ইভিএম নিউজ ব্যুরো, ১৪ এপ্রিলঃ বিজ্ঞানীরা মজে আছেন মাদার থিয়োরি (Mother Theory) আবিষ্কারের লক্ষ্যে। প্রমাণ ছাড়া যেহেতু বিজ্ঞান কিছুই মানতে রাজি নয়, তাই এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রাথমিক উপাদান হিসেবে ধরা হয় কোয়ার্ক এবং গ্লুয়ন কণাকে। কারণ, এই কণাগুলোর অস্তিত্ব মোটামুটি ভাবে প্রমাণিত। কোয়ার্ক হল বিল্ডিং পার্টিক্যাল অর্থাৎ সমস্ত পদার্থ তৈরি হয় এই কোয়ার্ক থেকে। ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন ইত্যাদি সমস্ত কণাই তৈরি হয় কোয়ার্ক থেকে। আর এই কোয়ার্কদের আটকে রাখে গ্লুয়ন কণা। যদি তা না হত তাহলে কোনও কণা এবং পদার্থই তৈরি হতে পারত না। এটা আধুনিক বিজ্ঞানে প্রমাণিত সত্য। কিন্তু মহা বিশ্বের রহস্য আরও গভীর। যার বহু কিছুরই হদিশই পায়নি আধুনিক বিজ্ঞান। যেমন নিউট্রিনো কণার রহস্য। নিউট্রিনো এমন এক কণা, যা এই মহাবিশ্বের যে কোন কিছু ভেদ করে চলে যায়। পাহাড় পর্বত কোন কিছুই তাকে আটকাতে পারেনা। এই রকমই আর এক রহস্য স্ট্রিং থিয়োরি। এই তত্ত্ব অনুসারে, এই মহাজাগতিক প্রতিটি বস্তু একে অন্যের সঙ্গে সরু সুতোর মতো কিছু দিয়ে সংযুক্ত। অর্থাৎ পৃথিবী, চাঁদ, সূর্য, অন্যান্য গ্রহ এমনকি অন্য সৌরজগত বা নক্ষত্রপুঞ্জ -সবই একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত। এবং এই সুতো জাতীয় বস্তুটি বস্তুর তালে তালে কম্পিত হয়। ব্যপারটা এইরকম – সূর্যে একটি বিস্ফোরণ হল, বা পৃথিবীতে কোনও আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলো, তার কম্পন ওই স্ট্রিং-এর মাধ্যমে ছড়িয়ে পরবে মহাবিশ্বের সর্বত্র। বর্তমানে কোয়ান্টাম গবেষণায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
কোয়ান্টাম গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এনট্যাঙ্গলমেন্ট নামক একটি ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ একটি কণা যা আচরণ করে, মহাবিশ্বের সুদূরতম প্রান্তে থাকা অন্য একটি কণার মধ্যে তা সঞ্চারিত হয়। আধুনিক বিজ্ঞানে এটা প্রমাণিত । এই এনট্যাঙ্গলমেন্টকে কাজে লাগিয়ে কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি হয়েছে। মজার ব্যাপার হল, যে গবেষণায় আইনস্টাইন নোবেল পেয়েছিলেন, তার পিছনে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের প্রভাব অনস্বীকার্য। অথচ আইনস্টাইন নিজে এই এনট্যাঙ্গলমেন্ট ব্যপারটা আন্দাজ করলেও কখনই মানতে রাজি ছিলেন না । এনট্যাঙ্গলমেন্ট বিষয়টাকে তিনি বর্ণনা করেছিলেন ‘SPOOKY ACTION AT A DISTANCE’ বলে। অর্থাৎ বহু দূরস্থিত দুটি কণার মধ্যে অদ্ভুত যোগাযোগ। কিন্তু তিনি নিজেই বিশ্বাস করেননি যে এরকম কিছু সত্যিই হতে পারে। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘GOD DOESN’T PLAY DICE’ অর্থাৎ ঈশ্বর জুয়া খেলেন না। কিন্তু মজা হচ্ছে বেশকিছু বিজ্ঞানীর মতে, পদার্থের মূল উপাদান কোয়ার্ক বা গ্লুয়ন নয়, বরং স্ট্রিং বা সুতো জাতীয় কিছু যা আসলে এনার্জি। এই তত্ত্বে যারা বিশ্বাস করেন তাদের মধ্যে রয়েছেন এক বাঙালী বিজ্ঞানী, নাম অশোক সেন। তিনি বেঙ্গালুরুর আইসিটিএস অর্থাৎ ইন্টার ন্যাশানাল সেন্টার ফর থিয়োরিটিক্যাল সায়েন্সেস -এর গবেষক। আদতে কলকাতারই ছেলে। তাঁর এবং তাঁর মতোই বিশ্বের শীর্ষ স্তরের বহু বিজ্ঞানী এই স্ট্রিং থিয়োরিতে আস্থা রাখছেন। সোজা এবং সাদা কথায় তাদের বক্তব্য, এনট্যাঙ্গলমেন্ট ঘটে ওই স্ট্রিং যোগাযোগের জন্যই। এই স্ট্রিং-এর চরিত্র নিয়েই এখন বহু বিজ্ঞানী দিনরাত এক করে ফেলছেন এবং কোয়ান্টাম এনট্যাঙ্গলমেন্টের মাধ্যমে স্ট্রিং থিয়োরি প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন। (EVM News)