ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ২২ শে ফেব্রুয়ারিঃ কেবল মাত্র একজন আইনজীবী হিসেবেই নয়, কংগ্রেসের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবেই বেশি পরিচিত প্রদেশ কংগ্রেস মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচি। এবার সেই কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করলেন এই যুব কংগ্রেস নেতা। গতকাল তার করা একটি ফেসবু্ক পোস্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এই বিতর্ক। ইঙ্গিত পূর্ণ এই পোস্টে তিনি লেখেন, “ কংগ্রেস ছাড়ার কথা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারি না। কিন্তু সম্মানের সাথে দল করাটা দিন দিন কঠিন হয়ে উঠছে। কারণ আমার পক্ষে স্তাবকতা সম্ভব নয়। খুব শীঘ্রই সিদ্ধান্ত নেব”।

কংগ্রেস দলের সঙ্গে কৌস্তভের এই সম্পর্কের চিড় ধরা পড়েছিল গত বছর ২০২২ এর মে মাসে। সেই সময় মেট্রো ডেয়ারি মামলায় রাজ্য সরকারের পক্ষে সওয়াল করতে কলকাতা হাইকোর্টে এসেছিলেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী পি চিদাম্বরম। রাজ্যের বিরুদ্ধে বেনিয়মের অভিযোগ তুলে এই মামলা করেছিলেন কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। পি চিদাম্বরমের এমন ভূমিকা মেনে নিতে পারেননি কংগ্রেসপন্থী আইনজীবী কৌস্তভ বাগচি। এজলাস থেকে বেরোতেই কৌস্তভের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসপন্থী আইনজীবীদের প্রকাশ্য বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় চিদাম্বরমকে। ‘তৃণমূলের দালাল’, এমন কথাও হজম করতে হয় প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীকে।

সেই সময় পি চিদাম্বরম প্রসঙ্গে আইনজীবী তথা কংগ্রেস মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচি বলেছিলেন, “তৃণমুলের হয়ে দালালি করতে এসেছিলেন । তারই প্রতিবাদ করা হয়েছে। আইনজীবী হিসেবে নয়, কংগ্রেসের একজন একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে আদালতের বাইরে এই প্রতিবাদ।”
২০০৪-২০০৮ ও ২০১২-২০১৪ সালে ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন কংগ্রেসের বরিষ্ঠ নেতা পালানিয়াপ্পান চিদাম্বরম। ২০০৬ সালে অর্থমন্ত্রী থাকার সময় তাঁর পুত্র কার্তির হয়ে ‘আইএনএক্স মিডিয়া’ কাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে তাঁর নাম। উচ্চপদের সুযোগ নিয়ে তার পুত্রের ব্যবসার সুবিধার জন্য ভারতের একাধিক মিডিয়া সংস্থায় ফরেন ইনভেস্টমেন্ট বা বিদেশি লগ্নি এনে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চিদাম্বরমের বিরুদ্ধে। পরে আইএনএক্স মিডিয়া কাণ্ডের তদন্ত শুরু হলে বারবার উঠতে থাকে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চিদাম্বরমের নাম। সংসদে চিদাম্বরমের পদত্যাগ দাবি করেন তৎকালীন বিরোধী দলের সদস্যরা, এমনকি কেন্দ্রে সরকারের পালাবদলের পর নরেন্দ্র মোদী জামানায় গ্রেপ্তারও হয়েছিলেন এই কংগ্রেস নেতা।

এরপর ২০১৩ এর সারদা কেলেঙ্কারিতেও নাম জড়িয়েছে বর্ষীয়ান এই কংগ্রেস নেতার স্ত্রী নলিনী চিদাম্বরমের। অভিযোগ, ২০১০ সালে সারদা গোষ্ঠীর থেকে প্রায় এক কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা নিয়ে ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের স্ত্রী। এত অভিযোগের পরেও কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতে স্বমহিমায় আসীন রয়েছেন এই বহু বিতর্কিত বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
মঙ্গলবার এআইসিসির তরফ থেকে প্রকাশিত পশ্চিমবঙ্গের সদস্য তালিকায় ৬৮ জন নির্বাচিত সদস্যের নাম থালেও সেই তালিকায় স্থান পায়নি কৌস্তুভ বাগচির নাম। রাজনৈতিক মহলের তাই প্রশ্ন , তবে কি পি চিদম্বারমের অনৈতিক কর্মের বিরুদ্ধাচারের মাসুল গুণতে হল এই তরুণ কংগ্রেস নেতাকে?

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর