হম্বি

ব্যুরো নিউজ, ২৯ ডিসেম্বর: হম্বি-তম্বিই সার, দঃ আফ্রিকা-তে ফের হার

টানা ১০ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে এমনভাব দেখিয়েছিল ভারত যেন মাঠে নামলেই বিশ্বের সব ক্রিকেট খেলিয়ে দেশই ভয়ে থর থর করে কাঁপবে। কিন্তু, হলো ঠিক তার উল্টো। ফাইনালে একেবারে পর্যুদস্ত হয়ে অস্ট্রেলিয়ার কাছে পরাজয় স্বীকার করে মাথা নিচু করে মাথ থেকে বেড়িয়ে ছিলেন ভারতে তথাকথিত ‘সিংহরা’। সেই ট্রেডিশন সমানে চলছে। এবার দঃ আফ্রিকায় গিয়ে গতকাল ফের ধরাশায়ী ভারত। বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রায় হেডলাইন হয়েছে ‘বিদেশে ভারতের লজ্জার হার’। দঃ আফ্রিকায় ভারতীয় ব্যাটারদের এমন হাল হয়েছে যে বল বাতাসে একটু সুইং করলেই হয় সোজা বোল্ড অথবা ব্যাটের কানা ছুয়ে দঃ আফ্রিকার ফিল্ডারদের হাতে। আর নাহলে ভুল বঝাবুঝিটে রান আউট। অনেক ভারত প্রেমী বলতে পারেন, আহাঃ ১০ টায় জিতে বিশ্বকাপ ফাইনালে ওই খরগোশ আর কাছিমের দৌরের মতো বেচারা ভারত একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল এই যা। তাতে সমালোচনার কি আছে? আসব নিন্দুকদের কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই? ভারতীয় ক্রিকেটারদের পেছনে পড়ে থাকার দরকার কী? দেশেতো সমস্যার অভাব নেই। দেশজুড়ে বেকারত্ব, যৌবন চুরি হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমক হয়ে, মূল্যবৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস, রাম মন্দির নিয়ে দেশে কিই না আনন্দ! মন্দির নিয়ে রাজনীতি, মসজিদ ভাঙার সিডি উধাও, আর খাদ্যরসিকদের জন্য বছরভর খাদ্যমেলা চলছে। এতো কিছুতেও হয় না? এরপরেও সুভমান গিল নামক ব্যাটার বিশ্বকাপ ফাইনালে ‘ফেল’। আবার বৃহস্পতিবার দঃ আফ্রিকার সেঞ্ছুরিয়ানয়ে ২৬ রানে গিল বোল্ড। ক্যাপ্টেন রোহিত শর্মা শূন্য রানে রাবারার বলে গোল। শ্রেয়স আইয়ার ৬ রান। বুমরা শূন্য, সিরাজ ৪, অশ্বিন শূন্য, আর যশস্বী ৫। ভাবুন কি দায়িত্বপূর্ণ ব্যাটিং। কেউই দুই অঙ্কের মুখ দেখলেন না। ভারতবাসী বিশ্বকাপ হেরে এমন ভেঙে পড়েছিল যে সপ্তাহ খানেক বহু পরিবারেই খাবারের মেনু অনেক কমে গেছিল। তারা এবার দঃ আফ্রিকার ফল দেখে কেউ কেউ বলতে শুরু করেছেন, আসলে এই মহান ভারতীয় ক্রিকেটাররা নকল ময়ুরপুচ্ছ লাগিয়ে মাঠে ঘোড়া ফেরাকরছে। এমনভাবে সব হেলেদুলে মাঠে নামছিল, ওয়ার্মআপ করছিল, আলোর সঙ্গে চোখ সেই করছিল আর ফ্রিজে দাড়িয়ে স্টান্টস নিচ্ছিল যে দেখে মনে হচ্ছিল কেউ ভি ভিইয়ান রিচার্ডস, সুনিল গাভাস্কার বা সচিন টেন্ডুলকার।

বিজেপি করার শাস্তি! ভোটার তালিকায় ‘মৃত’

এতো পরাজয় আর মোক্ষম সময় ভারতের হার হলেও কেঁদে মরে শুধু দেশবাসী। এসবে কিছুই যায়আসে না ওই ক্রিকেটারদের। কারণ, তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা টাকা ঢুকে গেছে। মাঠে দাড়িয়ে বুক চিতিয়ে ৫ ঘণ্টা ব্যাটিং করে বড় রান আসুক বা শূন্য রানে আউট হয়ে ব্যাটের ওপর রাহ দেখাক তাতে মা লক্ষির ওই অ্যাকাউন্টে ঢোকার কোনঅ অসুবিধা হয় না। ক্রিকেটাররা বিদেশ ভ্রমনের পর বাড়ি ফিরে বড় বড় দামী গাড়ি কেনেন। পরিবার নিয়ে বিদেশে বেরাতে যান। লাগেজ গুছিয়ে ফ্রান্সের আইফেল্ড টাওয়ার দেখতে পাড়ি দেন। কিন্তু হায়! কে তার খবর রাখে? কিন্তু সে সময় বিশ্বকাপ হারের দুঃখে কোনও এক দুর্বল চিত্ত ভারতবাসী মারাই গেলেন। মৃত্যুর পর স্বর্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলে হয়তো বলবেন ‘ প্রভু ভারতের পরাজয়ে আমার হৃদ কম্পন বেড়ে গিয়েছিল দুঃখে কিছু খাইনি তাই হঠাৎ দেহত্যাগ করে আপনার কাছে এসেছি। এক অত্যন্ত ফাজিল বাঙ্গালী রকে বসে বন্ধুদের সঙ্গে হয়তো বলেই ফেললেন শূন্য রানে যদি রোহিত, অশ্বিন, বুমরাহ আউট হতে পারে তবে আমাকে দলে নিলে ক্ষতি কি? অন্তত একটা বেকার গরীব ছেলে কিছু পয়সা তো পেতো। ভারতীয় অর্থনীতির তাতে হয়তো কিছু যেত আসতো না। কিন্তু আমাকে আর বসে কাল কাটাতে হত না। এ যুক্তি নেহাতই হাস্যরস তৈরি কোর্টে পারে। কিন্তু যদি খরচ আর ক্রিকেটারদের সুযোগ- সুবিধার কোথা বলতে হয়, তাহলে টা কিন্তু যথেষ্ট ভাবনার বিষয়।  আবার রকের আড্ডায় এই শুন্যের বহর দেখে কেউ বলতেই পারেন ভারতের ক্রিকেট খেলাটাকে তুলেই দেওয়া হোক। ওই টাকায় বরং অন্য খেলা বা কৃষি অথবা শিল্পায়নে লাগানোই ভাল। বিশ্বের বহু দেশ তো ক্রিকেট খেলে না। যেমন- চীন, তাতে কি সে দেশের ক্ষমতা কমেছে? বরং অর্থনীতি ও সামরিক ক্ষমতায় আরও বলিয়ান হয়েছে। বলহারি ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটারদেরও, তারাও তো ১৯৮৩-এর  বিশ্বকাপ জিতে ফাইনালে এবার আমন্ত্রণও পাননি। তারও এবার মুখ খুলুন, বলুন অনেক হয়েছে, এনাফ ইজ এনাফ। এবার অন্তত ক্রিকেটারদের সব ছেড়ে কোনও কারখানায় ১০ টা- ৫ টার কাজে যোগ দিতে বলুন। ঘাম ঝরিয়ে পয়সা উপার্জন করে সংসার চালান। কিন্তু, না। টা হবে না। ওই যে কাজী আব্দুল অদুল লিখে গেছিলেন, ‘সেই ট্রেডিশন সমানে চলবে’।

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর

বিশ্ব জুড়ে

গুরুত্বপূর্ণ খবর