সম্প্রতি কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাকে প্রশ্ন করা হয় ভারতের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগের ভিত্তিতে। ভারতে অনুষ্ঠিত G 20 সম্মেলন থেকে ফেরার পরই দেশের পার্লামেন্টে ট্রুডো অভিযোগ করেন, তাঁর দেশের নাগরিক হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যায় ভারত জড়িত। নিজ্জর কে ও কী তাঁর পরিচয়, ট্রুডো তা বলেননি। স্রেফ তাকে কানাডার নাগরিক বলেই তিনি পরিচয় দিয়েছেন।নিজ্জরকে ভারতে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণা করা হয়েছে, সে কানাডার খালিস্তান টাইগার ফোর্সের প্রধান, বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানি এইসব বিষয়ে ট্রুডো কিছু বলেননি। স্রেফ তাকে কানাডার নাগরিক বলে পরিচয় দিয়েছেন। ট্রুডো আরও জানান, তাঁর দেশের সরকারের কাছে এর বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ আছে। যদিও ভারত তাঁর লাগানো সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ওই অভিযোগের ভিত কেবলই রাজনীতি।
‘বঞ্চনার ৩৯৯ তম দিন’ | রয়েছে সাসপেন্স
যেহেতু প্রধানমন্ত্রী নিজে সেই অভিযোগ তুলেছেন তাই ভারত তাতে ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত। এখন কানাডা যেই অভিযোগ করেছে সেই অভিযোগ তাকে প্রমান করতে হবে। অন্যদিকে ভারত কেও প্রমান করতে হবে যে, এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের কোনও হাত নেই। নিজ্জর হত্যার পর সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার সঞ্জয় ভার্মা ও কনস্যুলার জেনারেল অপূর্ব শ্রীবাস্তবের ছবি সহ পোস্টার বানিয়ে ‘শিখস ফর জাস্টিস’ সংগঠন বদলার হাঁক দিলেও ট্রুডো প্রশাসন কিন্তু এতে নির্বিকার থেকেছে।
অভিযোগের সমর্থনে কানাডার কাছে যা তথ্য রয়েছে, ভারত তা দাখিল করতে বলেছে।তবে কানাডা কিন্তু আজও সেই তথ্য দাখিল করেনি। ট্রুডো যা বলেছেন, তা ওই দেশের ‘খালিস্তানি উগ্রবাদীদেরও’ বক্তব্য। এখন খালিস্তানের প্রশ্ন ঘিরে সম্পর্কটা যে শুধু এই দুই দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে, তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। কানাডার কাছে কোনও প্রমান না থাকা সত্তেও কেন এমন করলো সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। যদিও ভারত জানায় বিষয়টি রাজনৈতিক পক্ষপাতগ্রস্ত। এর বিস্তারিত ব্যাখ্যায় ভারত অবশ্য যায়নি। যেহেতু সবারই জানা জগমিত সিংয়ের নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টির ২৪ জন সাংসদ সমর্থন তুলে নিলে ট্রুডোর লিবারেল পার্টির সরকার অস্তিত্বহীন হয়ে পড়বে। ভারতের চোখে জগমিত সিং খালিস্তানের ঘোরতর সমর্থক। তাঁর দল কানাডার খালিস্তানিদের ‘রাজনৈতিক সমর্থক’।
এর পিছনে যে রাজনৈতিক কারণ বর্তমান তার প্রমাণ সাম্প্রতিকতম এক সমীক্ষায় জানা গেছে। তাতে কানাডার সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল নিউজ’ জানিয়েছে, সর্বশেষ সমীক্ষা অনুযায়ী বিরোধী রক্ষণশীল নেতা পিয়েরে পয়লিভার তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রুডোকে ৯ শতাংশ ভোটে পিছিয়ে দিয়েছেন। কানাডার ৪০ শতাংশ মানুষ পিয়েরে পয়লিভারকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চান। সেই জায়গায় জাস্টিন ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চান মাত্র ৩১ শতাংশ মানুষ। কানাডার সংসদীয় নির্বাচন ২০২৫ সালে। তাই হয়তো ট্রুডো আগেভাগে প্রস্তুতি সেরে রাখছেন বলে অনেকের মন্তব্য। ইভিএম নিউজ