অরূপ ঘোষ, ঝাড়গ্রাম ২৫ ফেব্রুয়রিঃ জমি আন্দোলনের হাওয়ায় ভর করে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের চেয়ারে বসেছিলেন, প্রায় একযুগ আগে। রাজ্যের মানুষকে ভালো রাখার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভালো থাকার অন্যতম শর্ত যে জল, গত ১০ বছরেও সেই পানীয় জলের সমস্যা মিটলো না, ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুরের জোড়াকুসমা গ্রামের বাসিন্দাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপীবল্লভপুর ২ নম্বর ব্লকের ৪ নম্বর কুলিয়ানা গ্রামপঞ্চায়েতের জোড়াকুসমা গ্রামে প্রায় ৫০ টি পরিবারের বাস। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এখানকার পঞ্চায়েত বিজেপির হাতে থাকার কারণে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশেই, তাদের পানীয় জলের প্রকল্পে টাকা দিচ্ছে না, রাজ্যসরকারের পঞ্চায়েতদফতর। আর এই রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে, গত প্রায় এক দশক ধরে পানীয় জলের কষ্টে ভুগছেন, গ্রামের সাধারণ বাসিন্দারা। প্রায় ১ কিলোমিটার দূর থেকে পানীয় জল নিয়ে আসতে হয় বলে দাবি করেছেন রিয়া মুদি, সাবিত্রী মুদি, অমরেশ মুদির মতো জোড়াকুসমা গ্রামের বাসিন্দারা।
কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিয়ে, একবছর আগে জোড়াকুসমা গ্রামের ওই পরিবারগুলির বাড়িতে বাড়িতে পানীয়জলের কল বসানো হয়েছিল বটে, কিন্তু আজও সেই কল থেকে জল পড়েনি। চৈত্রের এই প্রখর গরমে এক থেকে দেড় কিলোমিটার পায়ে হেঁটে পানীয় জল আনতে গিয়ে, তাই স্বাভাবিকভাবেই বিরক্ত হচ্ছেন গ্রামবাসীরা। যদিও গত ১০ বছরের এই পানীয় জলের সংকটের যাবতীয় দায়, বিজেপি পরিচালিত জোড়কুসমা গ্রামের পঞ্চায়েতের ঘাড়েই চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, তৃণমূলের হাতে থাকা স্থানীয় পঞ্চায়েতসমিতির সভাপতি হিমসাগর সিং বলেন। তাঁর যুক্তি, বিজেপি পরিচালিত গ্রামপঞ্চায়েতগুলিতে কোথাও কোনও উন্নয়নের কাজ হয়নি।অন্যদিকে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান আরতি সিং জানিয়েছেন, তিনচারদিন আগে তাঁকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানোর সঙ্গেসঙ্গেই তিনি সঙ্কট মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ওই গ্রামে পানীয়জলের ব্যবস্থা করা হবে।
রাজনীতির যাঁতাকলে পড়ে জীবনের অন্যতম উপাদান জল এভাবে শুকিয়ে যাওয়ায়, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রীতিমতো ক্ষোভে ফুঁসছেন, জোড়াকুসমা গ্রামের বাসিন্দারা।