ব্যুরো নিউজ, ২ নভেম্বর: কীভাবে নিম কাঠের প্রতিমা থেকে ভৈরবেশ্বরী হয়ে উঠলেন বাড়ির মেয়ে?
বর্ধমানের মঙ্গলাপাড়ায় আনুমানিক তিনশ বছর আগে দেবীর প্রতিষ্ঠা হয়। নিমকাঠে তৈরি এই ভৈরবেশ্বরী কালী প্রতিমা।
সপ্তদশ শতাব্দী থেকে গৌরাঙ্গের মূর্তি নির্মাণের মাধ্যমে এদেশে নিমকাঠের মূর্তি তৈরি শুরু হয়। সেই সময়ই এই ভৈরবেশ্বরী মূর্তি প্রতিষ্ঠা পায় বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। প্রায় তিনশ বছর আগে বর্ধমান রাজ পরিবারের পূৰ্ব পুরুষ ভৈরবচাঁদ কাপুর নিম কাঠের কালী মূর্ত্তি তৈরী করে ঐ দালান মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করেন।
ভূত চতুর্দশী কী? এদিন কি সত্যিই মর্তে আসে ভূত?
ভৈরব চাঁদ কাপুর ছিলেন নিঃসন্তান। মা কালীর প্রতি যেমন তাঁর অগাধ ভক্তি ছিল, তেমনই তিনি মা কালীর আরাধনাও করতেন। লোককথা অনুযায়ী তাঁর সন্তান না হওয়ার জন্য সন্তান কামনায় প্রতিদিন মায়ের কাছে প্রার্থনা করতেন।
জনশ্রুতি, তাঁর কাতর প্রার্থনায় মা কালী ভৈরবচাঁদ কাপুরকে স্বপ্নে আসেন। ভৈরবচাঁদ কাপুরকে বলেন “তোর সন্তানের জন্য দুঃখ কিসের। আমিই তোর সন্তান হয়ে, তোর মেয়ে হয়ে তোর কাছে থাকব কথা দিচ্ছি”। এরপরই মাঘ মাসের রটন্তী চতুদ্দশীর দিন নিমকাঠের কালী মূর্ত্তি তৈরী করে মন্দির নির্মাণ করে মাকে প্রতিষ্ঠা করেন ভৈরবচাঁদ কাপুর। সেই থেকেই মায়ের পুজো শুরু। এখানে মায়ের নিত্য পুজো হয়।
মাঘ মাসের রটন্তী চতুদ্দশীর দিন প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মায়ের মহা সমারোহে পূজা হয় এবং বাৎসরিক শ্যামাপূজার দিন খুব জাঁকজমক করে মায়ের পুজো করা হয়।
এখানে মায়ের মন্দির দক্ষিণমুখী, এই মন্দিরে নিম কাঠের তৈরী প্রাচীন কালী মূৰ্ত্তির পাশাপাশি রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ, গৌর নিতাই মূর্ত্তি, নারায়ণ শিলা আরও অনেক বিগ্রহের নিত্য পুজো হয়। বাৎসরিক কালী পূজায় এবং প্রতিষ্ঠা দিবসে ছাগ বলির প্রথাও রয়েছে। এ ছাড়াও মানসিকের পুজোতেও ছাগ বলি হয়।
এখানকার প্রতিমার প্রাচীনত্ব নিয়ে বহু তথ্য শোনা যায়। শোনা যায় এই ধরনের নিম কাঠের কালী মূর্ত্তি নাকি একমাত্র পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরেই আছে। অনেকের মতে এই কালী মূর্তি ভারতবর্ষের মধ্যে দ্বিতীয় নিম কাঠের কালী মূৰ্ত্তি। সংবাদ মাধ্যমের সাহায্য নিয়ে লেখা। ইভিএম নিউজ