ্য দেওয়া হয়। ষষ্ঠী পুজোর জন্য আবাটা, ছাঁচিপান, গামছা, তেল, হলুদ, শাড়ি,  লাগে। ষষ্ঠীর দিন পুজোর অতি প্রয়োজনীয় কয়েকটি জিনিস যেমন শ্রী, বরণডালা ও কুলো তৈরি করে রাখতে হয়। শ্রী— শ্রী হল লক্ষ্মীর প্রতিরূপ। এটি তৈরি করতে লাগে আতপ চাল বাটা, পঞ্চগুড়ি (আতপ চাল বাটায় সাদা রং, চালের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে হলুদ রং, বেলপাতা বেটে সবুজ রং, কুসুম ফুল গুঁড়িয়ে লাল রং, ধানের খোসা পুড়িয়ে কালো রং)। বরণডালা— একটি বড় পিতলের থালায় একুশটি খুরি গোলাকারে সাজিয়ে সেগুলিতে সিদ্ধি, তেল, হলুদ, গঙ্গামাটি, শিলাখণ্ড, চালের পিটুলি, শাঁখ, আলতাপাতা, সিঁদুর, লোহা, সাদা সরষে, কাজললতা ও কাজল, দই, ঘি, চিনি, মধু ও মধুপর্কের বাটি, গো-চোনা, সোনা, রুপো, অখণ্ড কলা, এলো সুতো, কড়ি, সুপারি, ধান, যব, কালো তিল, শ্বেতচন্দন, চামর ও প্রদীপ রাখে বরণডালা তৈরি করতে হয়।
কুলো— একটি বড় আকারের কুলোর উপরে ঢাকা দেওয়া চারটে মঙ্গল হাঁড়ি, হলুদ মাখানো চাল, হরিতকি, সুপারি, বয়রা, গোটা হলুদ, কড়ি এবং সেগুলি ঢাকা দেওয়ার জন্য একটি পাতলা কাপড়।

ষষ্ঠীর সন্ধ্যাবেলা বোধনঘরে পুজোর পর প্রতিমার সামনে দেবীর অধিবাস, আরতি ও বরণ হয়। বিবাহিতা মেয়েরা বাবার দেওয়া কাপড় পরে দেবী দুর্গাকে বরণ করে ঘরে তোলেন। বরণের জন্য লাগে এক ঘটি গঙ্গাজল, জোড়া পান ও সুপারি। সাত বা তার অধিক বিজোড় সংখ্যক এয়োস্ত্রী হাতে কুলো, বরণডালা, শ্রী নিয়ে সাত বার প্রতিমা প্রদক্ষিণ করবার পর প্রথমে বয়ঃজ্যেষ্ঠ মহিলা বরণ আরম্ভ করেন। সর্বাগ্রে গণেশ, তারপর একে একে দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, অসুর, সিংহ ও অন্যান্য বাহনকে বরণ করা হয়। ইভিএম নিউজ

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর