নিজস্ব প্রতিনিধি, ২ ফেব্রুয়ারিঃ গরু পাচার মামলার তদন্তে কেন্দ্রীয় সংস্থার জালে জড়িয়ে, আপাতত শ্রীঘরে রয়েছেন, বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। আর এই সুযোগটাকেই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাইছে, বঙ্গের গেরুয়া বিগ্রেড। জানুয়ারিতে প্রস্তাবিত বঙ্গ সফর বাতিল করে দেওয়ার পর, কেষ্টর গড়কে টার্গেট করে রাজ্যে আসছেন, খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই বঙ্গসফরের প্রধান উদ্যোক্তা হিসেবে শোনা যাচ্ছে সুকান্ত মজুমদার আর শুভেন্দু অধিকারীর নাম। আর ইতিমধ্যেই সেই সফর নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতির অন্দরমহলে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বড় অংশই একবাক্যে মেনে নিচ্ছেন, যে বাংলায় তৃণমূলের শক্ত গড় হিসেবে পরিচিত অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক সিউড়ি-সহ প্রায় গোটা বীরভূমেই, ঘাসফুলের দাপট আগের মতো আর নেই। তাই এবার তাঁর অনুপস্থিতির সুযোগকে কাজে লাগাতেই যে দিল্লি থেকে অমিত শাহ উড়ে আসছেন, সে ব্যাপারেও পর্যবেক্ষকদের একটা বড় অংশ কার্যত একমত। বিজেপির রাজ্যনেতৃত্বের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, সব ঠিক থাকলে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় বীরভূমের সিউড়িতে সভা করবেন অমিত শাহ। সেই সভা থেকেই সিউড়ি-সহ গোটা বীরভূমে বিজেপির সংগঠনকে শক্তপোক্ত করার কাজ শুরু করবেন, মুরলীধরসেন লেনের কার্যকর্তারা। রাজ্য বিজেপি সূত্রে আরও জানা গেছে ওই একইদিনে হুগলি জেলার আরামবাগেও জনসভা রয়েছে অমিত শাহের।
উল্লেখ্য, ২০২১-এ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে প্রত্যাশিত ফলাফল করতে না পারলেও, আসন্ন ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে মাঠে নামতে তৎপর বঙ্গবিজেপি। নিয়োগ দুর্নীতি, গরু ও কয়লাপাচার কেলেঙ্কারি, আবাসযোজনায় দুর্নীতি, উদ্বাস্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান ইত্যাদি একাধিক ইস্যুকে সামনে রেখেই রাজ্যের তৃণমূলস্তর থেকেই শাসকদলের মোকাবিলা করতে তৈরি হচ্ছে বাংলার গেরুয়া ব্রিগেড। আর বীরভূমের অনুব্রতর গড় থেকেই শাসককে সেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছেন সুকান্ত-শুভেন্দুরা। সে কারণেই খোদ দলের সেনাপতিকে নিয়ে আসা হচ্ছে বলে রাজ্য বিজেপি সূত্রের দাবি।
আর সেই চ্যালেঞ্জ জোরদার করতে, এরপর দলের সর্বোচ্চ নেতা তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও নির্বাচনী প্রচারের ময়দানে নামানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ওই সূত্রটি এও জানিয়েছে, অমিত শাহের বঙ্গ-সফর শেষ হওয়ার পর এবং পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে, দেশের প্রধানমন্ত্রীও লাগাতারভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার করতে আসবেন। এই উপলক্ষ্যে মোট ১৪টি সভা করার কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদির।